ASANSOL

আসানসোল পুরনিগম এলাকায় পানীয়জল সরবরাহ নিয়ে সরব প্রাক্তন মেয়র, জবাব বর্তমানের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল পুরনিগমের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয়জল সরবরাহ নিয়ে সরব হলেন প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি। মঙ্গলবার তিনি আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেস চালিত আসানসোল পুরনিগমকে। তিনি প্রশ্ন তোলেন আসানসোল পুরনিগম এলাকায় জল সরবরাহ করার পরিকাঠামো ও জল দপ্তরে কাজ করা কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করা ক্ষমতা ও সদিচ্ছা নিয়েও। প্রাক্তন মেয়রের অভিযোগ ও সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বর্তমান মেয়র বিধান উপাধ্যায়।



মঙ্গলবার সকালে আসানসোলের জিটি রোডের গোধুলি মোড় সংলগ্ন নিজের আবাসিক অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আসানসোল পুরনিগম এলাকায় পানীয়জলের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও জলের সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আমি যখন মেয়র ছিলাম , তখন এক দিনের জন্যও আসানসোল পুরনিগমের কোন ওয়ার্ড থেকে জলের সমস্যার কথা শোনা যায় নি।  পানীয়জল সরবরাহ করার জন্য একটা পরিকাঠামো ও পরিকল্পনা থাকা দরকার। যা আজকাল দেখা যাচ্ছে না বলে তার দাবি। গরমের সময় সুষ্ঠুভাবে জল সরবরাহ করতে হলে নভেম্বর বা ডিসেম্বর মাস থেকেই তার প্রস্তুতি শুরু করা উচিত ছিলো। কিন্তু তা করা হয়নি বলেই এখন এই সমস্যা। তিনি বলেন,  প্রথম বছরে যে নতুনদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকেনা। কিন্তু এখন তৃতীয় বছর। কিন্তু  এই বছর পানীয়জলের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। আসানসোল পুরনিগমে থাকা ইঞ্জিনিয়াররা হয় কাজ করতে চান না বা তারা কাজ করতে পারছেন না বলে।

এর আগে একটি আরটিআই করা হয়েছিলো। তাতে আসানসোল পুরনিগ জানিয়েছিলো আসানসোল পুরনিগমের পুরনো যে ৫০টি ওয়ার্ড আছে, সেখানে ২৪ ঘন্টা জল সরবরাহের পরিকল্পনা প্রায় প্রস্তুত। খুব শীঘ্রই তা শুরু হবে। কিন্তু এখন ২৪ ঘন্টা অনেক দূরের ব্যাপার , এখন পুরনিগমের এমন ওয়ার্ড আছে, যেখানকার মানুষেরা প্রতিদিন আধ ঘন্টা জল পাননা। এছাড়াও এমন অনেক এলাকা রয়েছে যেখানে সপ্তাহে একবার জল পাওয়া যায় না। যে কারণে কোথাও না কোথাও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন,  জল সরবরাহের বিষয়ে জানেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত আসানসোল পুরনিগমের। কিন্তু তা না করায় এর ফল ভুগতে হচ্ছে পুর এলাকার বাসিন্দাদেরকে। তিনি বলেন, মেয়র বিধান উপাধ্যায় কিছু দিন আগে ঘোষণা করেছিলেন ফ্ল্যাট বা বহুতলে জলকর ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হচ্ছে। এখন আবার শুনলাম আবার তা কমিয়ে ৭ টাকা করা হয়েছে।

প্রাক্তন মেয়রের দাবি, জলকর ৭ বা ১০ টাকা যাই হোক না কেন, বাস্তব ছবি হলো, এমন অনেক বহুতল আছে, যেখানে জল পাওয়া যায় না। তাদেরকে জল কিনে খেতে হয়। এর উদাহরণ হিসেবে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি নিজের ফ্ল্যাটের জন্য কেনা জলের বিল দেখান।  তিনি বলেন, প্রতি মাসে আমাদেরকে জন্য ১০ হাজার টাকার জল কিনতে হয়। যেটা আর্থিকভাবে জনগণের ওপর চাপা পড়ে। তার প্রশ্ন, তা হলে আসানসোল পুরনিগম পুরবাসীদের কাছ থেকে সম্পত্তি কর নেয় কেন? তিনি এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলেন, কলকাতার চাটুকারিতা না করে, আসানসোলের অধিকারের জন্য লড়াই করুন। যাতে আসানসোলের মানুষ তাদের উপর বিশ্বাস রাখতে পারে। 

এই বিষয়ে বর্তমান মেয়র বিধান উপাধ্যায় প্রাক্তন মেয়রের কথার জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বা প্রাক্তন মেয়র কেউই বলবেন না জলের সমস্যা আছে কি না। আসানসোলের মানুষই এর উত্তর দেবেন। তিনি আরো বলেন, আসানসোল পুরনিগম এলাকায় যেখানেই পুরনিগমের কল বসানো হয়েছে, সেখানে ভালোভাবে জল সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রাক্তন মেয়রের প্রতি তার কটাক্ষ আগে তিনি আবার মেয়রের চেয়ারে বসুন, তারপর নয় আরো ভালো করে জল সরবরাহ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *