RANIGANJ-JAMURIA

রাণীগঞ্জে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : ( Raniganj Latest News ) আসি যাই খাবার খায়। এমনই ধারাবাহিকতা নিয়ে চলছে রাণীগঞ্জের পৌর নিগম দ্বারা পরিচালিত বেশ কয়েকটি নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়। তারই সেই সকল বিদ্যালয় গুলির একটিতে এবার অভিভাবকেরা স্কুল পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনের মান ধীরে ধীরে খারাপ হচ্ছে, ও স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ থাকছে না এই অভিযোগ তুলে রানীগঞ্জের ৯০ নাম্বার ওয়ার্ডের কুমোর বাজার এলাকায় অবস্থিত রানীগঞ্জ এর এক নম্বর পৌর নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের সামনে, স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হলেন।

বিক্ষোভকারী অভিভাবকেরা এদিন দাবি করেন স্কুলে একশোর মত পড়ুয়া পঠন-পাঠন করলেও একজন মাত্র শিক্ষক চারটি শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন, যার ফলে পঠন-পাঠন উঠেছে শিকেয়। ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন সময় একে অপরের সাথে মারপিটে জড়িয়ে পড়ছে, বহুবার তো শুধু খেলাধুলা করে, মিড ডে মিল খাইয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পড়াশুনোর ক্ষেত্রে তেমনভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে না, যার ফলে শিক্ষা কাঠামো একেবারে ভেঙ্গে পড়ছে। এই দাবি করেই তারা দীর্ঘক্ষণ পথ অবরোধ করে রাখেন। যদিও শেষমেষ রানীগঞ্জের 2 নম্বর বরো দপ্তরের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহজাদা বিক্ষোভকারীদের কাছে পৌঁছে, তাদের এ বিষয়ে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উদ্যোগ নেবেন বলে আশ্বাস দেওয়ার পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এ প্রসঙ্গে আসানসোল কর্পোরেশনের দু’নম্বর বরো দপ্তরের বাস্তুকার কৌশিক সেনগুপ্ত জানিয়েছেন শিক্ষক নিয়োগের জন্য তারা বারংবার শিক্ষা দপ্তরে এই বিষয়টি জানিয়েছেন, তারপরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি, তার দাবি শীঘ্রই শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই, এই সমস্যা মিটে যাবে।

উল্লেখ্য রানীগঞ্জের পৌর এলাকায় পাঁচটি পৌরসভা পরিচালিত স্কুল রয়েছে যার মধ্যে প্রায় 570 জন পড়ুয়ার পঠনপাঠনের ব্যবস্থা আছে। পূর্বে এই পাঁচটি স্কুলের জন্য 15 জন শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও, বর্তমানে তা দশটি শিক্ষক এসে ঠেকেছে , তার মধ্যেও আবার স্থায়ী – অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন, আর তার সাথেই রয়েছে অশিক্ষক কর্মীর অভাব। উল্লেখ্য পূর্বে এই সকল স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে এই স্কুল গুলির শিক্ষক সংখ্যা অনেকটাই তলানিতে এসে পৌঁছেছে। শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের কারণে, শিক্ষক অনেকটাই কম হতে থাকায়, ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন বর্তমান সময়ের শিক্ষকেরা। অথচ শিক্ষা খাতে শিক্ষক নিয়োগ না হলেও ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিল খাওয়ানোর জন্য কিন্তু প্রতিটি স্কুলেই চারজন করে রন্ধনকর্মী নিযুক্ত রয়েছে। তাই শিক্ষা আগাগোড়া যাই হোক না হোক, রোজ স্কুলে গেলেই খাওয়া-দাওয়া অভাব পূরণ হলেও, যে শিক্ষা গ্রহণের প্রয়োজনে স্কুলে ভর্তি হওয়া, সেই শিক্ষা গ্রহণ কিন্তু হয়ে উঠছে না। তাই অনেকেই এই সকল স্কুলগুলিকে খিচুড়ি স্কুল বলে ডাকতে শুরু করেছে।

অনেকে আবার দাবি করছেন আসি, যাই, খিচুড়ি খায় এই করেই চলছে স্কুল। যদিও এই স্কুলের একমাত্র শিক্ষক স্বরূপ মিত্র অবশ্য নিজের অসহায় অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন স্কুলে বারংবার শিক্ষক সংখ্যা বাড়ানোর জন্য তিনি আবেদন জানালেও, তার কোন কথায় শোনা হয়নি। সে কারণে অসহায় অবস্থায় তাকে 88 জনের মত ছাত্র-ছাত্রী আসা স্কুলটিকে একাই চালাতে হয়। যা নিয়ে ব্যাপক দুর্ভোগ পড়তে হয় তাকে। তার দাবি এ সকল কারণে স্কুলে ধীরে ধীরে পড়ুয়ার সংখ্যাও অনেক কম হয়েছে। এখন দেখার কখন এই সকল অসুবিধে দূর করে, বস্তিবাসী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদের পড়াশোনার এই সকল স্কুল, সুচারুরূপে কিভাবে চালু করে আসানসোল কর্পোরেশন।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *