আসানসোল – দুর্গাপুর পুলিশের নাকা চেকিং, পণ্যবাহী গাড়িকে বাংলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, পুলিশের সঙ্গে বচসা বিজেপি বিধায়কের
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল,দেব ভট্টাচার্য, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : গত চার দিন ধরে মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে লাগাতার জল ছাড়ার ফলে বাংলার বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের কুলটির ডুবুরডিহি চেকপোস্টে বাংলা ও ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করে দেয়। পণ্যবাহী গাড়ি গুলিকে বাংলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।যার ফলে বিপাকে পড়েছে গাড়ি চালকরা। শুক্রবার সকালে বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা ডুবুরডিহি নাকা চেক পোস্টে এলেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার।এদিন তিনি নাকা পোস্টে কর্মরত পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বর্ডার সিলের কারণ জানতে চান।তাছাড়া বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা পণ্যবাহী গাড়ি চালকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানা ডুবুরডিহি নাকা চেক পোস্টে এলেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার।এদিন তিনি নাকা পোস্টে কর্মরত পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বর্ডার সিলের কারণ জানতে চান।তিনি পুলিশের কাছে সীমানা সিলের লিখিত অর্ডার কপি দেখতে চান,পুলিশ অর্ডার কপি না দেখাতে পারলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন।তিনি রাস্তায় নেমে জান।এবং গাড়ি চালকদের চলে যেতে বলেন।এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি।বিধায়ক অজয় পোদ্দার জানান পুলিশের উচ্চতম আধিকারিকরা তাকে জানিয়েছেন আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমানা খুলে দেওয়া হবে।তাছাড়াও যেসব কাঁচা মালের যানবাহন রয়েছে সেগুলি ছাড়ার আবেদনও তিনি পুলিশের কাছে করেন।তিনি এও বলেন যদি সন্ধ্যা পর্যন্ত সীমানা না খোলা হয়।তবে বিকেলেই তিনি পূনরায় আন্দোলন শুরু করবেন।
এ প্রসঙ্গে আসানসোলের সাংবাদিকদের ডিসিপি (হেড কোয়ার্টার) অরবিন্দ কুমার আনন্দ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নির্দেশ এসেছে। বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্ত সিল করে চেকিং করা হচ্ছে। ডিসিপি (ট্রাফিক) পুরো বিষয়ে তথ্য দিতে সক্ষম হবেন।
এদিকে, ডিসিপি (ট্রাফিক পীভিজি সতীশকে বেঙ্গল মিররের তরফে ফোন করা হয় এবং তিনি বলেন যে পূর্ব মেদিনীপুর ছাড়াও কিছু জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে যাওয়া যানবাহনগুলি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এবং মেদিনীপুরগামী গাড়িগুলো আটকে দেওয়া হচ্ছে। অন্যান্য গন্তব্যের দিকে যাওয়া যানবাহনকে তাদের বৈধ কাগজপত্র দেখে এবং পরীক্ষা করে যেতে দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই চেকপোস্ট নাকা চেকিং করে নজরদারি করা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ডুবুরডিহি চেকপোস্টে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। গোটা জাতীয় সড়কে লোহার ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে আসা সব ধরনের বড় গাড়ি থামিয়ে নাকা চেকিং করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তুষ্ট হলেই তাদের চলে যেতে দেওয়া হয়, অন্যথায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তবে ছোট বেসরকারি যান চলাচল বন্ধ হচ্ছে না।
মনিরুল শেখ এবং নীরজ কুমার শর্মা, অন্য রাজ্যের দুটি ট্রাকের চালক যারা বাংলায় প্রবেশ করতে পারেনি, তারা বলেন যে বিহারের মুঙ্গের এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে কলকাতা ও মেদিনীপুরের দিকে তারা যাচ্ছিলেন। কিন্তু এখানে এই চেকপোস্টে আমাদের থামানো হয়েছে। বলা হয়েছে বাংলায় বন্যা হয়েছে। তাই ফিরে যাচ্ছি।প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বন্যা পরিস্থিতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার পর পর দুই দিন ডিভিসি-এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।