ASANSOL

কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে  উপাচার্যের গরহাজিরায় ঢুকতে বাধা রেজিস্ট্রারকে

পঞ্চম দিনে টিএমসিপির ধর্ণা বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন তৃনমুল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপির ধর্ণা বিক্ষোভ আন্দোলন শুক্রবার পঞ্চম দিনে পড়লো। এদিন  বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার চন্দন কোনারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় টিএমসিপির তরফে। উপাচার্য ডাঃ দেবাশীষ বন্দোপাধ্যায়ের গরহাজিরা বা অনুপস্থিতিতে এদিন রেজিস্ট্রারকে আটকানো অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ঘটনা। 



গত সোমবার থেকে উপাচার্যের অপসারণ ও কলেজ ফান্ডের টাকা আইনী খাতে ব্যবহারের খরচের হিসাব চেয়ে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেছে টিএমসিপি। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার অফিসে তালা লাগিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধর্ণায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে টিএমসিপির কর্মীরা। প্রতিদিনকার এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা টিএমসিপির সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায়। সোমবার থেকে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। তিনি কলকাতায় আছেন বলে জানা গেছে।



শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের সামনে গাড়ি নিয়ে আসেন রেজিস্ট্রার চন্দন কোনার। তিনি যখন গেট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরো ঢোকার চেষ্টা করছিলেন, তখন অভিনব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলনরত ছাত্ররা তার গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে আটকে দেন। ছাত্ররা গাড়ির সামনে ” গোব্যাক রেজিস্ট্রার ” আওয়াজ তুলে স্লোগান দিতে থাকেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে অভিনব মুখোপাধ্যায় সহ অন্য ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে, তাদেরকে বুঝিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু ছাত্ররা নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। মিনিট দশকের মতো তিনি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ফোনে উপাচার্যের সঙ্গেও কথা বলেন। কিন্তু কোন কথাতেই বরফ না গলায় শেষ পর্যন্ত উপাচার্যকে পুরো বিষয়টি জানিয়ে আবার গাড়ি নিয়ে ফিরে চলে যান।

এই নিয়ে এদিন অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, যতক্ষণ না বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ আদালতে মামলায় খরচের হিসাবের শ্বেতপত্র প্রকাশ না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কোন কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেওয়া সরকারি গাড়ি তিনি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। তা তিনি করতে পারেন না। জেলা সভাপতি আরো বলেন, ঐ গাড়িতে নীল বাতি লাগানো আছে। তাহলে সেই গাড়ি নিয়ে তিনি কিভাবে কলকাতায় নিয়ে গেলেন? তার জবাব তাকে দিতে হবে। দু-একদিনের মধ্যে সেই  গাড়ি ফিরে না আসে, তখন এখান থেকে কাউকে পাঠানো হবে যে গাড়ি নিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। আমি জানি ঐ গাড়ি আসন্ন ভবনের সামনে আছে। ইতিমধ্যেই গাড়ি বিষয়টি আমরা আসানসোল উত্তর থানার পুলিশকে জানিয়েছি। পাশাপাশি তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আদালতে মামলায় যারা পড়ুয়াদের ফি খরচ করেছেন তাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়া হবে।

এদিকে টিএমসিপির অভিযোগ নিয়ে উপাচার্য ফোনে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে আমি ঐ গাড়ি নিয়ে কলকাতায় এসেছি। এটা সরকারি কাজ। এর আগে যতবার আমি এসেছি, ততবার এই গাড়ি নিয়ে এসেছি। ঐ গাড়ি আসন্ন ভবনের সামনে দাঁড় করানো আছে। ওখানে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী বসেন। তার চোখের সামনেই আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *