DURGAPUR

দূর্গাপুরের সব বদলে, নতুন মুখ খোঁজার নির্দেশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের

লোকসভায় ভোট ধাক্কা, পুর নির্বাচনকে পাখির চোখ

বেঙ্গল মিরর, দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টার্গেট ইস্পাত নগরী দুর্গাপুর। এদিন মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুরের তৃণমুল কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে রীতিমতো তোপ দাগলেন। প্রকারন্তরে কার্যত তোলাবাজ বলে আখ্যা দিয়ে দিয়েছেন দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের একাংশকে । মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুর পুরনিগমের পুরপ্রশাসক বোর্ডের ছয় জনের মধ্যে একজন বাদ দিয়ে বাকিদের অপদার্থ বলেছেন। সঙ্গে সঙ্গে বোর্ডে বদল আনার কথা বলেছেন। নতুন মুখ খোঁজার কথা বলেছেন । এদিকে, এরপরই দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে জোর চর্চা দুর্গাপুরের কোন নেতা যা পারেন তা করে দেখাতে অনেকটাই সফল অন্য এক নেতা ।

পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তবে কি কার জমানা শেষ হতে চলেছে ? জেলার রাজনীতিতে কি নতুন কার জমানার শুরু ? নতুন টিমে নেতৃত্বে কে ? কাকে বাদ দিয়ে কাকে আনবেন ? ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হবে নাতো ? রাজ্য জুড়ে তোলপাড় চলেছিল এসবিএসটিসির টিকিট দুর্নীতি । কিন্তু সেই দূর্নীতির ফল কি ? কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ? কি হয়েছে সেই দূর্নীতির সমাধান নাকি ধামা চাপা পড়ে গেছে ?অটো ও টোটোয় ছেয়ে যাওয়া দুর্গাপুরে সরকারি পরিবহণ ধুঁকছে ।

মুখ্যমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে পরিষ্কার বলেছেন, দুর্গাপুরের কারখানা থেকে টাকা তোলা হয় । অর্থাৎ তৃণমুলের শ্রমিক নেতৃত্বের একাংশের মদতে কারখানায় তোলাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। সেখানেও তিনি বদলের কথাও বলেছেন । পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন। অন্যদিকে, আবার পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলেছেন । ২০২৬ কে পাখীর চোখ করে মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু দুর্গাপুরের জঞ্জাল সাফাই করতে চলেছেন, তার ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন ।

দুর্গাপুর জুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে যে ডাকসাইটে সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারকেই কি দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠনের মাথায় বসাতে চলেছেন দলনেত্রী ? কিন্তু সদ্য দল বদলে আসা সিপিএমের নেতাকে কি এত সহজে দুর্গাপুরের এতদিনের তৃণমুলের শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বরা চুপচাপ মেনে নেবেন ? মেয়াদ শেষ হওয়া দূর্গাপুর পুরনিগমের ভোট কি আসন্ন? আগামী ছয় মাসের মধ্যে কি সেই ভোট হবে ?

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুর পুরনিগমের ছয় প্রশাসকের মধ্যে পাঁচ জনকে অপদার্থ বলেছেন । বদল করার এবং নতুন মুখ খোঁজার জন্যও বলেছেন। তারপর থেকে দুর্গাপুর জুড়ে শোরগোল পড়েছে পদার্থ ও অপদার্থের মাপ কাঠি কি ? কোন সুনির্দিষ্ট ভাবে অনেকেই কি বাদ দেওয়া হচ্ছে, নাকি একজনকে বাদ দিয়ে পুরোটাই পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তন । হোটেল ব্যবসায়ী কবি দত্তের মতো কি কোন নতুন অরাজনৈতিক ব্যক্তি কি আসতে চলেছেন পুরনিগম প্রশাসক বোর্ডে ?

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মুহুর্তে দুর্গাপুরের যেখান থেকেই নতুন মুখ আনা হোক না কেন তা ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হওয়ার মতো অবস্থা হবে। দুর্গাপুর পুরনিগম প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় নিজের ওয়ার্ডে হেরেছেন হাজার ভোটে ব্যবধানে। বিদায়ী ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ও হেরেছেন নিজের ওয়ার্ডে। শহরের হিন্দিভাষী মুখ ধর্মেন্দ্র যাদব হেরেছেন নিজের ওয়ার্ডে । প্রশাসক বোর্ডের মধ্যে ভোটারদের পছন্দের তালিকায় মলয় অনুগামী দীপঙ্কর লাহা ও রাখী তেওয়ারি রয়েছেন । এখন প্রশ্ন কাকে বাদ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ? কে আসবেন তাদের জায়গায় ? সদ্য সিপিএম থেকে আসা পঙ্কজ রায় সরকার কি কোন বড় পদ পাচ্ছেন? এটা এক প্রকার নিশ্চিত না হলেও, একটা সম্ভাবনা রয়েছে ? এখন জোর চর্চা কার কার নাম একেবারেই মুছে যাবে মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের তালিকা থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *