ASANSOL

ইসিএলের  ভূগর্ভস্থ কয়লা খনির এবার পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করবে অত্যন্ত উন্নতমানের সিসিটিভি

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য।আসানসোল : এবার ই সি এল এর ভূগর্ভস্থ কয়লা খনির অন্যতম পাহারাদার হতে চলেছে উন্নতমানের সিসিটিভি ।প্রতিটি খনির  পিটে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বা অবাঞ্ছিত কোন ব্যক্তি যদি ঢুকে পড়েন বা কোন জিনিস চুরি করে নিয়ে যায় কেউ তা বন্ধ করতে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। এক একটি খনিতে  ৫ , ৬টি বা তার বেশি করে পিট থাকে।  অন্ধকারেই একটি ক্যামেরা ৫০ মিটার পর্যন্ত খনির অভ্যন্তরে নজরদারি করতে পারবে। খনির ভিতরে থাকা খনি কর্মীর হেলমেট, জুতো বা হাতে গ্লাভস পড়া আছে কিনা সেই দিক থেকেও নিরাপত্তার বিষয়গুলি দেখা হবে। খনির ভেতরে যে ছোট ছোট ট্রলি করে কয়লা নিয়ে যাওয়া হয় সেটাও ঠিকঠাক যাচ্ছে কিনা তাও দেখা যাবে।


ই সি এলের জেনারেল ম্যানেজার(সেফটি)  অশোক কুমার জানান এখানে ৪৮ টি ভূগর্ভস্থ কয়লা খনি আছে ।সেখানকার কর্মীদের নিরাপত্তা, বা খনির ভিতরে কোন ধরনের  কিছু হলে   যাবতীয় ছবি এইসব ক্যামেরা থেকে পাওয়া যাবে। এইসব সিসি ক্যামেরাগুলি মনিটরিং করার জন্য খনির ওপরে আলাদা করে ব্যবস্থা করা হবে নির্দিষ্ট কোলিয়ারির আধিকারিকের ঘরে। এর মনিটরিং এর কাজও ইসিএলের অভিজ্ঞ কর্মীরা করবেন । এক একটি ক্যামেরা ৫০ মিটার পর্যন্ত ছবি সংগ্রহ করবে ।এতে কর্মীরাও সুরক্ষিত থাকবে এবং উৎপাদনও ভালো হবে। এজন্য টেন্ডার হয়ে গেছে। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হবে ।তেমন কিছু খনির ভিতরে ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশ্লিষ্ট উপরমহলের কর্তাদের জানানো হবে এবং সেই ঘটনা রোখা যাবে বলে জানান অশোক কুমার । তিনি বলেন খনির ভিতরে অন্ধকার থাকলেও একাধিক জায়গায় আলো লাগানো থাকে। তাছাড়াও এই ক্যামেরাগুলি অত্যন্ত উন্নতমানের যা ছবি সংগ্রহ করতে পারবে।


শুধু তাই নয়  সূত্র থেকে জানা গেছে ইতিমধ্যেই অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মত  বর্তমানে তাদের বিভিন্ন সাইডিং সহ খনির উপরে বিভিন্ন জায়গায় যে ক্যামেরা আছে তার সাথে এই ভূগর্ভস্থ ক্যামেরাগুলি বসানোর পর সবমিলিয়ে ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড এন্ড কন্ট্রোলিং সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। ই সিএলের সদর দপ্তরে বসেই সমস্ত তথ্য এখান থেকে জানা যাবে।  দ্বিতীয় পর্যায় খোলা মুখ খনিতে উন্নত মানের ক্যামেরাও ব্যবহার করা শুরু হবে। চাষনালা, মহাবীর, নিউকেন্দা থেকে রাজমহল একের পর এক খনি দুর্ঘটনা যে ঘটেছে এই ধরনের ক্যামেরা থাকলে হয়তো তা আগাম জানতে পারা যেত।


কয়লা মন্ত্রকের  অন্যতম উপদেষ্টা এবং কোল ইন্ডিয়ার প্রাক্তন ডাইরেক্টর বি ভিরা রেড্ডি এই সময়কে জানান ইসিএলের সমস্ত ভূগর্ভস্থ কয়লা খনিতেই প্রত্যেকটি পিটে প্রয়োজনমতো অত্যন্ত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সিসি টিভির ক্যামেরা বসতে চলেছে । খনির ভিতরে সামান্য আলো এবং কিছুটা অন্ধকার থাকলেও এই সিসিটিভি গুলি এতটাই উন্নতমানের যাতে ছবি তুলে তা বুঝতে কোন অসুবিধা হবে না। দেশের মধ্যে এই ধরনের ক্যামেরা ভূগর্ভস্থ খনিতে প্রথম লাগানো হচ্ছে। তারপরেই অন্যান্য জায়গায় এই কাজ হবে।


কিন্তু কেন এটা করা হচ্ছে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কয়লা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান ইসিএলে গভীর ভূগর্ভস্থ খনিগুলি উন্নত মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে সেখান থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে ধীরে ধীরে কয়লা তোলার পরিমাণ বাড়বে  । এখানকার কোকিং কোল উন্নতমানের যা দেশের ইস্পাত কারখানাগুলির চাহিদা মেটাতে বড় ভূমিকা পালন করে ।অর্থাৎ হাইওয়াল পদ্ধতি এবং মেকানাইজড মাইনসের সংখ্যাও  বাড়বে । এইসব খনির ভেতরে থাকবে অত্যন্ত দামি যন্ত্রপাতি ।

কর্মীদের সার্বিক নিরাপত্তার সাথে সেগুলি যাতে কোনভাবেই চুরি বা নষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে এই সিসিটিভি গুলো কাজ করবে। এজন্য থ্রিডি সিকিউরিটি বা তিন ধরনের নিরাপত্তার বিষয়টি থাকছে। প্রথমত খনির উপরে আধিকারিক বা কর্মী আছেন। তারপর দ্বিতীয় পর্যায়ে সিআইএসএফ এবং ইসিএল এর নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী এবং একেবারেই ভেতরের দিকে তৃতীয় পর্যায়ে অত্যাধুনিক সিসিটিভি। ই সি এল সূত্র থেকেই জানা গেছে বর্তমানে ই সি এল এর বিভিন্ন কোলিয়ারি সাইডিং  বা বিভিন্ন দপ্তরে খনির উপরে মোট ১৬৪৩ টি সিসিটিভি বর্তমানে লাগানো আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *