রানিগঞ্জে চেম্বার থেকে চিকিৎসকের পচাগলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জী: ভাড়াবাড়ির চেম্বার থেকে গলায় দড়ি দেওয়া এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ( আরএমপি বা রেজিস্ট্রার মেডিক্যাল প্র্যাক্টিশনার) গলায় দড়ি দেওয়া পচাগলা ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো। শুক্রবার সকালের এই ঘটনায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার ডাঃ এম এন ঘোষ রোডের মাজার শরিফ আজাদ নগর এলাকা চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে আসেন আসানসোল পুরনিগমের রানিগঞ্জ বোরোর চেয়ারম্যান শেখ মোজাম্মেল হোসেন ও ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আখতারি খাতুন। রানিগঞ্জ থানার তারবাংলা রাজপাড়ার বাসিন্দা মৃত চিকিৎসকের নাম লালমোহন খাঁ (৫৪)। পরে খবর পেয়ে আসে রানিগঞ্জ থানার পুলিশ। বেশ কিছুক্ষন পরে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত চিকিৎসকের স্ত্রী আইসিডিএস কর্মী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রানিগঞ্জের ডাঃ এম এন ঘোষ রোডের মাজার শরিফ আজাদ নগর এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে চেম্বার ছিলো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক লালমোহন খাঁয়ের। এদিন সকালে শাটার লাগানো সেই চেম্বারের ভেতরে সিলিংয়ে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
রানিগঞ্জের তারবাংলা রাজ পাড়ার বাসিন্দা লালমোহন খাঁ গত তিনদিন আগে মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীকে বাইরে কাজে যাচ্ছি বলে বেরোন। তারপর তিনি আর বাড়ি ফিরে যাননি। তার চেম্বারের শাটারও বন্ধ ছিলো। শুক্রবার সকালে আজাদ নগর এলাকার বাসিন্দারা চিকিৎসকের চেম্বার থেকে দুর্গন্ধ পান। একইসাথে তারা চেম্বারের শাটারের নিচ থেকে রক্ত বার হতে দেখেন। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তারা রানিগঞ্জ থানার পাশাপাশি, স্থানীয় কাউন্সিলর ও বোরো চেয়ারম্যানকে খবর দেন। পুলিশের পাশাপাশি তারাও এলাকায় আসেন। স্ত্রী সহ চিকিৎসকের আত্মীয় পরিজনের ছুটে আসেন। এরপর শাটার খুলে দেখা যায় চেম্বারের ভেতরে সিলিংয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন। মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে তা মেঝেতে পড়েছে ও দেহে পচন ধরেছে। যে কারণেই দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে।
চিকিৎসকের এহেন মৃত্যুতে এলাকার বাসিন্দারা হতচকিত।
বোরো চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলার বলেন, খুবই খারাপ ও দুঃখজনক ঘটনা। লালমোহন খাঁ এখানে ভাড়াবাড়িতে চেম্বার করতেন। সকালে খবর পেয়ে আমরা আসি। তিনি ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কি কারণে তিনি এমন ঘটনা ঘটালেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। হতে পারে কোন কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সেটিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে এই ঘটনা নিয়ে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কোন কারণে চিকিৎসক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। যে কারণেই তিনি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। ঘটনা তদন্ত করে দেখছে, পুলিশ বলে জানা গেছে।