খান্দরা পঞ্চায়েতে উপপ্রধান হলেন আশীষ ভট্টাচার্য
বেঙ্গল মিরর, সার্থক কুমার দে, অন্ডাল : খান্দরা পঞ্চায়েতে নতুন উপপ্রধান নির্বাচিত হলেন তৃণমূলের আশীষ ভট্টাচার্য । আগের উপপ্রধান গণেশ বাদ্যকর ইস্তফা দেওয়ায় নতুন করে উপপ্রধান নির্বাচন হয় শনিবার । এদিনের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন । তারা সকলকেই উপপ্রধান হিসেবে আশিষ ভট্টাচার্যকে সমর্থন করেন ।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে অন্ডাল ব্লকের খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৩ টি আসনের মধ্যে কুড়িটি আসন জিতে বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল । প্রধান নির্বাচিত হয়েছিলেন অপর্ণা বাদ্যকর । আর উপপ্রধান পদ পেয়েছিলেন গণেশ বাদ্যকর । প্রধান পদটি সর্বসম্মতিক্রমে হলেও উপপ্রধানের জন্য ভোটাভুটি হয় সেবার । এই পদে দলীয় প্রার্থী আশীর ভট্টাচার্যকে পরাজিত করে উপপ্রধান হন গণেশ বাবু । তখনই অভিযোগ ওঠে গণেশ বাবু তৃণমূলের একাংশের সাথে সিপিএমের নির্বাচিত তিনজন সদস্যের সমর্থন পেয়ে উপপ্রধান হয়েছেন ।
সিপিএমের সাথে যোগ সাজোশের অভিযোগ ওঠে গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে । যদিও বরাবরই সিপিএমের সমর্থনের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি । বোর্ড গঠনের পর থেকে গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে সরব হন দলের ওপর গোষ্ঠী । গণেশ বাবুর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, স্বেচ্ছাচার, সিপিএমের লোকজনকে পঞ্চায়েত থেকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায় তাদের । উপ প্রধানের ইস্তফার দাবিতে জুন মাসের ১৯ ও ২৪ তারিখ পঞ্চায়েত অফিসের গেটে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান দলের ওপর গোষ্ঠীর সদস্যরা । ৩০ শে জুন পঞ্চায়েত অফিস সহ খান্দরা গ্রামের বিভিন্ন জায়গাতে “উপপ্রধান চোর” লেখা পোস্টার পরে ।
বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে তৈরি হয় অস্বস্তিকর পরিবেশ । অচল অবস্থা সৃষ্টি হয় পঞ্চায়েতের কাজকর্মে । বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে আবেদন জানানো হয় দলের ব্লক সভাপতি ও জেলা সভাপতি কে । দুপক্ষের সাথে কথা বলে গণেশকে উপপ্রধান পথ থেকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় দলের পক্ষ থেকে । এক প্রকার বাধ্য হয়ে ১-লা জুলাই উপপ্রধান পদ থেকে ইস্তফা দেন গণেশ বাবু ।
শনিবার খান্দরা গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন করে উপপ্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় । পিসাইডিং অফিসার ছাড়াও এই প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন ব্লক অফিসের পিডিও মোহাম্মদ এশার আলী । ২৩ জন সদস্য এর মধ্যে গণেশ বাবু সহ তৃণমূলের পাঁচজন ও সিপিএমের তিনজন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন উপপ্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়াতে । সুত্র মারফত জানা যায় উপস্থিত ১৫ জন সদস্য উপপ্রধান হিসেবে আশিষ ভট্টাচার্যকে সমর্থন জানান । হলে সর্বসম্মতিক্রমে আশীষ বাবু উপপ্রধান নির্বাচিত হন । নির্বাচন প্রক্রিয়ার শেষের পর আশীষবাবুর অনুগামীরা সবুজ আবির মেখে উৎসব পালন করেন পঞ্চায়েত অফিসের বাইরে । সেখানে উপস্থিত ছিলেন রানীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের অন্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মন্ডল সহ অন্যরা । কালোবরণ বাবু বলেন দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশীষ বাবু উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন । জটিলতার সমাপ্তি ঘটেছে । এবার সবাই একসাথে মিলে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করবে বলে জানান তিনি ।