ASANSOL

আসানসোল সিবিআই আদালতে আজ চার্জ গঠন, নতুন করে ৭ জনের নাম

কয়লা পাচার মামলা : দুদিন আগে দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিট জমা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল,  রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* বহুচর্চিত কয়লা পাচার মামলায় আজ বুধবার চার্জ গঠন বা ফ্রেম করার কথা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সি সিবিআইয়ের। আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর এমনই নির্দেশ আছে। তবে এই মামলায় যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের আইনজীবীরা অবশ্য বুধবারের চার্জ গঠন নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন।
এদিকে চার্জ গঠনের ঠিক দুদিন আগে সোমবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এই মামলার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী বা অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিলো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে নতুন করে আরো ৭ জনের নাম আছে বলে সিবিআই ও আদালত সূত্রে জানা গেছে।

गौ तस्करी CBI चार्जशीट

যার মধ্যে ৫ জন এমন রয়েছেন যাদেরকে সদ্য গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ৫ জন সিবিআই হেফাজত শেষে আপাততঃ আসানসোল জেলে রয়েছেন। এই ৫ জন হলেন নরেশ কুমার সাহা, অশ্বিনী কুমার যাদব, অমিত কুমার ধর, বাপি ওরফে সীমন্ত ঠাকুর ও বিদ্যাসাগর দাস। একাধিক পাতার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারী চার্জশিটে তদন্তের অগ্রগতি সিবিআই তুলে ধরেছে। তাতে এই ৭ জনের কি ভূমিকা তা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০২১ সালে নরেশ কুমার সাহা ইসিএলের সদর দপ্তরে জিএম বা জেনারেল ম্যানেজার সেফটি ছিলেন। বর্তমানে তিনি সদর দপ্তরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট বা আইইডির জেনারেল ম্যানেজার পদে কর্মরত আছেন। অপর ধৃত অশ্বিনী কমার যাদব অবৈধ কয়লা কারবারের সঙ্গে যুক্ত। তার নামে বেআইনি কয়লা কারবারের মামলা রয়েছে বলে সিবিআইয়ের দাবি। এই দুজনকে গত ২১ জুন সিবিআই গ্রেফতার করেছিলো।


সিবিআই কয়লা পাচার মামলায় গত মঙ্গলবার ২৫ জুন ইসিএলের কুনস্তোরিয়া এরিয়ার প্রাক্তন জিএম অমিত কুমার ধর ও  দুই কয়লা ব্যবসায়ী বাপি ওরফে সীমন্ত ঠাকুর ও বিদ্যাসাগর দাসকে গ্রেফতার করে। তাদেরকে  নিজাম প্যালেসে সমন করে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।


          উল্লেখ্য,  গত ২১ মে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে কয়লা চোরাচালান মামলায় চার্জ গঠন করার দিন ছিল। কিন্তু সেদিন ৩ আসামির অনুপস্থিতির কারণে এ মামলায় অভিযোগ গঠন করা যায়নি।  শুনানি শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন , আগামী ৩ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ঐদিনই সিবিআইকে চার্জ গঠন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সিবিআইয়ের চার্জশিটে যাদের নাম রয়েছে, তাদের ওই দিন হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। উল্লেখ্য, এই মামলার প্রথম চার্জশিটে ৪৩ জনের নাম রয়েছে।


প্রসঙ্গতঃ, ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিবিআই কয়লা পাচার কাণ্ডে এফআইআর করেছিলো। প্রথমে সেই মামলায় রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থা ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেড বা ইসিএলের ৪ জন ও পরে আরো একজন প্রাক্তন ও বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার বা পাঁচজন জিএম তিনজন ইসিএলের নিজস্ব নিরাপত্তা আধিকারিক গ্রেফতার করেছিলো সিবিআই। এই ৮ জন হলেন প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, সুশান্ত বন্দোপাধ্যায়, তন্ময় দাস ও সুভাষচন্দ্র মৈত্র, সুভাষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তিনজন নিরাপত্তা আধিকারীক মুকেশ কুমার, দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় এবং রিঙ্কু বেহেরা। সিবিআই যখন এই কয়লা পাচার মামলা শুরু করেছিল তখন প্রথম এফআইআরে অনুপ মাঝি ওরফে লালা ছাড়া ইসিএলের একাধিক  জিএমের নাম ছিল। এর আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে বিকাশ মিশ্র ছাড়াও চার কয়লা ব্যবসায়ী জয়দেব মন্ডল, গুরুপদ মাঝি, রত্নেশ ভার্মা সহ পাঁচজন গ্রেফতার হয়েছিল। এছাড়াও ইসিএলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা ডিরেক্টর অপারেশন সুনীল কুমার ও সিআইএসএফের ইন্সপেক্টর আনন্দ কুমার সিংকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। সবমিলিয়ে সিবিআই মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ইসিএলের সাথে কোন না কোনভাবে যুক্ত রয়েছেন ১১ জন।


    লোকসভা নির্বাচন মিটতেই কয়লা পাচার কান্ডে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইকে ।

Leave a Reply