PANDESWAR-ANDAL

মোবাইল লোকেশন ধরিয়ে দিল খুনিকে

সম্পত্তির নমিনি না করায় কি গেছে প্রাণ ?

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি, পাণ্ডবেশ্বর : খনি কর্মী প্রেমিকার ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা ও সম্পত্তির নমিনি নিজের ছেলের নামে না করায়, দীর্ঘদিন ধরে লিভ টুগেদার করা প্রেমিক, ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে, খনি কর্মী প্রেমিকাকে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে, ছক কোষে নৃশংসভাবে খুন কোরে গা ঢাকা দিয়েও পার পেল না। পুলিশের বিশেষ তৎপরতায়, শেষমেষ পুলিশের জালে ধরা পড়লো মূল অভিযুক্ত। মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে, দীর্ঘ দু মাস পর মূল অভিযুক্ত কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ। ছেলের পর এবার ধরা পড়লো বাবা। দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়েও হলো না শেষ রক্ষা।

ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় চলতি বছরের গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর পাণ্ডবেশ্বর থানার কেন্দ্রা পঞ্চায়েত এলাকার ডালুর বাঁধ ৮ নম্বর খনি আবাসন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়, বছর ৪৪ এর খনিকর্মী বুলবুল দেবীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। এই ঘটনার পরপরই ওই খনি কর্মীর মেয়ে সুমন কুমারীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এই হত্যার ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকা অশোক পাশোয়ান ও তার ছেলে রোহিত পাশোয়ানের নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলে, পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে রোহিত পাশোয়ানকে গ্রেফতার করে। এরপরই দীর্ঘ তল্লাশি করে ওই ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া, রক্তাক্ত ধারালো চুরি ও রক্তমাখা রুমাল উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সে সময় ওই মহিলা খনি কর্মীর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন খুঁজে পায় না পুলিশ।

এর পরই পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে দীর্ঘ তল্লাশি চালিয়ে টানা নজরদারি রেখে, খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোন কে এই খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকা মূল অভিযুক্ত নিয়ে চম্পট দিয়েছে বলেই অনুমান করে, ওই দুষ্কৃতকারীকে পাকড়াও করতে সমর্থ্য হয় পুলিশ। এই ঘটনায় পাণ্ডবেশ্বর থানার ওসি ইন্সপেক্টর রাহুল দেব মন্ডল এক বিশেষ টিম তৈরি করে টানা নজরদারি চালিয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার সঞ্জয় ঘোষ, ও এই ঘটনার আইও এসআই অমল সাহাকে নিযুক্ত করে, শেষমেষ পায় সফলতা।

তারা ১৫ ই নভেম্বর ওই অভিযুক্ত অশোক পাশোয়ান কে পাণ্ডবেশ্বর রেলস্টেশন এলাকায় ঘোরাফেরা করছে এই খবর পেয়ে, অতর্কিতে অভিযান চালিয়ে পায় সফলতা। ১৬ই নভেম্বর অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য পাণ্ডবেশ্বর থানায় নিয়ে এসে এই ঘটনার পুনরনির্মাণ করে, কিভাবে হত্যার ঘটনা সে সংগঠিত করেছিল তা সে নাট্যরূপে তুলে ধরে প্রশাসনের কাছে। এবার সেই অভিযুক্তকেই সাংবাদিক বৈঠক করে কিভাবে এই নারকীয় ঘটনা ওই অভিযুক্ত ঘটিয়েছিল, কি বা তার অভিসন্ধি ছিল, সে সম্পর্কে সবিস্তারে জানান দিলেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ইস্ট আই পি এস অভিষেক গুপ্তা, উপস্থিত ছিলেন এসিপি অন্ডাল পিন্টু সাহা, সিআইবি পিন্টু মুখার্জি, পাণ্ডবেশ্বর থানার ওসি ইন্সপেক্টর রাহুল দেব মন্ডল, সেকেন্ড অফিসার সঞ্জয় ঘোষ, আই ও অমল সাহা।

পুলিশ প্রশাসন এদিন যে অস্ত্র দিয়ে ওই মহিলাকে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছিল তা প্রকাশ্যে আনার সাথেই সেই রক্তমাখা রুমাল ও যে মোবাইল হাতিয়ে নিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতকারী, সেটিও উদ্ধার করে সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান অশোক পাশোয়ানের নির্দেশ মোতাবেক বুলবুল দেবী তার ছেলের নামে তার সম্পত্তির নমিনি না করায় সে তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে, এই নৃশংস পাশবিক হত্যার ঘটনা সংঘটিত করেছে। পুলিশ জানিয়েছেন আগামীতে জিজ্ঞাসাবাদ জারি রয়েছে, আরো অন্য সকল নতুন কোন বিষয় সামনে এলে তাও তুলে ধরা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *