রহস্যময় ভাবে কারখানা চত্বরে এক ঠিকা শ্রমিক দুর্ঘটনার কবলে, চাঞ্চল্য
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, জামুড়িয়া : রহস্যময় ভাবে কারখানা চত্বরে এক ঠিকা শ্রমিকের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার বিষয়কে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো জামুড়িয়ার ইকড়া শিল্প তালুক এলাকায়। জানা গেছে জামুড়িয়ার মান স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড কারখানায় ঘটে এই দুর্ঘটনা। আহত শ্রমিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক রয়েছে বলেই জানা গেছে।
তবে এই কারখানায় দুর্ঘটনার ঘটনায় প্রথম নয় এর আগেও দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় এক ঠিকা শ্রমিক। সে সময় গাড়ির চাকা ব্লাস্ট করে মৃত্যু হয় তার, তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে মুহূর্তেই ওই ব্যক্তিকে কোন অজানা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেই বেমালুম ঘটনাটিকে ধামাচাপা দেওয়া হয় যদিও পরবর্তীতে প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। এবারও সেই ঠিকা শ্রমিকের দুর্ঘটনার কবলে পড়া নিয়েও অনেকটাই রহস্য দানা বেঁধেছে। জানা গেছে জামুড়িয়া শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত মান স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড কারখানায় বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘটে এই দুর্ঘটনায়, যেখানে সেই শ্রমিক গুরুতর আহত হয়। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারা যায় কারখানার উপর থেকে একটি ভারী লোহার বস্তু পড়ে সোনু সিং নামের ওই শ্রমিক গুরুতরভাবে আহত হন।
বেশ কয়েকজন দাবি করেছেন যে, সেসময় ওই ঠিকা শ্রমিক সোনু কারখানায় ঘুমাচ্ছিলেন। আর তার মধ্যেই এক ভারী লোহার বস্তুটি তার উপর পড়ে যাওয়ায় তিনি সাংঘাতিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এরপর তড়িঘড়ি করে তাকে চিকিৎসার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নয়, তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে, তবে তার অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক বলে জানা গেছে। কারখানার আধিকারিক আশুতোষ চৌধুরী জানিয়েছেন তার মাথার আঘাত গুরুতর রয়েছে ৪৮ ঘন্টা পরই তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা যাবে। তবে প্রশ্ন একটা রয়েছে অন্য সকল শ্রমিকদের মধ্যে যে হঠাৎ করেই এত নজরদারি থাকা কারখানার মধ্যেই ঘুমিয়ে থাকা ব্যক্তির উপর কিভাবে লোহার ভারী বস্তু পরল কি করেই বা সে আক্রান্ত হল। তা নিয়ে সোনুর সহকর্মীরাও অনেকটা আশ্চর্য হয়েছেন।
অনেক সময় তো আবার বিষয়টা জানেনই না যে কারখানায় কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা। যদিও সত্যিই দুর্ঘটনা ঘটা না ঘটা নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যাথার বিষয় নেই অন্য শ্রমিকদের মধ্যে, কারণ শ্রমিকটা যে নিহাতি এটা ঠিকা শ্রমিক। তাই ঠিকা শ্রমিকের সম্পর্কে জানতে বা জানাতে অতটা আগ্রহীও নয় অনেকে। উল্লেখ্য এর আগেও বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন কলকারখানা সহ এই কারখানাতেও স্থানীয় এলাকার শ্রমিকদের নিয়োগের দাবিতে ও স্থায়ী শ্রমিক নিয়োগের জন্য বিক্ষোভ আন্দোলন করতে দেখা গেছে কারখানা গুলির সামনে তবে কোন অজ্ঞাত কারণে অনেক কারখানাতে স্থানীয়দের নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটা লক্ষ্য করা গেছে, যার বেশিরভাগটাই দুর্ঘটনা ঘটার পর দায়িত্ব এড়ানোর জন্য বলেই দাবি করে অনেকে। তবে এ ক্ষেত্রে কতটা সেই কথা খাটে তা অবশ্য বলবে সময়। এদিন কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন দ্রুত শ্রমিককে চিকিৎসার জন্য তারা দুর্গাপুর এর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেছেন তার চিকিৎসার জন্য তারা সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তার বাড়ির সদস্যদের সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করে তাকে দ্রুত সুস্থ করার জন্য তৎপর রয়েছেন বলেই দাবি করেছেন। এখন দেখার খুব কত দ্রুত ওই ঠিকা শ্রমিক তার স্বাভাবিক জীবন ছন্দে ফেরে।