রানিগঞ্জ শিল্প তালুকে কারখানা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ, বৈঠকে তৃণমূল ও আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি
বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে একাধিক স্পঞ্জ আয়রন কারখানা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ বলে, অভিযোগ। সেই দূষণের জেরে জেরবার পার্শ্ববর্তী বক্তারনগর, মঙ্গলপুরসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। জানা গেছে, সম্প্রতি বেসরকারি একটি স্পঞ্জ আয়রণ কারখানা নতুন ইউনিট বসায়। কিন্তু, অভিযোগ, সেই নতুন ইউনিটের জন্য দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন যন্ত্র বসাইনি কারখানা কতৃপক্ষ। এর ফলে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়াচ্ছে গোটা এলাকায়। কারখানা থেকে বেরোনো কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় চারিদিক। গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে চর্মরোগ, হাঁপানি ও হৃদযন্ত্রের রোগ, এমনকি ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দেখা যাচ্ছে । দূষণ নিয়ন্ত্রণের দাবিতে সম্প্রতি আন্দোলনে নামে বক্তারনগর গ্রাম বাঁচাও বা গ্রামোন্নয়ন কমিটি। কমিটির সেই আন্দোলনের জেরে নতুন ইউনিট আপাতত বন্ধ রেখেছে বেসরকারি ঐ স্পঞ্জ আয়রন কারখানা।




এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলে এলাকায় আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী ও আইএনটিটিউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। তারা গ্রাম বাঁচাও কমিটির সদস্য এলাকার বাসিন্দা ও কারখানার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সময়ে এলাকার বাসিন্দারা কারখানার গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
এই বৈঠকের পর তৃণমূল জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক এই সমস্যা নিয়ে গ্রামবাসী ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন। এরজন্য গ্রাম বাঁচাও কমিটিকে মন্ত্রীকে লিখিত ভাবে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এইসব কারখানার দূষণ যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে তার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরো জানা, এলাকায় শুধু কারখানা হবে, আর তা থেকে এলাকার বাসিন্দারা কোন সুবিধা পাবেন না, তা তো হতে পারেনা। আমাদের দাবি থাকবে, এলাকার প্রতিটি ঘর থেকে যাতে একজন করে অন্ততঃ একজন করে চাকরি পান, তা দেখা হবে। পাশাপাশি কারখানার সিএসআর প্রকল্প থেকে এলাকায় উন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
অন্যদিকে, গ্রাম বাঁচাও কমিটির পক্ষে জয়দেব খাঁ বলেন, দুষণ নিয়ন্ত্রণে যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। এমনই একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই আমাদের দাবি, গ্রামবাসীদের স্বার্থে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে। তিনি আরো বলেন, এদিন তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি এলাকায় এসে বৈঠক করেছেন। জেলা সভাপতি আশ্বাস দিয়ে বলেছেন যে, রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক গোটা বিষয়টি দেখবেন।
তবে, গোটা বিষয়টি নিয়ে কারখানা কতৃপক্ষের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।