বার্নপুরে বেআইনী দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে ধুন্ধুমার, ঠিকা কর্মীর হাতে প্রহৃত আধিকারিক
বেঙ্গল মিরর, বার্নপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ আসানসোলের ইস্পাত নগরী বার্নপুরের সিনেমা হল এলাকার অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সেল আইএসপি বা ইস্কো কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উপেন্দ্র কুমার সিং। ইস্কো কারখানার এক ঠিকা কর্মী ও তার বাবার হাতে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উপেন্দ্র কুমার সিং আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। বুধবারের এই ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় এলাকায় থাকা সিআইএসএফ ও অন্যান্য আধিকারিকরা তাকে কোনমতে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। খবর দেওয়া হয় হিরাপুর থানায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পৌঁছায়।
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/05/img-20240520-wa01481045365085360283686-500x428.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/09/img-20240909-wa00806721733580827251668.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/12/fb_img_17339279922403722767543487143310-476x500.jpg)
![](https://bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2025/02/img-20250212-wa00185984727343498922922-500x256.jpg)
এই প্রসঙ্গে ইস্কোর এক আধিকারিক বলেন, কারখানার তরফে বার্নপুর সিনেমা হলের দেওয়াল ও ঐ এলাকায় দখলে থাকা আবাসন গুলিতে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে আগে থেকেই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেও তা জানানো হয়েছিল। সেই মতো বুধবার এলাকায় যান কারখানার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, জেনারেল ম্যানেজার সহ একাধিক আধিকারিক ও সিআইএসএফ। একটি খালি আবাসন যখন জেসিবির সাহায্যে ভাঙ্গা হচ্ছিল তখন আচমকা স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ ঠাকুর নামে ইস্কোর এক ঠিকা কর্মী কারখানার ইডি বা এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। তার উপরে চড়াও হয়ে আক্রমণ করা হয়। পেছন থেকে ঐ ঠিকা কর্মীর বাবা তেড়ে আসেন। তাতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যাতে ইডি প্রায় পড়ে যান। তার চোখ লাগানো চশমা নিচে পড়ে ভেঙে যায় ।
রীতিমতো পরিকল্পনা করে তাকে হেনস্থা করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে ইস্কোর অন্যান্য আধিকারিক ও সিআইএসএফের জওয়ানরা তাকে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। এরপরে গোটা ঘটনাটি জানিয়ে হিরাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেইমতো পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু ততক্ষণে বিকাশ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ইস্কোর ঐ আধিকারিকের আরো অভিযোগ, যখনই এই এলাকায় ইস্কো কারখানার কোনও কোয়ার্টার খালি হয়ে যায়, বিকাশ তা নিজের দখলে নিয়ে নেয়। তারপর সে তা অন্য কাউকে ভাড়া দেয়। তিনি বলেন, বিকাশের খোঁজ চলছে।
এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর অশোক রুদ্র বলেন, ইস্কো কর্তৃপক্ষ আমাকে আগে এই উচ্ছেদের কথা জানিয়েছে। তারা নোটিশও দিয়েছে । এই বিষয়ে আমার কোন ভূমিকা নেই বা কিছু করারও নেই। কারণ এই জমি এবং কোয়ার্টার ইস্কোর। কিন্তু আজ দুর্ভাগ্যজনক একটা ঘটনা ঘটলো। কারখানার একজন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরকে একজন বিজেপি সমর্থকের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে। ইস্কোর কারখানা কতৃপক্ষের উচিত ছিল আরো ভালো ব্যবস্থা করে ঐ এলাকায় দখলদার উচ্ছেদে যাওয়া। এই বিষয়ে বিকাশ ঠাকুরের বাবা বলেন, আমি ইস্কো কারখানায় কাজ করি না। আমি যে কোয়ার্টারে থাকি তা আমাকে বরাদ্দও করা হয়নি। তবে যদি আমার পরিবারকে হঠাৎ করে কোয়ার্টারটি খালি করতে বলা হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাবো ?
তিনি বলেন, আমি আরেকটি কোয়ার্টারের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও তা পাননি। বিকাশ ঠাকুরের বাবা পাল্টা অভিযোগ করেন যে, দখল উচ্ছেদ করতে আসা লোকজনেরা আমাকে মারধর করেছে। তিনি বলেন, আমার কিডনির রোগ ও হৃদরোগের সমস্যা আছে কিন্তু এদিন যেভাবে লোকদের সাথে আচরণ করা হয়েছে তা মোটেও মানবিক নয়। তিনি বলেন, আমি কোয়ার্টারটি খালি করতে রাজি আছি। তবে তার জন্য আমাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত।
এদিকে, হিরাপুর থানার পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু করা হয়েছে।