রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়ার মধ্যে মাত্র ৩০ কিলোমিটার রেললাইন সম্প্রসারণের দাবি
উপকৃত হবেন হাজার হাজার মানুষ, সমস্যা মিটবে যাতায়াতের
বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ ও আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের রানিগঞ্জ স্টেশন থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণের দাবি উঠলো। রানিগঞ্জের বণিক সভা, বাঁকুড়া মৈত্রী সংঘ সহ একাধিক সংগঠন ও বিভিন্ন মহল থেকে এই দাবি করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের নেতা ও নেত্রীরাও তাদের এই দাবিতে সহমত পোষণ করেন।
তাদের দাবি, রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়ার মেজিয়া পর্যন্ত রেললাইন তৈরি হয়ে আছে। সেই লাইন দিয়ে ডিভিসির মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিয়মিত কয়লার মালগাড়ি যাতায়াত করে। বর্তমানে রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়া শহরে পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে বাস চলাচল করে। কিন্তু সেইসব বাস দিনভর প্রয়োজন মতো মেলেনা। ফলে বহু মানুষকে দুর্গাপুর হয়ে বাসে বা আসানসোল থেকে ট্রেনে বাঁকুড়ায় যেতে হয়।
রেলপথে আসানসোল থেকে বাঁকুড়ার দূরত্ব ৯৪ কিলোমিটার। যাতায়াতের এই সমস্যা মেটাতে রানিগঞ্জের বাসিন্দা সহ সমগ্র আসানসোল মহকুমা ও পাশের জেলা বীরভূমের বাসিন্দাদের দাবি, মেজিয়া থেকে বাঁকুড়া পর্যন্ত মাত্র ৩০ কিলোমিটার রেললাইন সম্প্রসারণ করলে সরাসরি বাঁকুড়া শহরে পৌঁছে যাওয়া যাবে। এই সামান্য অংশে রেললাইন সম্প্রসারণ করলে আসানসোল ,জামুরিয়া রূপনারায়নপুর, চিত্তরঞ্জন, বীরভূমের বাসিন্দারা খুব সহজে বাঁকুড়ায় পৌঁছে যেতে পারবেন। বীরভূম ও রানিগঞ্জ সংলগ্ন এলাকার বহু রোগীকে চিকিৎসার জন্য বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে যেতে হয়। তেমনই বাঁকুড়ার লোকেরা নানা কাজে রানিগঞ্জ ও আসানসোলের বিভিন্ন এলাকায় আসতে হয়।
এই রেললাইন চালু হলে, সবার সুবিধা হবে। আসানসোল থেকে ট্রেনে করে বাঁকুড়ার দূরত্ব ৯২ কিলোমিটার। বাঁকুড়া মৈত্রী সংঘের তরফে বাসুদেব মন্ডল বলেন, রানিগঞ্জ থেকে মেজিয়া রেললাইন সংযুক্ত করলে সত্যি সত্যি হাজার হাজার মানুষের উপকার হবে। বর্তমানে বিকেলের দিকে রানিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়ার দিকে যাওয়ার কোন বাস নেই। আমরা বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার রাজনৈতিক নেতাদের কাছে আবেদন করেছি, তারা যেন তাদের মতো করে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন।
পূর্ব রেলের প্রাক্তন জেডআরইউসিসি সদস্য তথা সামাজিক সংগঠন ” ভাবনা”:র সভাপতি বিশ্বদেব ভট্টাচার্য বলেন, এই দুই জেলার রাজনৈতিক সাংসদদের এই বিষয়ে রেলমন্ত্রীর সাথে কথা বলে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এতে সকলেই লাভবান হবেন। এই নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই রেলকর্তাদের চিঠি দিয়েছি।
অন্যদিকে, বাঁকুড়ার সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ব্যবসা এবং শিল্পের যোগাযোগ বাড়াতে রানিগঞ্জ মেজিয়া রেললাইনটিকে আরো ৩০ কিলোমিটার সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে রেলমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রানিগঞ্জ বণিকসভার অন্যতম উপদেষ্টা রাজেন্দ্র প্রসাদ খৈতান। তিনি বলেন, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রানিগঞ্জ থেকে এই রেললাইন যোগাযোগের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পরে আর এই কাজে এগোওনি। আসানসোলের পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমি আগেও রেল মন্ত্রকে একটি চিঠি লিখেছি।
আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়িক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, আমি নিজেও রেলমন্ত্রীকে এই বিষয় নিয়ে আবেদন করব।
এদিকে, রেলের তরফে এক আধিকারিক বলেন, রেল বোর্ড থেকে অবশ্যই আমাদের কাছ থেকে এই রেললাইন নিয়ে ফিজিবিলিটি রিপোর্ট চেয়ে পাঠালে আমরা তা নিশ্চয় তৈরি করে জমা দেব।