Kolkata NewsWest Bengal

সিপিএমের ফেসবুক পেজে লোগোর পরিবর্তন, লালের জায়গায় নীল, শুরু তীব্র বিতর্ক

বেঙ্গল মিরর, কলকাতা, ২৩ মার্চ ২০২৫: ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) বা সিপিএমের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে হঠাৎ করা একটি পরিবর্তন সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। দলের ঐতিহ্যবাহী লাল রঙের লোগোটি সরিয়ে তার জায়গায় নীল রঙের একটি নতুন লোগো গ্রহণ করা হয়েছে, যেখানে হাতুড়ি ও কাস্তে (দলের প্রতীক) সোনালি রঙে চিত্রিত হয়েছে। এই পরিবর্তন শুধু দলের সমর্থকদের মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করেনি, বরং বিরোধী দলগুলো এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।


সিপিএম, যারা দীর্ঘদিন ধরে লাল রঙ এবং হাতুড়ি-কাস্তের প্রতীক নিয়ে শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণির কণ্ঠস্বর হওয়ার দাবি করে আসছে, তাদের এই পদক্ষেপকে অনেকে দলের মতাদর্শে পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেখানে কিছু ব্যবহারকারী এটিকে “নতুন রূপ, নতুন শুরু” বলে অভিহিত করেছেন, সেখানে দলের কট্টর সমর্থকরা এটিকে “আদর্শগত আপস” বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “লাল রঙ আমাদের বিপ্লবের প্রতীক ছিল, এটিকে নীলে বদল করা কী বার্তা দেয়?”



রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক
এই পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা কটাক্ষ করে বলেছেন, “সিপিএম এখন নীল পার্টি হতে চায়, সম্ভবত বিজেপির থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছে।” অন্যদিকে, বিজেপি এটিকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে গিয়ে বলেছে, “সিপিএমের লাল রঙ তো আগেই ম্লান হয়ে গিয়েছিল, এখন নীল রঙ তাদের বাস্তবতা প্রকাশ করছে।” কংগ্রেস এই বিষয়ে সংযত প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছে, “এটি সিপিএমের অভ্যন্তরীণ বিষয়, তবে রাজনীতিতে প্রতীকের গুরুত্ব কম নয়।”


দলের তরফে স্পষ্টীকরণের অপেক্ষা
এখনও পর্যন্ত সিপিএমের তরফে এই পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। সূত্রের খবর, দলের কিছু জ্যেষ্ঠ নেতা এই পরিবর্তন সম্পর্কে অজ্ঞাত ছিলেন এবং এটিকে সোশ্যাল মিডিয়া টিমের একক সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দলের অভ্যন্তরে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং শীঘ্রই একটি স্পষ্টীকরণ আসতে পারে বলে জানা গেছে।


এই ঘটনা যতক্ষণ না স্পষ্ট হচ্ছে, ততক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। সিপিএমের এই নতুন রঙ কি শুধুই একটি প্রতীকী পরিবর্তন, নাকি এর পিছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক কৌশল—এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *