DURGAPUR

বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাঞ্চল্য, হস্টেলের রুম থেকে নার্সিং পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার

বেঙ্গল মিরর সার্থক কুমার দে ও  রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হস্টেলের রুম থেকে এক নার্সিং পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হলো। ঐ রুমের সিলিং ফ্যানে একটা ওড়না লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। শুক্রবার দুপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের মলানদিঘীর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে । মৃত নার্সিং পড়ুয়ার নাম সুপ্রিয়া কোটাল (২৩)। সে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বরের উপর পাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সুপ্রিয়া এই হাসপাতালের দ্বিতীয় বর্ষের নার্সিং পড়ুয়া ছিল।

ফাইল ফোটো


বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ নার্সিং হস্টেলের কয়েকজন পড়ুয়া ওয়ার্ডেনকে জানায় যে, সুপ্রিয়া কোটালের রুমের দরজা বন্ধ রয়েছে। দরজা খুলছে না। ওয়ার্ডেন কলেজ কতৃপক্ষকে গোটা বিষয়টি জানান। সঙ্গে সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও ওয়ার্ডেন হোস্টেলে আসেন। এরপর ঐ রুমের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তারা দেখতে পান সুপ্রিয়ার অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছে বিছানায়। আর বিছানার উপরে সিলিং ফ্যানে লাগানো রয়েছে একটা ওড়না। দ্রুততার সঙ্গে ঐ নার্সিং পড়ুয়াকে উদ্ধার করে ঐ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপর হাসপাতালের তরফে খবর দেওয়া হয় কাঁকসা থানার মলানদিঘী ফাঁড়ির পুলিশকে। সেই খবর পেয়ে পুলিশ আসে। হাসপাতালের তরফে একইসঙ্গে সুপ্রিয়ার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। তারা ছুটে আসেন।


সুপ্রিয়ার মা মহুয়া কোটাল বলেন, এদিন দুপুর সাড়ে বারোটার সময় হাসপাতাল থেকে আমাদেরকে খবর দেওয়া হয়। বলা হয় সুপ্রিয়া আইসিইউতে ভর্তি আছে। এসে দেখলাম মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। বুঝতে পারছি না হঠাৎ করে কি হলো।
সুপ্রিয়ার আত্মীয় পাপাই রক্ষিত বলেন, সুপ্রিয়ার কিছু একটা হয়েছে শুনে আমরা এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসে। এসে দেখি মৃতদেহ। জানতে পারি সে মারা গেছে। তিনি আরো বলেন,  সুপ্রিয়া শুধু বলতো আমাদের এতগুলো মেয়ের মধ্যে ৫০ জন পাস করেছে। দু’জন ফেল করেছে। কি কারণে ওর মৃত্যু হয়েছে আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। শুনতে পাচ্ছি, হস্টেলের রুমে সিলিং ফ্যানে ওড়না লাগালো ছিলো। সেই ফ্যানের নিচে বিছানায় পাওয়া গেছে সুপ্রিয়াকে ।


বেসরকারি এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অতিরিক্ত সুপার ডাঃ রাজশ্রী গুপ্তা বলেন, এদিন সাড়ে বারোটা থেকে একটার মধ্যে ঐ হস্টেলের কয়েকজন পড়ুয়া ওয়ার্ডেন খবর দেয় যে সুপ্রিয়া কোটাল বলে এক পড়ুয়ার রুম সকাল থেকে ভেতর থেকে বন্ধ রয়েছে। ফোন করলেও, সে তা তুলছে না । ওয়ার্ডেন ছাত্রীদের কাছ থেকে সেই খবর পেয়ে সেখানে যান। তিনি দরজা ভেঙে দেখে সুপ্রিয়াকে অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে ঐ পড়ুয়াকে উদ্ধার করে এই হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

সেখানেই চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।
এদিকে, এই প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, শনিবার ঐ নার্সিং পড়ুয়ার মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হবে। তার রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, রুমের মধ্যে বিছানায় তাকে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে রুমে সিলিং ফ্যানে একটা ওড়না লাগানো ছিলো। আপাততঃ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *