পুলিশ পরিচয় দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি, রানিগঞ্জের এক ব্যক্তির থেকে সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা হাতালো সাইবার অপরাধীরা, থানায় অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ ও আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ দিন কয়েক আগেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ” মন কি বাত ” অনুষ্ঠানে ডিজিটাল অ্যারেস্ট সম্পর্কে অবহিত করে সাধারণ মানুষদেরকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারই মধ্যে পুলিশ আধিকারিক পরিচয় দিয়ে সাইবার অপরাধীরা পশ্চিম বর্ধমান জেলার রানিগঞ্জের আনন্দ পল্লীর বাসিন্দা বিশ্বজিৎ নায়ক নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠলো। প্রতারিত হয়ে বিশ্বজিৎ নায়ক বিষয়টি জানিয়ে জাতীয় পোর্টালে অভিযোগ করেছেন। একইসাথে তিনি আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল সাইবার থানাতেও গত ৪ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। যে সব মোবাইল নম্বর থেকে তার কাছে ফোনগুলি এসেছিল তার নম্বরও জানান হয়েছে সেই অভিযোগে।
অভিযোগপত্রে বিশ্বজিৎ নায়ক জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন আগে তার কাছে একটি “আননোন ” নম্বর থেকে ফোন আসে। সেই ফোন করা ব্যক্তি সাইবার তাকে পুলিশ আধিকারিক পরিচয় দিয়ে বলে আপনার কাছে অবৈধ ব্যাংকের একাউন্ট আছে । এরপরই ঐ ব্যক্তি তার কলটা সাইবার থানার আধিকারিককে দেওয়ার নাম করে ট্রান্সফার করে দেন। সেই ব্যক্তি তখন ফোনে তাকে বলেন, এটা একটা জাতীয় স্তরের বড় ধরনের বিষয় হয়ে উঠতে পারে। যে কোনো মুহূর্তে আপনাকে গ্রেফতার করা হতে পারে এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ।
এমন ভয় দেখিয়ে এরপর তার কাছে আরো আধিকারিকদের নাম করে একাধিক ফোন আসে বিভিন্ন নম্বর থেকে। পরে তাকে হোয়াটসঅ্যাপেও কল করা হয়। সেইসব ফোনগুলিতে বলা হয় আপনার পরিবারের বা আপনি কোন এলাকায় থাকেন তার যাবতীয় তথ্যও আমাদের হাতে আছে। এরপরে লাগাতার ভয় দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত বিশ্বজিৎ নায়কের তিনটি ব্যাংকের একাউন্ট থেকে মোট ২১ বারে সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এরপরেও ঐ ব্যক্তিদের চাহিদা না মেটায় তখন তিনি বুঝতে পারেন যে আসলে সাইবার অপরাধীদের পাল্লায় পড়ে গেছেন। এরপর সমস্ত তথ্য দিয়ে বিশ্বজিৎবাবু আসানসোলের সাইবার থানায় গত ৪ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে ।
সম্প্রতি, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি ( সদর ) অরবিন্দ কুমার আনন্দ সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত একটি ঘটনায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, এই ধরনের কোন ফোন এলে, তাকে গুরুত্ব দেবেন না। সঙ্গে সঙ্গে চেষ্টা করবেন স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানাতে।
সাইবার অপরাধ নিয়ে সাইবার ও বিভিন্ন থানার পুলিশের পক্ষ থেকে কিন্তু এই নিয়ে বারবার সাধারণ মানুষের সচেতন করা হচ্ছে। তারপরেও একাধিক সাইবার অপরাধের ঘটনা ঘটায়, আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে।