দূর্গাপুরে উত্তেজনা : যুবককে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ, অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর, গাড়িতে আগুন, তদন্তে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ( Durgapur News Today ) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক যুবককে খুন করার অভিযোগ উঠলো এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বুধবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুরের কাঁকসা থানার গোপালপুর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মৃত যুবকের নাম পবিত্র বিশ্বাস (২৬)। এই ঘটনার পরে অভিযুক্ত শম্ভু দাসের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন লাগানো হয় অভিযুক্তর বাড়ির সামনে থাকা একটি গাড়িতেও। মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ মৃত যুবকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পায়। গলাতেও কালশিটের দাগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত শম্ভু দাস যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরেই এলাকা ছাড়া রয়েছে। তার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
এদিন দুপুরে দূর্গাপুরে বেসরকারি হাসপাতালে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। তিনি মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি বলেন, মৃত যুবক তৃনমুল কংগ্রেসের সমর্থক। অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে বিজেপির যোগ আছে। সে এলাকায় সুদের কারবার করে। তবে বিজেপির তরফে এই নিয়ে কোন মন্তব্য করা হয়নি।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ ফোন আসে দূর্গাপুরের গোপালপুরের বাসিন্দা পবিত্র বিশ্বাসের কাছে। ফোন করে শম্ভ দাসের বাড়ি থেকে পবিত্রকে রাত দেড়টা নাগাদ ডেকে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ পবিত্রর মা এবং মামার। যুবকের মামাতো ভাই সায়ন মন্ডলের দাবী, তার কাছে ফোন আসে পবিত্র বিশ্বাসের। সায়নের দাবী, তার পিসির ছেলে তাকে বলে আমাকে বাঁচা। তাড়াতাড়ি আয় না হলে আমাকে আর পাবি না। আমাকে মেরে দেবে। এরপরেই সায়নেরা শম্ভু দাসের বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে কিছুই দেখতে পায় না তারা । এরপরে আবার কিছুক্ষণ পরে একটি ফোন আসে। পবিত্রর পরিবারের সদস্যদের দাবী শম্ভু দাসের বাড়ি থেকে সেই ফোন আসে। তাদেরকে বলা হয়, বাড়ির সামনে তাদের ছেলে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় পড়ে আছে ।
পবিত্র বিশ্বাসের মামার দাবী, তারা গিয়ে দেখেন পবিত্রর দেহ পড়ে আছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যুবকের পরিবারের দাবি, তারা পুলিশকে রাতেই ফোন করলেও পুলিশ খুব একটা গুরুত্ব দেয় নি। এরপরে পবিত্রকে পরিবারের সদস্যরা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎস পবিত্রকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভের ফুঁসতে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা । এরপরেই শম্ভু দাসের বাড়িতে হামলা হয় । পুড়িয়ে দেওয়া হয় শম্ভু বিশ্বাসের বাড়ির সামনে রাখা গাড়ি। বাড়িতে ভাঙচুর চলে বলে অভিযোগ । খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে ঘটনাস্থলে । আর আগুন নেভাতে আসে দমকলের একটি গাড়ি।
যুবকের মৃত্যুর কারন নিয়ে তৈরী হয়েছে ধোঁয়াশা
এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। তবে এলাকা সূত্রে জানা গেছে, শম্ভু দাস সুদের কারবার করেন। তার সঙ্গে পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কোন কারণে ঐ যুবকের গন্ডগোল ছিলো। সেই জন্য এই ঘটনা ঘটে থাকতেও পারে।
এই প্রসঙ্গে এসিপি ( কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল বলেন, মৃত যুবকের পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যুবকের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হবে। তারপরে জানা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।