পানাগড় কান্ড : ধৃত বাবলু যাদবকে পুলিশ রিমান্ড ” ঘটনার পরে ভয়ে পালিয়ে ছিলাম, অভিযোগ মিথ্যে “
বেঙ্গল মিরর দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ পানাগড় কান্ডে মুল অভিযুক্ত সাদা এসইউভি গাড়ির মালিক ব্যবসায়ী বাবলু যাদবকে শুক্রবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। হুগলি জেলার চন্দননগরের বাসিন্দা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কর্ণধার পেশায় নৃত্য শিল্পী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ঘটনার পরে রবিবার রাত থেকে পলাতক ছিলো সাদা এসইউভি গাড়ির মালিক তথা চালক পানাগড়ের বাসিন্দা বাবলু যাদব। চারদিন পরে তাকে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের অন্ডাল থেকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকরা গ্রেফতার করেন।




ছাঁট লোহার ব্যবসায়ী ধৃত বাবলু যাদবকে শুক্রবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে সাত দিনের পুলিশ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয় কাঁকসা থানার পুলিশের তরফে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তার জামিন নাকচ করে দুদিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
এদিন আদালতে ঢোকানোর সময় বাবলু যাদব সাংবাদিকদেরা তার কাছ থেকে রবিবারের ঘটনার পরে পালিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চান। তার উত্তরে বাবলু বলে, ঘটনার পরে আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম। তাই পালিয়ে যাই। সে আরো বলে, আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যে ( ঝুটা হ্যায়)।
প্রসঙ্গতঃ, গত রবিবার রাতে চন্দননগরের বাসিন্দা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের কর্ণধার তরুনী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায় বাড়ি থেকে নিজের চারচাকা গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন বিহারের গয়ার উদ্দেশ্যে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। সেদিন রাতে প্রায় ১২ টার পরে পানাগড়ের কাছে ১৯ নং জাতীয় সড়কের পাশে একটি পেট্রোল পাম্পে সুতন্দ্রা তার গাড়িতে জ্বালানি ভরেন। এরপরে তাদের গাড়িকে পেছন থেকে ধাওয়া করতে শুরু করে একটি এসইউভি গাড়ি। সেই গাড়িতে থাকা আরোহীরা সুতন্দ্রাকে ইভটিজিং করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। সাদা গাড়িটা সুতন্দ্রাদের গাড়িকে ধাক্কা মারে। তারপর ঐ গাড়িটি পানাগড়ে পুরনো জিটি রোডে দ্রুত গতিতে ঢুকে যায়।
পুলিশের দাবি ছিলো, সেই সময় পাওয়া সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে বাবলু যাদব এবং তার সঙ্গে আরো চারজন যে গাড়িতে ছিল সেই গাড়িটিকে ধাওয়া করছে সুতন্দ্রাদের গাড়ি। সুতন্দ্রার গাড়িতে চালক সহ মোট ৫ জন ছিলেন । রাইস মিল রোডে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সুতন্দ্রার গাড়ি উল্টে যায়। তাতেই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের । সাদা এসইউভি গাড়ি ফেলে পালায় বাবলু যাদব ও তার সঙ্গে থাকা যুবকেররা। এই ঘটনার পরে রাজ্য জুড়ে রাতে জাতীয় সড়কে নারী সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায়। ঘটনার প্রায় চারদিন পরে বৃহস্পতিবার আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকরা বাবলু যাদবকে দুর্গাপুরের অন্ডাল থেকে গ্রেফতার করে।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পুর্ব) অভিষেক গুপ্তা বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছিলেন , বাবলু যাদবকে পুলিশ রিমান্ডে নেওয়া হবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তারপর তাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ বা রিকনস্ট্রাকশন করা হবে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি করা হচ্ছে।