RANIGANJ-JAMURIA

গুগল ম্যাপ ফলো করে ১৮ চাকার ট্রাক উড়িয়ে দিল গ্রামের চারটি বিদ্যুৎ খুঁটি, ট্রান্সফরমার, কুঁড়েঘরও

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : গানের কলিতে একসময় শোনা যেত, “যানা-থা জাপান, পোহচ গেয়ে চীন সমজ গয়ে না”। এক ট্রাক ড্রাইভারের তান্ডব লীলায়, এবার এমনই কিছু, মনে হলো গাড়ির চালকের গাড়ি চলাচলের বিষয় লক্ষ্য করে । স্থানীয়দের দাবি, গুগল ম্যাপ ফলো করে এক ১৮ চাকার ট্রাক উড়িয়ে দিল গ্রামের মধ্যে থাকা চারটি বিদ্যুৎ খুঁটি,আর তার সাথেই ট্রান্সফরমার, এমনকি কুঁড়েঘরও। আর এর জেরে কোথাও বিদ্যুতের তার ছিড়ে আছড়ে পড়ল রাস্তার মাঝে, কোথাও রাস্তার ধারের নালিনর্দমা এর জেরে ভেঙে যায় কোথাও বা ভেঙ্গে যায় জলের পাইপলাইন। সোমবার গভীর রাত্রে এই ঘটনাটি ঘটে, জামুড়িয়া থানা এলাকার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁটাগড়িয়া গ্রাম এলাকায়।

ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, এদিন উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা প্লাস্টিক তৈরির সামগ্রী, প্লাস্টিক মলিকিউল বোঝায় ১৮ চাকার ট্রাক কোন খালাসি ছাড়াই, গুগল ম্যাপ লক্ষ্য করে, গ্রামের মাঝে থাকা ছোট রাস্তা দিয়ে নিয়ে চলে যায় ট্রাক। আর সেই ছোট রাস্তার মধ্যেই, গভীর রাত্রে, প্রায় আড়াইটা নাগাদ কাঁটাগড়িয়া গ্রামের কালী মন্দিরের কাছ থেকে পরপর রাস্তার ধারে, থাকা বিদ্যুৎ খুঁটিতে ধাক্কা মেরে উড়িয়ে দেয় বিদ্যুৎবাহী সব খুঁটি, এমনকি রাস্তার ধারে থাকা, টালির কুড়ে ঘর ও তার সাথেই তারই অদূরে থাকা, বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার  ছিড়ে উপড়ে পড়ে, এই ঘটনায়। আর এই সকল কাণ্ডের জেরে গভীর রাত্রি থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কাঁটা গড়িয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ অংশ। রাতের থেকেই, বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে এলাকায় বসবাস করা প্রায় কয়েকশো পরিবার। এই ঘটনার খবর পেয়ে রাত্রে থেকেই ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয় জামুরিয়া থানার পুলিশ। তারা  সকাল পর্যন্ত ওই ঘাতক  ট্রাকটিকে লক্ষ্য করতে এলাকায় মোতায়ন থাকে।

এদিকে গ্রামের মানুষজন এই ভয়াবহ ঘটনার জন্য দায়ী থাকা, ওই ট্রাকের চালককে আটকে ধরে, অবিলম্বে সমস্ত ভেঙে যাওয়া অংশের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সাথেই, সমস্ত  দুর্ভোগ থেকে যাতে তাদের নিস্তার মেলে, তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে ট্রাকের চালককে গাড়ির মধ্যেই আটকে রাখে। পরে পুলিশ পৌঁছে ওই ঘাতক ট্রাকের চালককে আটক করে। এ সময় সমগ্র এলাকায় যাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা দ্রুত পৌঁছে যায় সে বিষয়ে নজর দিয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা বিদ্যুৎ সংযোগ দ্রুত দেওয়ার জন্য ওই সকল অংশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ করে চলেছেন। গ্রামের মানুষজনদের আশঙ্কা এরূপভাবে এত ভারী ট্রাক সরু রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের কারণে রাস্তার পাশে থাকা পানীয় জলের পাইপলাইনও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যা আগামীতে জল সরবরাহের পর অনেকটা স্পষ্ট হবে বলেই মনে করছেন।

তবে এ বিষয়ে ট্রাক চালক কিন্তু নিরুত্তর রয়েছেন। চালক শুধু দাবি করেছেন যে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনে গুগল ম্যাপ লক্ষ্য করে তিনি চাকদোলা এলাকায় অবস্থিত একটি প্লাস্টিকের সামগ্রী তৈরীর কারখানায় এ সকল প্লাস্টিক মলিকিউল পৌঁছানোর জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। যার ফলেই সে যেদিকে যাওয়ার জন্য  দিশা, নির্দেশ পেয়েছেন সেদিকেই সে তার ভারী ভরকম ট্রাক নিয়ে চলেছেন রাতের অন্ধকারে। তবে কেন সে এই সংকীর্ণ রাস্তায় কোন কিছু না দেখেই ঢুকে পড়েছেন সে সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি। একই সাথে তার ট্রাকের মধ্যে কোন খালাসী নেই কেন সে সম্পর্কেও দিতে পারেনি কোন উত্তর। বর্তমানে ট্রাক গ্রামের মাঝেই আটকে রাস্তা কে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। অপরদিকে গ্রামের মানুষ বিকল্প পথে গ্রামের অন্যপ্রান্তে ও অন্য সকল এলাকায় পৌঁছাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *