Bihar-Up-Jharkhand

দামোদরে ডুবে মৃত্যু ধানবাদের তিন স্কুল পড়ুয়ার

বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে মাইথনে মর্মান্তিক ঘটনা

বেঙ্গল মিরর, মাইথন , রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ* এক বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে অন্য বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে মাইথনে দামোদর নদীর জলে ডুবে মৃত্যু হলো তিন স্কুল পড়ুয়ার। বুধবার বিকেলে এই ঘটনাটি ঘটেছে মাইথনের তিন টাওয়ারের কাছে। মৃতরা ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। মৃতদের নাম হলো যুবরাজ সিং (১৬), জায়েদ হোসেন (১৬) ও নায়াফ গোদি (১৫)। তারা ধানবাদ জেলার বাঁশেপুর, বারমেশিয়া ও নয়াবাজারের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।   বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে মৃতদেহগুলি মাইথন ওপি বা আউটপোস্টের পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য ধানবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃতরা ধানবাদের গুরু গোবিন্দ সিং হাইস্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়া।


জানা গেছে, ছয় বন্ধুর সঙ্গে গিয়ে, তার মধ্যে তিন বন্ধু স্নান করতে নেমে মাইথন বাঁধে ডুবে গেছে, এমন খবর ঘটনা ঘটার বেশ কয়েক ঘন্টা পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন। তড়িঘড়ি ধানবাদ থেকে মাইথনে পৌঁছান। তখনই স্থানীয় লোকজনের বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর খবর পেয়ে মাইথন ওপির পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে আসে।


ঘটনা নিয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের, বাঁশেপুর বারমেশিয়া ও নয়া বাজারের যুবরাজ সিং, জায়েদ হোসেন ও নায়াফ গোদি তাদের অন্য তিন বন্ধু ঈশান আলম, লাকি ও তগদীশ সালামের সঙ্গে বুধবার বিকেল ৪টায় মাইথন বাঁধ দেখতে আসে। এরপর তারা সবাই মিলে মাইথন বাঁধের নিচের তিন টাওয়ারের কাছে স্নান করতে নামে। আচমকা যুবরাজ, জায়েদ ও নায়াফ একে একে ডুবে যায়। তা দেখে বাকি তিনজন ভয় পেয়ে কাউকে না জানিয়ে মাইথন থেকে ধানবাদে ফিরে যায়। তারা ডুবে যাওয়া তিনজনের বাড়িতে ঘটনার ব্যাপারে কিছু না বলে চুপচাপ থেকে যায়। এদিকে, সন্ধ্যা হয়ে গেলেও তিন স্কুল পড়ুয়া বাড়িতে না পৌঁছানোও পরিবারের লোকজনেরা তাদের খোঁজ শুরু করেন। বাড়ি ফিরে আসা তিন কিশোরের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। কিন্তু তারা জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে তিনজন কিছু না বলেনি। পরে তাদেরকে ওপর চাপ দেওয়া হলে এক যুবক জানায়, তারা মাইথন ড্যাম বা বাঁধে বেড়াতে গেছিলো বিকেল চারটে নাগাদ। সেখানে স্নান করতে নেমে তিনজন ডুবে গেছে। তারা ভয়ে কিছু বলেনি। সেই মতো  ধানবাদ থেকে তিন স্কুল পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা পৌঁছে যান মাইথন বাঁধে।


বুধবার সন্ধ্যার পরে মাইথন ওপির অফিসার ইনচার্জ আকৃষ্ট আমন, প্রশাসনের আধিকারিক সিও বা সার্কেল অফিসার কৃষ্ণ মারান্ডি খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছান।  সিআইএসএফ জওয়ান এবং স্থানীয় লোকজনেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু অন্ধকার নেমে আসায় বুধবার রাতে আর উদ্ধার কাজ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার তল্লাশি শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনদের সাহায্য তিন টাওয়ার এলাকা থেকে সকাল ১০টায় যুবরাজ সিংয়ের দেহ জল থেকে বার করা হয়। এর  কিছুক্ষণ পরে জায়েদ হোসেনের দেহ উদ্ধার হয়।  নায়াফ গোদির দেহ দুপুর তিনটে নাগাদ ঐ একই জায়গা থেকে পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *