আসানসোলে ক্রেডিট কার্ডের নাম করে প্রতারণা, গ্রেফতার তিন
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ক্রেডিট কার্ডের নাম করে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি চক্রের হদিশ পেলো আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের সাইবার থানার পুলিশ। মঙ্গলবার সেই চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করে সাইবার থানার পুলিশ।
বুধবার সকালে আসানসোলে জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার থানায় এক সাংবাদিক সম্মেলন ডিসিপি ( হেডকোয়ার্টার) ডঃ অরবিন্দ আনন্দ সাইবার জালিয়াতি চক্র সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান। এই সাংবাদিক সম্মেলনে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (ডিডি) মীর শহিদুল আলি,
এসিপি (সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ নস্কর, আসানসোল সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় ও অন্য পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অরবিন্দ আনন্দ বলেন, মঙ্গলবার হিরাপুর থানার বার্ণপুরের রহমতনগরের একটি বাড়ি থেকে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নাম আলিম আনসারি, আবু হাসান ও আরশাদ আনসারি। তার মধ্যে প্রথম দুজন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া ও অন্যজন ধানবাদের বাসিন্দা। এরা রহমতনগরে ঐ বাড়িতে ভাড়া থাকতো ।
তিনি আরো বলেন , এই তিনজন ক্রেডিট কার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষদেরকে ফাঁদে ফেলতো। তারপরে তারা বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদনকারীদের তথ্য পেতেন। অরবিন্দ আনন্দ জানান, এইভাবে তারা মানুষকে প্রতারিত করতো। প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গেছে, তিনজন অনেককে প্রতারণা করেছে। মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে রহমতনগরের একটি ভাড়া বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছিলো। তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রতারকরা ব্যাবসায়ীদের আলাদা একটি গ্রুপের মাধ্যমে এটা করছিলো। সেখানে নথিভুক্ত সকল ব্যাবসায়ীদের যাবতীয় নথি দেওয়া থাকে। প্রতারকরা কোনভাবে সেই গ্রুপ থেকে বিভিন্ন ব্যাবসায়ীদের ফোন নং সহ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ব্যাবসায়ীদের ক্রেডিট কার্ডের লোভনীয় অফার বা ক্রেডিট কার্ডের সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে অবিলম্বে সেটা রিনিউ করার আকর্ষণীয় অফার দেওয়া হয়। প্রতারকরা ব্যাবসায়ীদের ব্যাংকে দেওয়া তথ্য সংগ্রহ করে সেখান থেকে এ্যাকাউন্ট নং সহ ওটিপি সংগ্রহ করে গুগুল এ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতো।
ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) জানান, বুধবার ধৃতদেরকে আসানসোল আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়ার জন্য করা আবেদন করা হয়েছে। যাতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কতজনকে এভাবে প্রতারণা করেছে এবং তাদের সাথে আরও কারা রয়েছে তা জানা যায়।
ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে, সাইবার জালিয়াতি বা প্রতারণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০ উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হলে এই নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এই তিন অভিযুক্ত গত ৩ মাস ধরে এই চক্রটি চালাচ্ছিল। রহমত নগর এলাকার কেউ এর সঙ্গে জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ।