ASANSOL

রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি, তদন্তে নমুনা সংগ্রহ রাজ্য পুলিশের সিআইডির, হবে ফরেনসিক পরীক্ষা

বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জি ও  রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনার তদন্ত করতে মঙ্গলবার কলকাতা থেকে এলো রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। তাদের সঙ্গে আসেন ফরেনসিক বিভাগের আধিকারিকরা। এদিন ঘটনার দ্বিতীয় দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ সরজমিনে ঘটনা তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান সিআইডির চার সদস্যের একটি দল ও ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের একটি দল।  রানিগঞ্জ থানার পুলিশের উপস্থিতিতে তারা দোকানের বিভিন্ন দিকের নমুনা সংগ্রহ করেন। প্রায় তিন ঘন্টা আধিকারিকরা সেখানে ছিলেন। নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি দোকান মালিক ও ঘটনার সময় থাকা কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলে সামগ্রিক বিষয়গুলি জানার চেষ্টা করেন।


পরে, তদন্তকারী দলের এক আধিকারিক বলেন, নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা এবার ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট পাওয়া গেলে, গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
প্রসঙ্গতঃ, রানিগঞ্জের এই ডাকাতির ঘটনায় দুদিনের মধ্যেই মিলেছে বেশ কিছু সফলতা। রবিবার রাতে ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যে ঝাড়খন্ডের গিরিডি পুলিশ সরিয়া এলাকার জঙ্গল থেকে ডাকাতি করা বেশ কিছু হিরে ও সোনার গহনা উদ্ধার করে। আসানসোল থেকে ডাকাত দলের ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া এক হন্ডা ক্রেটা গাড়িও পাওয়া গেছে। একই সাথে উদ্ধার হয়েছে রানিগঞ্জ থেকে একটি বাইক ও আসানসোলের মহিশীলা কলোনি থেকে আরো একটি বাইক। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ৪২ রাউন্ড তাজা কার্তুজও। এই ঘটনায় যুক্ত থাকা বিহারের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা সুরজ সিংকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় বিহারের সিওয়ানের বাসিন্দা কুখ্যাত সোনু সিংকে। জানা গেছে এই দুই দুষ্কৃতি এর আগেও বিভিন্ন অংশে দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল।


ঝাড়খণ্ড পুলিশ সূত্রে জানা, সুরজ ও সোনু সিংয়ের একটা বড় ধরনের চক্র আছে। বড় মাপের চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের পাশাপাশি খুন করার মতো অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। এবার সেই কুখ্যাত ডাকাত দল সুপরিকল্পিতভাবে রানিগঞ্জে শহরের প্রাণ কেন্দ্রে দিনে দুপুরে সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে কয়েক কোটি টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এক অফিসারের তৎপরতায় প্রাথমিক ভাবে ডাকাত দলকে আটকানোর চেষ্টা কিছুটা হলেও সফল হয়।


তবে, এই ঘটনার পরে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বেশ কিছু গলদ ও ফাঁকফোকর বেরিয়ে পড়েছে। যেভাবে ডাকাতি করার পরে ডাকাত দল আসানসোল হয়ে একটি গাড়ি ছিনতাই করে বর্ডার বা সীমানা পার করে বাংলা থেকে ঝাড়খণ্ডে চলে গেলো, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ছিনতাই করা গাড়িতে জিপিএস থাকা সত্বেও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ সেটিকে ধরতে ব্যর্থ হয়। একাধিক জায়গায় নাকা চেকিং থাকা সত্বেও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ ডাকাত দলকে আটকাতে পারেনি। অথচ পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড পুলিশ অনায়াসেই গাড়ি সহ দুজনকে ধরে ফেলে।
স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, একাধিক আইপিএস ও ডব্লুবিপিএস অফিসার ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সহ আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট করে কি লাভ? যদি তারা অপরাধ আটকাতে ও অপরাধ হওয়ার পরে অপরাধীদের ধরতে না পারে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *