RANIGANJ-JAMURIA

জল মেশানো অভিযোগ পেয়ে সতর্ক করা হয়েছে তারা খনি কর্তৃপক্ষকে, পুরসভা জল দূষণ নিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে করেছে অভিযোগ 

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। জামুরিয়ায় পুরসভার দরবারডাঙ্গা জল প্রকল্প থেকে সেখানকার পাঁচটি ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন জায়গার মানুষদের কাছে  যে জল গত কয়েকদিন পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তা স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিশ্রুত নয় বলেই বাসিন্দা থেকে রাজনৈতিক নেতাদের অভিযোগ। সেই জল খেয়ে অনেকেই পেটের অসুখ সহ নানান শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন । কেন এই অবস্থা তা নিয়ে ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান পুরসভার জলের দায়িত্বে থাকা অন্যতম প্রধান ইঞ্জিনিয়ার অচিন্ত্য বারুই এবং জামুরিয়ার বোরো  চেয়ারম্যান শেখ সান্দার। অচিন্ত্য বাবু বলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই যারা ওই নদীতে কয়লা খনির জমে থাকা জল ফেলছে তাদের ডেকে শুনানি করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে।  শেখ সান্দার বলেন দরবারডাঙ্গা থেকে জামুরিয়া বাজার, শিবপুর সহ এক, দুই, চার ,পাঁচ ,সাত ওয়ার্ড এলাকায় জল যায়। তিনি বলেন আমরা ইতিমধ্যেই ঐ বিষয়টি উচ্চপদস্থ জায়গায় জানিয়েছি এবং সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে নাগরিকরাই প্রধান বিষয় যাতে তারা ভালো থাকতে পারেন।


কেন এই সমস্যা তৈরি হয়েছে? এই নিয়ে জামুরিয়ার বাসিন্দা এবং সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত বলেন “তারা’ খোলা মুখ কয়লা খনির একটি বড় অংশ জলে ডুবে আছে। সেই জল সোজা ওরা জামুরিয়ার পুরসভার জলপ্রকল্প দরবার ডাঙ্গার থেকে কাছেই ফেলছে । এর ফলে দরবারডাঙ্গা পুরসভার যে জল নদী থেকে উঠছে , তার  বেশিরভাগটাই ওই পরিত্যক্ত কয়লা খনির জল যা পরিশ্রুত হচ্ছে না। সেই জল খেয়েই এখানে পেটের অসুখ সহ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। আমাদের দলের পক্ষ থেকে সোমবারই বি ডি ওর কাছে অভিযোগ আকারে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এই বিষয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে আমরাও আন্দোলনে নামবো । নদীতে কেউ কিছু মেশালে বা ফেলে দিলে সেটা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদেরই দেখার কথা।
পুরসভার জল বিভাগের আসানসোলের অন্যতম প্রধান ইঞ্জিনিয়ার অচিন্ত্য বাবু বলেন গতবছর এরকম একটা সমস্যা হওয়ায় আমরা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কে চিঠি দিয়েছিলাম। এবারেও বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে। শুনেছি তাদের ডেকে শুনানিও হয়েছে ।

কিন্তু  তারা কি করছেন সেটা অবশ্য আমাদের জানানো হয়নি ।  জেলা বণিক সভার অন্যতম নেতা এবং সেখানকার একমাত্র বেসরকারি জামুরিয়া জল সরবরাহ সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকা অজয় খৈতান বলেন জামুরিয়া বাজার এলাকায় তাদের ভরসা এই বেসরকারি জল প্রকল্প। প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ লিটার জল এখানে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০বাড়িতে গত কয়েক দশক ধরে  পৌঁছে দেয়া হয় এই বেসরকারি জল প্রকল্প থেকে। এছাড়াও মন্দির, মসজিদ স্কুল এসব জায়গার সামনে আলাদা করে জলের কল লাগানো আছে যা এখান থেকে সরবরাহ করা হয়। পুরসভার এখন যে জল আসছে তা স্বচ্ছ নয় । গরমেও এটাই আমাদের ভরসা।


রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্য এই সময়কে জানিয়েছেন ওই খনির  জল একটি নালার মতো করে অজয় নদীতে মেলানো হয়েছেপুরসভার কাছ থেকে । সুদীপ বাবু বলেন
অভিযোগ পাওয়ার পর তাদের জল পরীক্ষা করে কিছুটা খারাপ পাওয়াতে ঐ খনি কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবার কথা বলা হবে। দূষিত হওয়ার কারণে এলাকায় ডায়রিয়া বা অন্যান্য রোগের সংখ্যা বাড়ছে বলে বিরোধীরা দাবি করেছেন ।এ নিয়ে অভিযোগ করেছে বিজেপিও। তাদের স্থানীয় নেতা সন্তোষ সিং বলেন জলের মতো একটা বিষয় নিয়ে যদি সরকারিভাবে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *