সালানপুরে ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফের নেতৃত্বে তদন্ত, আর্থিক ক্ষতি পূরণ পিএইচইর, চাকরির দাবি
বেঙ্গল মিরর, সালানপুর ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও কাজল মিত্র: * আসানসোলের সালানপুরের ডামালিয়া এলাকায় পাইপলাইন বসানোর সময় মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু ও জখম হওয়ায় ঘটনায় তদন্ত শুরু করলো রাজ্যের পিএইচই বা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। বুধবার সকালে পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ অনিমেষ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে কলকাতা থেকে একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা গোটা এলাকাটি ভালো করে পরিদর্শন করেন। আশপাশের লোকদের সঙ্গে কথা জানার চেষ্টা করেন মঙ্গলবার ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিলো। তারা একইসাথে কথা বলেন পাইপলাইন বসানোর বরাত পাওয়া বেসরকারি ঠিকা এজেন্সির কর্মী ও আসানসোলের পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ার সঙ্গে।




এদিকে, এদিন সকালে আসানসোল জেলা মঙ্গলবারের ঘটনায় মৃত তিন যুবক ঝাড়খণ্ডের রাজ্জাক শেখ, রোহিত শেখ ও নীতিশ পাসোয়ানের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে পুলিশের তরফে তিনজনের মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তিনজনের মৃতদেহর ময়নাতদন্তের সময় আসানসোল জেলা হাসপাতালে ছিলেন পিএইচইর এ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি তিনজনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে পিএইচইর তরফে আর্থিক ক্ষতি পূরণ হিসেবে তিনজনের পরিবারের হাতে ৪ লক্ষ টাকা করে চেক দেওয়া হয়েছে। একইসাথে এই ঘটনায় আহত এক যুবকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতি পূরণ হিসেবে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
এদিন সকালে মৃত নীতিশ পাসোয়ানের বাবা রামচন্দ্র পাসোয়ান ও পরিবারের সদস্য এবং সালানপুর ব্লকের দলের নেতা ও কর্মীদেরকে নিয়ে এলাকায় আসেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। তিনি সবকিছু খতিয়ে দেখার পরে রীতিমতো উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এখানে কোন নিরাপত্তা নেই। এই এলাকা ধস কবলিত। এখানে জল প্রকল্প করার আগে পিএইচইর উচিত ছিলো। সবকিছু পরীক্ষা করে দেখা। মনে হচ্ছে কিছুই করা হয় নি। আমরা এর তদন্ত চাইছি। তিনি আরো বলেন, আমরা মৃতদেরকে পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতি পূরণ দেওয়ার দাবি করেছি। শুনেছি চার লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু আর্থিক ক্ষতি পূরণ দিলে একজন করে চাকরি দিতে হবে।
আমি ইতিমধ্যেই একাধিক দাবি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নাবলম ও পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফকে মেল করেছি। পরে এলাকা থেকে বংশগোপাল চৌধুরী আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়।
জানা গেছে, কুলটির বাসিন্দা মৃত নীতিশ পাসোয়ানের মাত্র দেড় বছর আগে বিয়ে হয়েছে। ৬ মাসের একটা সন্তান আছে। নীতিশের মেসোমশাই দামোদর পাসোয়ান বলেন, আর্থিক ক্ষতি পূরণ হিসেবে যাই দেওয়া হোক না, তাতে কি হবে? আমরা চাই পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হোক। একই দাবি করা হয়েছে বাকি দুজনের পরিবারের তরফে।
এদিকে, এলাকা পরিদর্শনের পরে পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ বলেন, ঠিক কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পিএইচই সবকিছু গুরুত্ব সহকারে দেখছে। তিনি আরো বলেন, মৃত তিনজন ও আহত একজনের পরিবারের পাশে পিএইচই আছে।
অন্যদিকে, আসানসোলের মহকুমাশাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলেন, মঙ্গলবার ঘটনার পরেই আমি এলাকায় গেছিলাম। পিএইচইর তরফে গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। তারা রিপোর্ট দিলে জেলা প্রশাসনের গোটা বিষয়টি দেখবে। আশা করা হচ্ছে দু/তিনদিনের মধ্যে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। মৃত ও আহতদেরকে আর্থিক ক্ষতি পূরণ দেওয়া হয়েছে।