Asansol Court : বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন যুবতীকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত যুবক, চার বছর পরে সাজা ঘোষণা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* মানসিক ভারসাম্যহীন বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বছর ২০/২১ র এক যুবতীকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো। সোমবার আসানসোল আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ বা এডিজে ( দ্বিতীয়) তানিয়া ঘোষ সালানপুরের বাসিন্দা রবি তুড়ি ওরফে গুটু নামে ঐ যুবকের এই সাজা ঘোষণা করেন। গত শনিবার সালানপুর থানার মামলার শুনানির শেষে ভারতীয় দন্ডবিধির বা আইপিসির ৩৭৬ নং ধারায় ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল রবি তুড়ি।




আসানসোল আদালতের এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি তাপস উকিল এদিন বলেন, বিচারক দোষী সাব্যস্ত যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসাথে বিচারক নির্যাতিতাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যা দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের ভিকটিম ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে বলে বিচারক জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এই মামলা চলাকালীন আদালতে তিন চিকিৎসক সহ মোট ১৫ জন সাক্ষ্যদান করেছেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়া যুবক এখন জেলেই আছে। পুলিশ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ায় যুবক জামিন পায়নি।
সরকারি আইনজীবী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১১ জুলাই হঠাৎ করে সালানপুরের বাসিন্দা মানসিক ভারসাম্যহীন ঐ যুবতীর পেটের ব্যথা শুরু হয়। তখন তাকে তার মা এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। তখন চিকিৎসক পরীক্ষা করে বলে, যুবতী ৪/৫ মাসে অন্তঃসত্ত্বা। তখন মা মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন ও জানতে চান, কে এই কাজ করেছে? পরে যুবতী বলে এলাকারই বাসিন্দা রবি তুড়ি ওরফে গুটু তাকে জোর করে বাড়ির অদূরে রেললাইনের পাশে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেছে। এরপর সেদিনই গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে যুবতীর মা সালানপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে, তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬ নং ধারায় ধর্ষণের মামলা করে। যুবতীকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের গাইনোকলজিস্ট বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন। এরপর যুবতীর মানসিক অবস্থা ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ ডিপি রায় চৌধুরী তার পরীক্ষা করেন।
তিনি তার রিপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি যুবতীর ” আইকিউ ” পরীক্ষার জন্য আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগে রেফার করেন। সেখানে দুই এ্যাসোসিয়েট প্রফেসর যুবতীর পরীক্ষা করেন। তারা রিপোর্টে বলেন, যুবতীর ” আইকিউ ” খুবই কম। পরবর্তী কালে ঐ যুবতী মৃত সন্তান প্রসব করেন। আদালতের নির্দেশে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঐ সদ্যজাতর ময়নাতদন্তের সময় রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। একইসঙ্গে অভিযুক্ত যুবকের রক্তের নমুনা নিয়ে সদ্যজাতর রক্তের নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। তাতে মিল পাওয়া যায়। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়। যা শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত যুবকের দোষ প্রমাণের পাশাপাশি সাজা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার হয় বলে আইনজীবী জানিয়েছেন।