ASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুর ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণে ৩৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ, পুজোর পরে শুরু কাজ

বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ সেল বা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া আইএসপি বা বার্নপুর ইস্কো কারখানা আরো একবার আধুনিকীকরণ করতে চলেছে। এবারের এই আধুনিকীকরণে মোট ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে সেল ও আইএসপি সূত্রে জানা গেছে। ২০২৪ এর দুর্গাপুজোর পরে এই আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়ে যাবে। এই পর্যায়ের আধুনিকীকরণের পরে ইস্কোর পুরানো ও নতুন প্ল্যান্ট দুটি এক হয়ে যাবে।

তারপর এই কারখানার ইস্পাত উৎপাদনে মোট ক্ষমতা হবে ৭ মিলিয়ন টন। যা দেশের মধ্যে আইএসপি বা বার্ণপুর ইস্কো দেশের সবচেয়ে বড় ও আধুনিক ইস্পাত কারখানা হিসেবে চিহ্নিত হবে। যা দেশের ইস্পাত উৎপাদনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নেবে।এই পর্যায়ের আধুনিকীকরণের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তারজন্য তৎপর হয়েছে ইস্কো কারখানা কতৃপক্ষ। সোমবার বার্নপুরের ইস্কো কারখানা এলাকার সংলগ্ন আসানসোল পুরনিগমের ১০টি ওয়ার্ডের ১০ জন কাউন্সিলরদের নিয়ে দীর্ঘ এক বৈঠক হয়।

বার্ণপুর ক্লাবে হওয়া এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইস্কো কারখানার এক্সকিউটিভ ডিরেক্টর (প্রজেক্ট) সুরজিত মিশ্র, কারখানার আরো এক এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইউপি সিং, চিফ জেনারেল ম্যানেজার (টাউনশিপ) বিনোদ কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা । বৈঠক প্রসঙ্গে কাউন্সিলর তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য অশোক রুদ্র বলেন, এই বৈঠকে আমাদেরকে ইস্কো কারখানার তরফে জানানো হয় যে, ইস্কো কারখানার আধুনিকীকরণে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। তাতে নতুন করে ৪ মিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপাদন হবে।

পুজোর পরেই কাজ শুরু করবে কারখানা কতৃপক্ষ। ইস্কোর পুরনো কারখানায় যে আড়াই মিলিয়ন টন ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা ছিল তা বাড়িয়ে ৭ মিলিয়ন টন করা হবে। এই আধুনিকীকরনের জন্য ইতিমধ্যেই এমএম দস্তুর ও মেকনের সাথে চুক্তি করা হয়েছে। এর জন্য বার্ণপুরে আরো উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। যার মধ্যে প্রথমদিকে ৫৬০টি ফ্ল্যাট, টানেল গেট থেকে রিভারসাইড রোড চওড়া করা সহ শহরে উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। ইস্কোর আধিকারিকরা আমাদেরকে আরো জানান নবান্নে গিয়ে রাজ্য সরকারকেই তারা পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সকলেই অত্যন্ত খুশি । পশ্চিমবঙ্গে এত বড় বিনিয়োগের জন্য এবং আগামী দিনে কলকাতায় যে বাণিজ্য সম্মেলন হবে সেখানে তার জন্য ইস্কোকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে। অশোকবাবু বলেন, আমরা অত্যন্ত খুশি এই বিনিয়োগে। পাশাপাশি তার অভিযোগ, আসানসোল পুরনিগম বা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন কাজ করতে গেলে ইস্কো কারখানা কর্তৃপক্ষ এনওসি দিতে চায় না। একটা স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাই মাস্ক লাগানোর পর্যন্ত এনওসি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া আগে ইস্কো কারখানা ১৬ হাজার কোটি টাকায় আধুনিকীকরণ হয়েছিলো। তখন জমির বিনিময়ে ২৪০ জনের চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। যার মধ্যে মাত্র ১৭৯ জন চাকরি পেয়েছেন। বাকি যাদের বয়স সীমা পেরিয়ে গেছে তাদের স্থায়ী কাজ দিতে হবে। এছাড়া আধুনিকীকরনের পর কর্মসংস্থান হবে।

তাই বহিরাগতদের পরিবর্তে বার্নপুরের স্থানীয়দের চাকরি দেওয়ার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এরজন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে তাদেরকে তা দিতে হবে। বৈঠকে থাকা বোরো চেয়ারম্যান শিবানন্দ বাউরি সহ অন্যান্য কাউন্সিলরাও বলেন, অনুসারী শিল্প গড়ে তোলার বিষয়টি ইস্কো কারখানা কতৃপক্ষের মাথায় রাখতে হবে। এক কাউন্সিলর বলেন, রাঙ্গাপাড়ায় কোয়ার্টার ভেঙে বিদ্যুৎ ও জলের লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। সেখানেও অসামাজিক কাজকর্ম বেড়েছে। তাই সেখানে নতুন করে বিদ্যুৎ ও জলের ব্যবস্থা করতে হবে ইস্কো কারখানা কতৃপক্ষকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *