আসানসোলের সিঞ্চন স্নিগ্ধ অধিকারী ইউপিএসসি ” আইএসএস তে দেশের সেরা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* ইউপিএসসি’র ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল সার্ভিস (আইএসএস) পরীক্ষায় বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের সিঞ্চন স্নিগ্ধ অধিকারী। তিনি এই পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারী। দেশের সর্বোচ্চ স্তরের গুরুত্বপূর্ণ এই সরকারি চাকরির পরীক্ষায় নজরকাড়া সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সিঞ্চনের পরিবারের সদস্যরা থেকে গোটা আসানসোল ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা।
সিঞ্চন স্নিগ্ধ অধিকারী আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী। সে ২০১৩ সালে আসানসোলের রামকৃষ্ণ মিশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেছিলো। তার বাড়ি আসানসোলের ইসমাইলে।
পরে সে কলকাতার আইএসআই থেকে স্ট্যাটিস্টিক্সে ব্যাচেলার ও মাস্টার্স করেন। মধ্যবিত্ত পরিবারে, একেবারে সাধারণ পরিবেশে বড় হওয়া সিঞ্চনের বাবা প্রদীপ অধিকারী আসানসোল মাইন্স বোর্ড অব হেলথের কর্মী। মা সুজাতা অধিকারী গৃহবধূ।
২০২৩ সালে সিঞ্চন ইউপিএসসিতে প্রথমবার বসেছিলো। কিন্তু তার সাফল্য আসেনি। তবে সে হাল ছেড়ে দেয়নি। নতুন উদ্যোমে সিঞ্চন আবারও পরীক্ষা দেয়। আর তাতে আসে এই সাফল্য।
শনিবার আসানসোল শহরের হাড় কাঁপানো শীতের সকালে যখন তার বাড়িতে যাওয়া হয়, তখন দেখা উৎসবের মেজাজ। বাবা-মা তাদের একমাত্র ছেলেকে মিষ্টি খাওয়াতে খাওয়াতে কথা বলেছিলেন। এই সাফল্যের পুরো কৃতিত্বটাই সিঞ্চন দিতে চান তার বাবা-মাকে। তবে তিনি সব সময় পাশে যাদেরকে পেয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অধ্যাপকরা। যারা তাকে আজ যে তার এই সাফল্য এসেছে, সেখানে পৌঁছাতে সহযোগিতা করেছেন ও পরামর্শ দিয়েছেন।
এক সাক্ষাৎকারে সিঞ্চন বলেন, প্রথমবার না হলেও, হাল ছেড়ে দিতে নেই। উদ্দেশ্য অবিচল থাকলে সাফল্য অবশ্যই আসবে। আমি কোনদিন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবো ভাবিনি। অঙ্ক আমার ছিলো প্রিয় বিষয়। তাই সেটাকে ধরে এগিয়ে চলি। বাবা-মাকে পাশে পাই। সিঞ্চন আরো বলেন, যেখানে পোষ্টিং পাবো, সেই কাজ দায়িত্ব সহকারে করার চেষ্টা করবো।
ছেলের এই সাফল্যে অবশ্যই খুশি সিঞ্চনের বাবা ও মা। তারা বলেন, ছেলের সঙ্গে সবসময় ছিলাম। ও যেটা ভালো মনে করেছে, তাতে আমরা সহযোগিতা করেছি।
সিঞ্চনের এই মাইলস্টোনে উচ্ছ্বসিত আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ মহারাজ ও রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়। তাপসবাবু বলেন, আসানসোলের ছেলেমেয়েরা কারোর চেয়ে কম নয়, তা আরো একবার প্রমাণিত হলো।