ASANSOL

মিড ডে মিলে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিজেপির আক্রমণ

কোনও কেলেঙ্কারি হয়নি, কেন্দ্রীয় সরকার দেরিতে টাকা পাঠাচ্ছে: সুব্রত অধিকারী

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায় : আসানসোল পুরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি বৃহস্পতিবার জিটি রোডের গোধুলি মোড় সংলগ্ন নিজের আবাসনের অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেই সম্মেলনে চৈতালি তিওয়ারি আসানসোল পুরনিগমকে মিড-ডে মিলে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরব হন। এই সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি নেতা অমিতাভ গড়াই, রাজীব গিরি, মদন মোহন চৌবে এবং কাউন্সিলর গৌরব গুপ্তা।

চৈতালি তেওয়ারি অভিযোগ করেন যে মিড ডে মিলের পরিমাণে অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। এতে কোথাও বড় কেলেঙ্কারি রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। অমিতাভ গড়াই বলেন, দুর্নীতি এবং তৃণমূল কংগ্রেস সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে। এখন সব ক্ষেত্রেই কেলেঙ্কারি বেরিয়ে আসছে । এখন তৃণমূল নেতারা কেলেঙ্কারীতে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন যে তারা বাচ্চাদের খাবারও ছাড়ছেন না। এতেও কেলেঙ্কারী করছেন।

তারা বলেন, আজকাল আসানসোল পুরনিগমের অধীনে স্কুলগুলির মিড-ডে মিলের পরিমাণ তিনটি পর্যায়ে দেওয়া হয়। তাদের অভিযোগ, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মিড-ডে মিলের জন্য ২০ লক্ষ টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। তারমধ্যে মে মাস এর অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ সেই সময় গ্রীষ্মকাল থাকায় ছুটি থাকে।

চৈতালি তেওয়ারি বলেন, বিভিন্ন স্কুলগুলি শংসাপত্র দিয়ে মিড-ডে মিলের জন্য যে পরিমাণ দাবি করেছে তা আসানসোল পুরনিগমের মিড-ডে মিল পোর্টাল বা অ্যাপে দেওয়া পরিমাণের সাথে মেলেনি। এতে নিশ্চয়ই কোনো গরমিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।তিনি বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসেছে যে গত তিন/চার মাস ধরে শুধু স্কুলের শিক্ষকরা নিজেদের খরচে মিড ডে মিল চালাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমাগত টাকা পাঠাচ্ছে মিড ডে মিলের জন্য কিন্তু রাজ্য সরকার নিরন্তর যেভাবে সরকার অন্যান্য দপ্তরে দুর্নীতি করছে, তার প্রভাব এখন শিশুদের ওপর পড়ছে। দুর্নীতির বিষয়েও তদন্ত হওয়া দরকার এবং এর সাথে তিনি দাবি করেন যে আজকে একটি শিশুর মিড ডে মিলের জন্য ৫ টাকা ৪০ পয়সা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে, এই মূল্যস্ফীতির যুগে এত কম খরচে শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া সম্ভব নয়।

পাশাপাশি রাজীব গিরি বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিল তৈরি করা মহিলাদের বেতন ২০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০০ টাকা করার দাবি জানান। চৈতালি তিওয়ারি বলেন, আসানসোল পুরনিগমের দুর্নীতি আজ যেভাবে উন্মোচিত হয়েছে, তা নিয়ে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেয় এবং শিশুদের মিড ডে মিলের দুর্নীতি বন্ধ না হয় তাহলে বিজেপি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ আন্দোলন করবে।

এদিকে আসানসোল পুরনিগমের শিক্ষা দফতরের এমএমআইসি বা মেয়র পারিষদ সুব্রত অধিকারী মিড-ডে মিলের পরিমাণ বরাদ্দে কোনও ধরণের কারচুপি বা দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনের কারণে টাকা আসেনি এবং মাসে আবার এসেছে জুন মাসের অর্থ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন স্কুলে দেওয়া হবে। সরকার যেভাবে টাকা পাঠাচ্ছে ঠিক সেভাবেই দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেরিতে পাঠালে আসানসোল পুরনিগম এই ব্যাপারে কিছু করতে পারবে না। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে, বিজেপির অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। মিড-ডে মিলের কোথাও কোনও দুর্নীতি হচ্ছে না । 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *