ASANSOLBARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

নদীর উপরে পারাপারের জন্য তৈরি বেআইনি রাস্তা ভাঙলো পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন

বেঙ্গল মিরর, বারাবনি, মনোজ শর্মা ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ  যাতায়াতের অসুবিধা রয়েছে। স্থায়ী সেতু দিয়ে যেতে হলে অনেকটা ঘুরতে হয়। তাই ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে বাংলায় আসা বা যোগাযোগের জন্য অজয় নদীর উপরে তৈরি করা হয়েছিলো রাস্তা। সাধারণতঃ কোন নদীর উপরে মাটি ও পাথর ফেলে নদীর গতিপথ আটকে এমন কিছু করা যায় না। যা, আইনের চোখে একেবারে বেআইনি বা অবৈধ। কিন্তু এমনই ঘটেছিলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বারাবনি ব্লকে।
সোমবার সকালে বারাবনি ব্লক প্রশাসন এবং বারাবনি থানার পক্ষ থেকে জামগ্রাম পঞ্চায়েতের আমুলিয়ায় অজয় নদীর উপর পারাপারের জন্য  মাটির তৈরি রাস্তা জেসিপি মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে দেওয়া হলো। বারাবনি থানার ওসি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় ও বারাবনি ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের রেভিনিউ অফিসার শুভদীপ মিত্রের উপস্থিতিতে এই ভাঙ্গার কাজ হয়।


এই বিষয়ে বারাবনির ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার বা বিডিও শিলাদিত্য ভট্টাচার্য বলেন, একদিকে যখন স্থায়ী সেতু আছে, সেক্ষেত্রে নদীর গতিপথ বন্ধ করে এই ভাবে রাস্তা করা যায়না। আমরা জানতে পারার পরে ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তর ও পুলিশকে বলা হয়েছিলো ঐ রাস্তা ভাঙ্গার জন্য। তাই করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এই ব্লকে আরো এমন অবৈধ রাস্তার সন্ধান পাওয়া গেলে সেগুলোও ভেঙে দেওয়া  হবে বলে তিনি জানান।


জানা গেছে, বারাবনির জামগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের আমুলিয়া এলাকায় অজয় নদীর উপর নির্মিত এই অবৈধ রাস্তা ঝাড়খণ্ডে বসবাসকারীরা এই ব্রিজটি ব্যবহার করতেন। ঝাড়খণ্ড থেকে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা ব্যবহার করতেন। এই ব্যাপারে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, এই রাস্তা ঝাড়খণ্ডের দরিদ্র মানুষদের অনেক সুবিধা দিতো। বিশেষ করে ঝাড়খণ্ড থেকে সড়কপথে যদি বারাবনিতে আসতে হয় একজনকে রুনাকুড়াঘাট হয়ে আসতে হয়, যা প্রায় ২৭ কিলোমিটার। কিন্তু নদীর উপর নির্মিত এই অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে বারাবনি পৌঁছানোর জন্য একজনকে মাত্র ৪ কিলোমিটার যেতে হতো । বিশেষ করে আসানসোল যেতে ঝাড়খণ্ডের লোকেরা এই রাস্তা ব্যবহার করতেন। তাদের দাবি, এটা ভেঙে দেওয়ায় ঐসব এলাকার বাসিন্দারা প্রচুর সমস্যায় পড়লেন।


এই বিষয়ে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিং বলেন, শুধুমাত্র এই বারাবনিতেই নয়, জামুরিয়া, পাণ্ডবেশ্বর প্রভৃতি এলাকাতেও এ ধরনের অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। যাতে ঝাড়খণ্ডের মানুষেরা এদিকে আসতে পারেন। কারণ হলো ঝাড়খণ্ডের এই দিকটায় ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। তাই তারা অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করেন। এ ছাড়া কর্মসংস্থানের জন্যও লোকজন আসেন। অভিযোগ যেহেতু পাওয়া গেছে, তাই পুলিশ প্রশাসন আইন মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *