RANIGANJ-JAMURIA

বোমা বিস্ফোরণ নিয়ে ঘটনাস্থলে উঠে এলো নানা তথ্য

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ :  বাথরুমে গিয়ে, ফিরতেই হঠাৎ জোরালো বিস্ফোরণ, ভয় কেঁপে উঠলো অষ্টম শ্রেণি স্কুল ছাত্রী রুপালি চন্দ। বিজেপি কর্মীর নির্মীয়মান বাড়ির মধ্যে, হঠাৎ বোমা বিস্ফোরণে, সেই ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত্রে। ভয়াবহ সেই বিস্ফোরণের জের, আজও রয়ে গেছে, ওই পরিবারের মানুষজনদের চোখে মুখে এখনো আতঙ্কের ছায়া। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে, ঘটনাস্থলের, প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, এমনই তথ্য উঠে আসছে।


ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, বুধবার জামুরিয়ার দু’নম্বর ব্লকের বাগডিহা, তাতিপাড়া দূর্গা মন্দির এলাকায়, বিজেপি কর্মীর নির্মীয়মান পরিত্যক্ত বাড়িতে, রাত্রি সাড়ে আটটা নাগাদ হঠাৎ ঘাতক বোমের বিস্ফোরণে উড়ে যায় ওই বিজেপি কর্মীর বাড়ির একাংশ, পাশাপাশি তার লাগোয়া অংশে থাকা তপন শীল এর বাড়ির এক কোণে থাকা, বাথরুম ঘরের ছাদ উড়ে যায়। আকস্মিক ঘটা এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, রামনবমীর দিনেই বিজেপি সন্ত্রাস ছড়াতে চাইছে এলাকায়, বলেই দাবি করেন, পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। যদিও এই ঘটনার একদিন পার হয়ে গেলেও কাজল গড়াই নামের যে ব্যক্তির বাড়িতে এই বোমা ফাটার ঘটনা ঘটে, তার অবশ্য কোন খোঁজ মেলেনি।

এই বিস্ফোরণের পর থেকেই কাজল গড়াই এর দেখা মেলেনি, তবে তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল চক্রান্ত করে ফাঁকা নির্মীয়মান বাড়িতে এরূপভাবে বোম রেখে দিয়ে, তাদের ফাঁসিয়ে দিতে চাইছে। এটা তৃণমূলের পুরোপুরি চক্রান্ত বলেই অভিযোগ করে তারা। যদিও কাজল গড়াইয়ের প্রতিবেশীদের দাবি বারংবার ওই পরিবারের সদস্যরা আশেপাশের প্রতিবেশীদের নানান ভাবে হুংকার দিতে থাকেন বহুবার প্রাণনাশের হুমকি, এমনকি বোমা মেরে দেওয়ার হুমকিও পর্যন্ত দিয়েছেন, কয়েকজন মহিলার দাবি, তাদের নিগ্রহের কথাও কখনো কখনো বলেছেন তারা, যা নিয়ে তারা সে সময় এ সকল বিষয় নিয়ে, এত পরোয়া করেননি। তবে এবার এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর, তারা অনেকটাই আতঙ্কে  রয়েছেন। তাদের দাবি, রাত্রে ঘুম উড়েছে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণ লক্ষ্য করে। বুধবার রাত্রে থেকেই এই ঘটনার খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে জামুরিয়া থানার, কেন্দা  ফাঁড়ির পুলিশ, তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেন।

এ বিষয়ে প্রাক্তন বিধায়ক তথা আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী জাহানারা খান জানিয়েছেন, এই দুটো দলের ওই কাজ, ভোটের আগে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা, তাই ভয় দেখিয়ে কিভাবে ভোট লুট করা যায়, তারই ষড়যন্ত্র করে চলেছে এই দুই দল, তাদের উভয়েরই লক্ষ্য মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া। যদিও এ বিষয়ে বিজেপির আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সুরেন্দর সিং আলুওয়ালিয়া উল্টে দাবি করেন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব  কয়েক দিন আগেই জানিয়েছে, যে বিজেপির কর্মীরা বেশি লাফালাফি করবে, তাদের বাড়ি নাকি বোমা দিয়ে উড়িয়ে দেবে। তারই ফলস্বরূপ এই সকল ঘটনা তারা ঘটাচ্ছে, বলেই দাবি করলেন তিনি। তবে পুলিশ অবশ্য এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। কি কারণে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে সকলের। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছে রামনবমীর সময়কালে শুধুমাত্র এলাকায় দুষ্কৃতি মূলক কাজ করে, এলাকাকে সন্ত্রস্ত করতে চাইছে বিজেপি।

যদিও এ বিষয়ে বিজেপি নেতা কাজল গড়াইয়ের বাবা লক্ষীকান্ত গড়াই ও দাদা প্রসেনজিৎ গড়াইয়ের  দাবি, তাদের উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফাঁসানোর জন্য ,নির্মীয়মান বাড়িতে এ ধরনের বোমা ফাটানোর ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তবে ওই বোমা গুলি সেখানে,রাখা ছিল, না বাইরের থেকে কেউ বা কারা, সেখানে বোমা মেরেছে, সে সম্পর্কে এখনো সঠিক কোন তথ্য উঠে আসেনি। পুলিশ প্রশাসন ওই এলাকা থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে সে বিষয়ে  জোর তদন্ত চালাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *