DURGAPUR

বাংলাকে ডুবিয়ে, ডিভিসিকে বিক্রি করতে চাইছে কেন্দ্র, আক্রমনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

দূর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী

বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে জলাধার থেকে জল ছেড়েছে কেন্দ্র সরকার। এভাবেই বাংলার মানুষকে ডুবিয়ে এখন ডিভিসিকে বেসরকারির সংস্থার ( প্রাইভেট কোম্পানি) হাতে বিক্রি করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। সোমবার পূর্ব বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে দুর্গাপুরে এমন ভাবেই কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । দুদিনের জেলা সফরে সোমবার সকালে পূর্ব বর্ধমান আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করার পাশাপাশি প্রশাসনিক বৈঠক করেন। বিকেলে পূর্ব বর্ধমান থেকে সড়ক পথে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে আসেন তিনি। প্রথমে তিনি দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করেন। তারপর ব্যারেজ সংলগ্ন বন্যা কবলিত সীতারামপুর মানা এলাকাতে আসেন তিনি। সেখানে তিনি দুর্গতদের সঙ্গে দেখা করে, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী তুলে দেন ত্রিপল সহ অন্য ত্রাণ সামগ্রী। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় এসে পৌঁছায় দামোদর তীরবর্তী সীতারামপুর এলাকার যুব আবাস ভবনে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও প্রদীপ মজুমদার, বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় , মন্ত্রী মলয় ঘটক, পশ্চিম বর্ধমান জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সহ অন্যরা।


সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিগত কয়েকদিনের মতে ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখোপাধ্যায়। তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়েছে ডিভিসি। এখনো ছাড়ছে জল। যার ফলে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এইসময় তিনি কেন্দ্র সরকার ডিভিসিকে বেসরকারির হাতে বিক্রি করে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী  তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ডিভিসি কোন কাজ করেনা। ব্যারাজ ড্রেজিং করা হয়না। আগে যেখানে ৪ লক্ষ কিউসেক টন জল ধরে রাখার ক্ষমতা ছিলো, এখন তা ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। ঠিক যে ভাবে ইসিএলকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে, সেভাবেই ডিভিসিকে বিক্রির চেষ্টা হচ্ছে। এভাবেই সবকিছু চলছে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষ মরলেও খবর নেয় না কেন্দ্র সরকার। শুধু ভোটের সময় তাদেরকে বাংলায়  দেখা যায়।


তিনি বলেন, দেখলাম আকাশ কালো করে আছে। আবার দু/তিনদিন বৃষ্টি হবে। তখন আবার জল ছাড়বে। তখন কাকে ডোবাবে কে জানে? বিপদ আসছে। তাই সবাইকে সজাগ থাকতে বলছি। জেলা প্রশাসনকে বলেছি রিলিফ সেন্টারের জায়গা খুঁজে রাখতে। বন্যা দূর্গতদের প্রশাসন রিলিফ দিচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও রিলিফ দেওয়া হচ্ছে। দলের পক্ষ থেকেও যতটা করা যায়, তা করা হচ্ছে। আমি ইতিমধ্যেই সব তালিকা করতে বলেছি। রাস্তা ও বাড়ির তালিকা করা হচ্ছে। ডিসেম্বরে যে বাড়ি দেওয়া হবে, তার তালিকার সঙ্গে এইসব মানুষদের তালিকা মিলিয়ে নিতে বলেছি।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুর্গাপুর সার্কিট হাউসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাত্রি যাপন করবেন। সেই কারণে সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি  প্রচুর পুলিশ কর্মী সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূর্গাপুর থেকে জেলা সফরে বীরভূমে যাওয়ার কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *