পানাগড় কান্ডে পুনর্নির্মাণ : সুতন্দ্রার গাড়ির সঙ্গে ঠিক কি হয়েছিলো, পুলিশকে দেখালো ধৃত বাবলু যাদব
বেঙ্গল মিরর দুর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বর্তমান দুদিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে পানাগড়ের কাবাড়িপট্টির ব্যবসায়ী সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু কান্ডের প্রধান অভিযুক্ত ধৃত বাবলু যাদব। ঠিক ৬ দিনের মাথায় প্রত্যাশা মতোই আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কাঁকসা থানার পুলিশ আধিকারিকরা বাবলু যাদবকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার মধ্যরাতে ঘটা ঘরের পুননির্মাণ বা রিকনস্ট্রাকশন করলেন। এদিন ধৃত বাবলু যাদবকে নিয়ে পুলিশের দুটি গাড়ি কাঁকসা থানা থেকে বেরিয়ে গলসির ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের থেকে রাইস মিল রোড পর্যন্ত আসে। রবিবার গলসিতে পেট্রোল পাম্পে সুতন্দ্রাদের গাড়িতে তেল ভরানোর পর থেকে পানাগড় রাইস মিল রোড পর্যন্ত গোটা রাস্তায় ঠিক কি কি হয়েছিল, তা পুলিশ আধিকারিকরা বাবলুর কাছ থেকে জানার চেষ্টা করেন। বাবলুও পুলিশ আধিকারিকদেরকে বলেন, প্রায় ২০ কিলোমিটার দুরত্বের রাস্তায় সেই রাতে, তার গাড়ি ও সুতন্দ্রাদের গাড়ির মধ্যে ঠিক কি হয়েছিলো। বাবলুর এই বয়ান ও তার দেখানো জায়গার পুরোটাই পুলিশের তরফে ভিডিওগ্রাফি করা হয়। এদিনের এই পুননির্মাণ ঘটনা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান রাস্তার দুই ধারে।




স্বাভাবিক ভাবেই বাবলু যাদব এই দুর্ঘটনাকে ইভিটিজিং বা অন্য কিছুর জন্য নয় বলে দাবি করে। দুটি গাড়ির ওভারটেক ও রেষারেষি থেকেই ঘটে যায় এই দুর্ঘটনা ও তার জেরেই সুতন্দ্রার গাড়ির উলটে যাওয়া। মৃত্যু হয় চালকের পাশের আসনে বসা চন্দননগরের বাসিন্দা পেশায় নৃত্য শিল্পী ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের কর্ণধার বছর ২৭ র সুতন্দ্রার । কিন্তু অন্ধকারে রয়েছে বেশি কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া। কেন মাঝরাতে শুরু হল গতির রেষারেষি দুই অচেনা গাড়ির মধ্যে? দুটি গাড়ি চালক ও গাড়ির যাত্রীদের মধ্যে যখন কেউ কারোর পরিচিত ছিলোনা।
ক্রিমিনাল বা অপরাধীদের সাইকোলজি নিয়ে নিয়ে যারা গবেষণা করেন, এমন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমনি এমনি কোন অচেনা দুই গাড়ির মধ্যে গতির রেষারেষি হওয়া সম্ভব নয়। যদি না তাদের মধ্যে কোন কিছু ঘটনা আগে থেকে না হয়ে থাকে। তবে কেন হল সুতন্দ্রা ও বাবলদের দুটি গাড়ির মধ্যে গতির রেষারেষি ? এর কারনটাই বা কি ? কেউ বা কারা কি সেই বিষয়টি কোন কারণে বা কাউকে বাঁচাতে চেপে যেতে চাইছে?
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, বাবলু যাদব গতির রেষারেষিকেই দুর্ঘটনার কারন বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনার পুননির্মাণের সময় খুঁটিনাটি সমস্ত কিছুই নজরে রাখে।
এখনো বাবলুর কোন সঙ্গীই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। যারা সেদিন রাতে তার সঙ্গে গাড়িতে ছিলো। পুলিশ সুত্রে আরো জানা গেছে, বাকিদেরকেও গ্রেফতার করে জেরা করা হবে। পুলিশ জানতে চাইবে সেই রাতের ঘটনার যে বিবরণ বাবলু যাদব দিয়েছে তার সাথে বাকিদের কথার মধ্যে কতটা মিল আছে।
প্রসঙ্গতঃ, ইতিমধ্যেই পুলিশ সুতন্দ্রার সঙ্গে তার গাড়িতে থাকা চালক সহ অন্য যাত্রীদের বয়ান নিয়েছে। তারমধ্যে একজন দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনিচ্ছাকৃত খুন সহ বিএনএসের একাধিক ধারায় মামলা করেছে। ঘটনার চারদিন পরে বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডাল থেকে পুলিশ বাবলু যাদবকে গ্রেফতার করে।