নিষিদ্ধ পল্লীতে আগ্নেয়াস্ত্র ও দুটি দামী গাড়ি সহ গ্রেফতার ৭ যুবক
বেঙ্গল মিরর, কুলটি ও আসানসোল, কাজল মিত্র, রাজা বন্দোপাধ্যায়, কুলটি ও দেব ভট্টাচার্যঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের লছিপুর নিষিদ্ধ পল্লীতে আবারও ভিন রাজ্যের দূষ্কৃতি যোগের খোঁজ পাওয়া গেলো। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুলটি থানা ও নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ একযোগে নিষিদ্ধ পল্লীতে হানা দিয়ে সাত যুবককে গ্রেফতার করলো। ধৃতদের মধ্যে একজন বিহারের জামুই জেলার বাসিন্দা। বাকি ৬ জন ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ ও সিংভুম জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের নাম হলো (১) ভিকি কুমার ওরফে সিং, (২) রাহুল কুমার সাহু, (৩) হেমন্ত কুমার ওরফে সুধাংশু, (৪) ভিকি বনশল, (৫) অর্চিত কেশরি, (৬) আকাশ জিন্দাল ও (৭) রোশন সিং। তাদের কাছ থেকে একটি রাইফেল, একটি ৯ এমএম পিস্তল, ৬ রাউন্ড কার্তুজ ও নগদ টাকা ৩৫ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ধৃতদের কাছ থেকে দুটি কালো রঙের ঝাড়খণ্ড নম্বরের দামী চারচাকা গাড়ি পাওয়া গেছে। এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে সাতটি মোবাইল ফোনও।
শনিবার ধৃতদেরকে আসানসোল আদালতে পেশ করা হয় নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশের তরফে। ধৃত সাতজনের মধ্যে চারজনকে পুলিশের তরফে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিলো। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ভিকি কুমার ওরফে সিং, রাহুল কুমার সাহু, ভিকি বনশল ও অর্চিত কেশরিকে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পরে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির ডিউটি অফিসার গোপন সূত্রে থেকে খবর পায় যে, দুটি কালো রঙের নম্বরের দামী গাড়িতে করে ৬/৭ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি লছিপুরে নিষিদ্ধ পল্লীতে এসেছে। তারা রাইফেল ও পিস্তল নিয়ে লছিপুর এলাকায় সন্দেহজনকভাবে চলাচল করছে। এর ফলে লছিপুর এলাকার স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
এরপর ডিউটি অফিসার বিষয়টি নিয়ামতপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ ও কুলটি থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জকে অবহিত করেন। তাদের নির্দেশ মতো রাতে পুলিশের একটি দল লছিপুর গেট পৌঁছায়। তারা লছিপুর এবং সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি করে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানার চেষ্টা করে গাড়ি সহ ঐ যুবকেরা কোথায় গেছে। এরপর পুলিশ রাত বারোটা নাগাদ দেখতে পায় দুটি কালো রঙের চারচাকা গাড়িকে পুরানো জিটি ধরে নিয়ামতপুরের দিকে এগিয়ে চলেছে। পুলিশ দুটি গাড়ির চালককে গাড়ি থামানোর জন্য বলে। কিন্তু তারা পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের পিছু ধাওয়া করে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ জিটি রোডের কিছুক্ষণ ধাওয়া করার পরে পুলিশ লছিপুরের দিশা ৩ নং গেটের সামনের রাস্তায় দুটি গাড়িকে আটকায়। তল্লাশির সময় একটি গাড়ির ভেতর থেকে চালক সহ চার জন ও অন্য একটি গাড়ির ভেতর থেকে চালক সহ তিনজনকে পাওয়া যায়। একইসাথে গাড়ি দুটি থেকে একটি রাইফেল, একটি ৯ এমএম পিস্তল ও ৬ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। রাতেই ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এই প্রসঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, ধৃতরা জেরায় কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। কেন তারা আগ্নেয়াস্ত্র সহ নিষিদ্ধ পল্লীতে এসেছিলো, তা জানা যায় নি। তাই সাতজনের মধ্যে চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তারা যেখানে থাকে সেই এলাকার থানায় যোগাযোগ করা হয়েছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাদের পুরনো কোন অপরাধের যোগ আছে কিনা।