সরকারি পাথর খাদানে ” তোলা ” না পেয়ে হামলার অভিযোগ, একাধিক গাড়িতে ভাঙচুর, কর্মীদের মারধর
বেঙ্গল মিরর, জামুড়িয়া, মনোজ শর্মা, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ সরকার অনুমোদিত ” বৈধ” পাথর খাদান থেকে ” তোলাবাজি” র অভিযোগ উঠলো। আর দাবি মতো সেই ” তোলা “না পেয়ে পাথর খাদানে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠলো আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ভাঙচুর করা হয় একটি জেসিবি মেশিন সহ তিনটি বড় গাড়ি ও বেশকিছু খাদানে ব্যবহার করা যন্ত্রাংশে। ভাঙা হয়েছে ছয়টি মোটরবাইকেও। হামলা চালানোর সময় তিনজন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তারা জখম হন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় প্রাথমিক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে হয়েছিলো। পরে তাদের বাইরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়া ফাঁড়ির বাগুলি গ্রামে একটি পাথর খাদানে।
বিকেলেই গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে জামুড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে, তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে, যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের পেছনে তৃনমুল কংগ্রেসের একাংশ নেতার মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে শাসক দলের নেতারা তাদের বিরুদ্ধে উঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাদের দাবি, গোটাটাই যারা হামলা চালিয়েছে ব্যক্তিগত ব্যাপার। এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা নিয়ে সেখানে যায়। তারপর কিছু হয়ে থাকতে পারে। আমাদের কিন্তু জানা নেই।
ঐ পাথর খাদানের কর্মী উজ্জ্বল মাজির দাবি, যেসব লোকেরা এদিন আসে, তারা আগেও এসেছিলো। তারা তোলা আদায় করতে আসে। এদিন দুপুরে তারা একই কারণে এসেছিলো। কিন্তু মালিকেরা কেউ ছিলেন না। আমরাও মোটরবাইক রেখে দূরে যাই অন্য কাজ করতে। তখন তারা হামলা চালানো হয়। তারা একটি জেসিবি মেশিন সহ তিনটি বড় গাড়ি ও বেশকিছু খাদানে ব্যবহার করা যন্ত্রাংশ ভাঙচুর করা হয়েছে। পাশাপাশি ছয়টি মোটরবাইকও ভাঙা হয়েছে। সেখানে থাকা তিনজন কর্মীকেও মারধর করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। খবর পেয়ে চুরুলিয়া ফাঁড়ির পুলিশ খাদানে আসে। আহতদেরকে আখলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ঘটনা নিয়ে জামুড়িয়ার তৃনমুল কংগ্রেসের বিধায়ক হরেরাম সিং বলেন, যতদূর শুনেছি তাতে এই ঘটনার সঙ্গে দলের কেউ কেউ জড়িত আছে বলে জানতে পারিনি। জানতে পেরেছি, গ্রামের কিছু লোকের জমি দিয়ে পাথর খাদানের জিনিস নিয়ে যাওয়া হতো। তাতে জমি মালিকদের আপত্তি ছিলো। তারা এদিন সেই কথা বলতে যান। তখন কিছু হয়েছে। তবে এর মধ্যে তোলা আদায়ের কোন ব্যাপার আছে বলে আমার মনে হয়না। আমি বসে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নিতে বলেছি।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, মোট ১৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভাঙচুর ও মারধরের কথা অভিযোগে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ, সরকারি এই পাথর খাদানের দুজন অংশীদার আছেন।