রানীগঞ্জে আদিবাসী ভাষায় শিক্ষা গ্রহণের দাবি নিয়ে মহামিছিল
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : অনশন মঞ্চে অনড় থেকে, আদিবাসী ভাষায় শিক্ষা গ্রহণের দাবি নিয়ে চলা অনশন ৯ দিনে পড়ল। আর দীর্ঘ অনশনের পরও কোন বরফ না গলায়, আদিবাসীদের আন্দোলন হল আর তীব্রতর।এবার আন্দোলনের তীব্রতা কি গড়ালো নবান্নের অভিমুখে। কারণ বিক্ষোভকারীরা এদিন দাবি করেছেন, তারা এবার তাদের আন্দোলন কে কলকাতার শিক্ষা দপ্তরে তুলে ধরবেন।
ইতিমধ্যেই মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবিতে রানীগঞ্জের টিডিবি কলেজে, স্নাতক স্তরে সাঁওতালি বিভাগ চালুর জন্য, তারা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী মহামিছিল করে, আদিবাসী ভাষায় শিক্ষার দাবিতে সোচ্চার হয়। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রেক্ষিতে আরো এক দফায় রানীগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড় চৌরাস্তায়, জাতীয় সড়কের ওভার ব্রিজ থেকে তাদের মহামিছিল শুরু তা আবারো রাণীগঞ্জের ত্রিবেণী দেবী ভলিটিয়া কলেজ গেটে পৌঁছে বিক্ষোভ আন্দোলনে সরব হয়।এদিন আদিবাসী দিশম গাঁওতার সদস্যদের সঙ্গেই 40 টিরও বেশি আদিবাসী গণ সংগঠন পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়ার আদিবাসী সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষজনদের সঙ্গে নিয়ে, বিক্ষোভ দেখায়।
প্রথম দফায় গত আঠাশে জুন বিক্ষোভ আন্দোলন ও প্রতিবাদের পর, তারা ফের সাঁওতালি বিভাগে অলচিকি হরফে, শিক্ষার অধিকার পেতে, রানীগঞ্জের দীর্ঘ প্রাচীন কলেজগুলির অন্যতম, ত্রিবেণী দেবী ভলেন্টিয়ার কলেজের বাইরে অনশন মঞ্চ করে। মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার আদায়ের দাবিতে, প্রতিবাদ কর্মসূচি করে, ফাইট ফর মাদার টাং নামক কর্মসূচির মাধ্যমে। আদিবাসী দিশম গাঁওতার সদস্যরা, এই কর্মসূচিতে সামিল হন।
এদিন তারা ধামসা, মাদল নিয়ে, অসংখ্য মহিলা, পুরুষ আদিবাসী পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে, কলেজ গেটের বাইরে স্লোগান তুলে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যান। তারা এদিনও বেলা 1টা টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কলেজ গেটের বাইরে অনশন মঞ্চে ধরনা দেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি টিডিবি কলেজ কর্তৃপক্ষ যতক্ষণ না তাদের এই দাবি পূরণ না করছেন, ততদিন পর্যন্ত তারা তাদের অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এদিনের এই অনশন কর্মসূচিতে জেলা থেকে আদিবাসী সংগঠনের বহু নেত্রী স্থানীয়রা এসে উপস্থিত হন। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে আদিবাসীদের বঞ্চিত করার জন্য টিডিবি কলেজে শিক্ষার পরিকাঠামো থাকার পরও এই শিক্ষাদানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। আর এটা শুধুমাত্র পরিচালন সমিতির সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করার কারণেই হয়েছে বলেই দাবি করেছেন তারা।
সেখানেই এদিন রানীগঞ্জের ত্রিবেণী দেবী ভলেন্টিয়ার কলেজের মাতৃভাষার শিক্ষার অধিকার আদায়ের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে করা এই অনশন প্রসঙ্গে টিচার ইনচার্জ মবিনুল ইসলাম জানান তিনি সমস্ত বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান। তার দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষর তরফে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে, এই সাঁওতালি ভাষায় পড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । তবে তা ওন ফান্ডের টাকায় করতে হবে। আর এতেই বেঁকে বসেছে আদিবাসী সংগঠনের নেতৃস্থানীয়রা। আর এ সকল বিষয় নিয়ে প্রতিনিধিরা মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের এই মঞ্চে, তাদের অনশন কর্মসূচি লাগাতার চালিয়ে যাবেন বলেই দাবি করেন।