রানিগঞ্জে ” সংকল্প রাম রাজ্যের ” সভায় শুভেন্দু অধিকারী, বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আবারও হিন্দুত্বে শান, ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক
বেঙ্গল মিরর, রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জি ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তাই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি বঙ্গ জয়ের লক্ষ্যে এখন থেকেই ময়দানে নেমে পড়েছে। সেই লক্ষ্যেই আবারও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে হিন্দুত্বে শান দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার বিকেলে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার রানিগঞ্জের নতুন এগরায় ” সংকল্প রাম রাজ্যর ” এক সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সনাতনী হিন্দুদেরকে ঐক্যবদ্ধ ও একজোট হওয়ার ডাক দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তার দাবি, এটা না হলে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের মতো সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। তাদেরকে দেশ ছাড়তে হবে। এই সভা থেকে নানা ইস্যুতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন।
এই সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় একাধিক বিধায়ক ও জেলা নেতৃত্ব।
এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে একটা সময় হিন্দু, শিখ ও পার্সীদের সংখ্যা অনেক ছিলো। তাদের কত সম্পত্তি ছিলো। কিন্তু তাদেরকে সব কিছু ছেড়ে চলে আসতে হয়েছে। বাংলাদেশের কথাই ধরুন না। ১৯৪৭ সালে ঐ দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের সংখ্যা ৩৩ শতাংশ। ১৯৭১ সালে তা হয় ২২ শতাংশ। আর এখন সাড়ে ৭ শতাংশ। ১৭ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মেরেকেটে ২ কোটি হবে। তাই বলছি, সব হিন্দুরা একজোট হয়।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দু বলেন, তৃনমুল কংগ্রেস এখন আর ন্যাশানাল দল নয়। নামটাই শুধু এআইটিসি। মেঘালয় ও ত্রিপুরার ভোটের পরে এই দলের ন্যাশানাল তকমা চলে গেছে। তাই এইদল দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে কোন দলকে সাপোর্ট করলো, তা নিয়ে কিছু আসে যায় না। তিনি বলেন, তৃণমূল ও আপের মধ্যে অনেক মিল আছে। আপের অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মনীষ সিসোদিয়া ও সতীন্দ্র জৈনের মতো নেতা ও মন্ত্রীরা দূর্নীতির জন্য জেল খেটেছেন। একইভাবে তৃনমুল কংগ্রেসের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরাও দূর্নীতির জন্য এখনো জেলে আছেন। বাংলায় ভোট পাওয়ার হিসাব সামনে রেখে শুভেন্দু বলেন, বিজেপি ২ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৭ হাজার ভোট পেয়েছে। এরমধ্যে কোন ছাপ্পা ভোট নেই। সব ভোট সনাতনী হিন্দু ও জনজাতিদের ভোট।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস ২ কোটি ৭৫ লক্ষ ভোট পেয়েছে। তার মধ্যে ২ কোটি ছাপ্পা ভোট, ৪০ লক্ষ মুসলিম ভোট ও বাকি ৩৫ লক্ষ লক্ষী ভান্ডারের ভোট। এই দলটা তো মুসলিম ও লক্ষী ভান্ডারের ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আছে। তার দাবি, এখন সব হিন্দুরা এককাট্টা হয়েছেন। বাঙালি হিন্দুরাও এখন বুঝতে পেরেছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, ভাষা নিয়ে ভেদাভেদ তারই চাষ। এদিন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নাম না করে বলেন, ভাইপোর ডায়মন্ডহারবারে স্বাস্থ্য শিবিরে কি হচ্ছে সবাই দেখছেন। সেখানে দাঁতের ডাক্তার বুক পরীক্ষা করছে।