RANIGANJ-JAMURIA

হাইকোর্টের নির্দেশে দলের প্রাক্তন বিধায়কের মুক্তি, স্বাগত জানিয়ে রাজ্যের শাসক দল ও পুলিশকে আক্রমণ মহঃ সেলিমের

আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি নিরাপদ সর্দারকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সন্দেশখালি যাব : মহঃ সেলিম

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জি ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ* বাংলার বলতে গেলে সব বিরোধী দলগুলি এখন সন্দেশখালি নিয়ে এককাট্টা। তারা লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যুতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দানে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। তারা লাগাতার সন্দেশখালি নিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছেন।
মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক  মহঃ সেলিম রানিগঞ্জে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সন্দেশখালির দলের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারেকে নিঃশর্ত জামিন দেওয়ার নির্দেশকে স্বাগত জানান। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চলা রাজ্য সরকার ও রাজ্য পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, নির্দোষ নিরাপদ সর্দারকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এদিন তিনি কেবল হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি, রাজ্য সরকারকেও এই গ্রেফতারী নিয়ে হাইকোর্ট থেকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে। বিচারপতি জানতে চেয়েছেন, কার নির্দেশে এই গ্রেফতারী। মহঃ সেলিম আরো বলেন, সন্দেশ খালিতে যা ঘটেছে তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সম্পূর্ণ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত বিষয়ে জানতেন। মঙ্গলবার বাম বুদ্ধিজীবিরা পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে সন্দেশখালিতে চলে যান। সেখানে তারা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেন। এই প্রসঙ্গে মহঃ সেলিম বলেন, বামপন্থীরা জানে কিভাবে পুলিশের ওপর চালাকি করতে হয়। এটাকে ফাঁকি বলেনা। একে বলা হয় বুদ্ধির জোর। কারণ বামপন্থীরা সবসময় জনগণের সমস্যা তুলে ধরতে প্রস্তুত থাকে।

তার দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা, এম এল এ-রা, চোর ডাকাতরা সর্বত্র সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে, পুলিশ পাহারা দিয়ে তাদের নৌকায় করে, লঞ্চে করে নিয়ে যাচ্ছে। আর অন্যদিকে যারা আন্দোলন, সংগ্রাম, প্রতিবাদ করছে, প্রতিবাদী মানুষদের কাছে যাচ্ছে, তাদের সমস্যার কথা, ব্যথা যন্ত্রণার কথা, বুঝবার চেষ্টা করছে, তাদের আটকানো হচ্ছে। তার এও দাবি, আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। তাকেও আটকে রাখতে পারবেনা। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। কিন্তু আজকে আমাদের লেখক, শিল্পী, গায়ক, নাট্যকর্মী, কবি, তারা গিয়েছেন, তবে সকলেই আলাদা আলাদা করে যেতে বাধ্য হয়েছেন, কারণ সেখানে ১৪৪ ধারা রয়েছে, কিন্তু তাদেরকে অকারনে আটকানো হচ্ছে। তার দাবি পুলিশকে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয়, তা বামপন্থীরা জানেন।  তার দাবি আমরা আগেই প্রেস কনফারেন্স করে বলেছিলাম এই মিথ্যে মামলা টিকবে না। আর আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি নিরাপদ সর্দারকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সন্দেশখালি যাব।


এদিন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীও  সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, গোটা রাজ্য যেভাবে সমাজবিরোধীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গে আগামী দিনে নৈরাজ্যে তৈরি হবে। পুলিশ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে না।তিনি বলেন, দলের প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বিধানসভার ভেতরে সন্দেশখালির ঘটনা বহুবার তুলে ধরেছেন। যার রেকর্ড রয়েছে বিধানসভার মিনিটসে। তাই এটা বলা যায় না যে বামেরা আগে কখনো সন্দেশখালির ঘটনা তুলে ধরার চেষ্টা করেনি। কিন্তু কারণ সেখানে যা কিছু ঘটছিল তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ঘটছে, তাই প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই ও নেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার আসানসোলে রানিগঞ্জের গীর্জাপাড়ায় পশ্চিম বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে দলের বৈঠকে যোগ দিতে আসেন রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক। সেই বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ছিলেন গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ মুখোপাধ্যায়েরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *