পদত্যাগ করলেন আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য ডঃ সিভি আনন্দ বোসের কাছে। তার সেই পদত্যাগও গৃহীত হয়েছে বলে এদিন সন্ধ্যায় ডঃ দেবাশীষ বন্দোপাধ্যায় ফোনে নিজেই জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, উড়িষ্যার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো একটা অফার পেয়েছি। তাই এখানকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলাম। আশা করেছিলাম বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো ভালো কাজ করতে পারবো। কিন্তু তা করে উঠতে পারলাম না। আসানসোলের মানুষদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। যে তারা আমার পাশে ছিলেন। যে কাজটা আমি এখানে থেকে করে উঠতে পারিনি, আশা করছি উড়িষ্যায় তা করতে পারবো।
উল্লেখ্য, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আসানসোলের কাজি বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলছে। গত ৯ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আইনি খরচে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি বা তৃনমুল ছাত্র পরিষদ। সেই আন্দোলন এখনো চলছে। এই আন্দোলন চলার মাঝে দুবার উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। দুবারই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত টিএমসিপির কর্মী ও সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।
দুদিনই তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আসতে বাধ্য হন। তারপর এতদিন বাড়ি থেকে কাজ করছিলেন। মাঝে তিনি একবার উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন এবার শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করলেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের আন্দোলনের চাপে তিনি পদত্যাগ করলেন।
এদিকে, তার পদত্যাগ নিয়ে টিএমসিপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, শুনেছি উপাচ্যার্য তার ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম উনি তার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড টাকা থেকে আইনী খাতে যা, খরচ হয়েছে, তার হিসাব দিন। কিন্তু তিনি তা না দিয়ে চলে গেলেন। অভিনব আরো বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি অচলাবস্থা তৈরি করেছিলেন একটা যোগসাজশের মাধ্যমে। তাকে এখানে এনেছিলেন বর্তমান রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গতঃ, এর আগের উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তী চলে যাওয়ার পরে ডঃ দেবাশীষ বন্দোপাধ্যায়কে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তার মেয়াদকাল এই কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলো বছর খানেকের মতো।