ASANSOL

গ্যাংস্টারকে ” শোন অ্যারেস্ট ” করতে পারলোনা আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ

বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের ১৪ দিনের জেল হেফাজত

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের বুধবার ১৪ দিনের জেলে হেফাজত হলো। প্রসঙ্গতঃ গত ১ ও ২ জুলাই পরপর দুদিন আসানসোল জেলে ছিলো সুবোধ সিং। এরপর তাকে ৩ জুলাই তাকে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয়েছিলো। সেদিন সিআইডির আবেদনের ভিত্তিতে সুবোধ সিংয়ের জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।  আদালতের নির্দেশ মতো সিআইডি তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে কলকাতা চলে যায়। সেই ১৪ দিনের হেফাজত শেষে এদিন তাকে আবার আসানসোলের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অর্পিত ভট্টাচার্যের এজলাসে পেশ করে রাজ্য পুলিশের সিআইডি। সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ৩১ জুলাই সুবোধ সিংকে আবার আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।


গত ১ জুলাই আসানসোল আদালত থেকে সুবোধ সিংকে আসানসোলে জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারে নিয়ে আসা হচ্ছিল। অভিযোগ, সংশোধনাগারে দাঁড়িয়ে সিআইডির দুই আধিকারিককে হুমকি দিয়েছিলেন বিহারের ত্রাস সুবোধ সিং। ঐ দিনই  সুবোধের বিরুদ্ধে আসানসোল দক্ষিণ থানায় সিআইডি অভিযোগ জানিয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলা করে। বুধবার সওয়াল-জবাবের সময় সরকারি আইনজীবীর তরফে এই মামলায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আবেদন করেছিল সুবোধ সিংকে “শোন অ্যারেস্ট ” করতে এবং তাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে।


তাতে সুবোধের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ সিআইডির আবেদনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ৪১ নং ধারায় নোটিশ না দিয়ে ” শোন অ্যারেস্ট “করা যায় না। একই সঙ্গে তিনি এদিন দাবি করেছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সুবোধ সিংয়ের পুলিশ বা সিআইডি হেফাজতের বিষয়টি বিবেচনার জন্য গত ৩ জুলাই মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে পাঠিয়েছিলেন। সেই জন্যই তাকে আবারও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের আদালতেই  ফেরত পাঠান হোক। ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট টেকনিক্যাল কারণে অর্থাৎ এই ৪১ ধারায় নোটিশ না দেওয়ার জন্যই  সুবোধকে শোন অ্যারেস্ট ও হেফাজতে নেওয়ার আবেদন নাকচ করেন। পাশাপাশি তাকে ১৪ দিনের জন্য আসানসোল জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে সুবোধকে আসানসোল জেলা ও দায়রা জজের আদালতে পাঠানোর তার আইনজীবীর দ্বিতীয় আবেদনে এদিন আদালতে গ্রাহ্য হয়নি। যদিও সোমনাথবাবু বলেন, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের কাছেই তাকে হাজির করার জন্য আমরা পরবর্তী সময়ে আবারও আবেদন করবো। সেই সময়ই তার জামিনের আবেদন জানানো হবে।


এদিন শুনানি শেষে আদালত থেকে আসানসোল জেলে যাবার সময় সুবোধ সিংয়ের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, আপনি কিছু বলবেন ? তার উত্তরে সুবোধ বলেন, বিনা কারণে আমাকে এরা বারবার আটকে দিচ্ছে ও জেলে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি ” চাচি” কে চেনেন কিনা ? যে চাচিকে হাওড়ার ডোমজুড়ের ডাকাতির ঘটনায় বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে লিঙ্ক ম্যান হিসেবে। উত্তরে তিনি বলেন, আমি বুঝতে পারছিনা  আপনারা আর কি কি ধরনের প্রশ্ন করবেন। আবারও চাচি নিয়ে একই প্রশ্ন করা হলে সুবোধ বিরক্ত হয়ে বলেন আমার বাড়িতে চাচি আছেন।


তবে এদিন নিজের জেল হেফাজতে নির্দেশে সুবোধ যে বিরক্ত, তা তার চোখে মুখে স্পষ্ট ধরা পড়ে।
আপাততঃ ” হাইপ্রোফাইল ” এই দূষ্কৃতির আগামী ১৪ দিনের জন্য ঠিকানা হলো আসানসোল জেল। আর এই জেলে গিয়ে প্রয়োজনে তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলেও জানা গেছে।
প্রসঙ্গতঃ, ২০২২ সালের রানিগঞ্জে এক সোনার ব্যবাসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সুবোধ সিংকে বিহারের বেউর জেল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *