ASANSOL

আসানসোলে ইসিএলের জমিতে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ স্থানীয়দের, ৭ দিনের সময়

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* আসানসোল পুরনিগমের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কালিপাহাড়িতে ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড বা ইসিএলের জমিতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও বেআইনি বাড়ি নির্মাণ ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, জমি খালি করার জন্য যখন এদিন বুলডোজার নিয়ে অভিযান শুরু করা হয়, তখন এলাকার বাসিন্দারা বাধা দেন। যে কারণে এদিন অভিযান না করেই ইসিএলের আধিকারিকদের ফিরে আসতে হয়। বাধা দেওয়া ব্যক্তিদের তরফে জমির কাগজ দেখানোর জন্য এদিন ইসিএলের আধিকারিকদের কাছে সাতদিনের সময় চাওয়া হয়েছে। ইসিএলের আধিকারিকরা তা মেনে নিয়ে, সময় দিয়ে এদিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রেখে ফিরে আসেন। তবে, এদিন ইসিএলের তরফে বলা হয়েছে, কাগজ দেখাতে না পারলে, আগামী সপ্তাহে বুধবারের পরে আবার উচ্ছেদ ও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার অভিযান চালানো হবে।


এদিন কালিপাহাড়ি এলাকায় সিআইএসএফের জওয়ান , ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের নিরাপত্তা কর্মী ও রাজ্য পুলিশ নিয়ে কালিপাহাড়ি কোলিয়ারির আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বুলডোজার এনে জমি খালি করার প্রক্রিয়া শুরু করার কথা ছিলো। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা এই প্রক্রিয়ার বিরোধীতা করেন ও বাধা দেন। তারা বলেন,  এখানে আমরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছি।  তাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে এখানে কৃষিকাজ করে আসছেন তারা । তারা জানেনও না যে এই জমি তাদের নয়। তারা এলাকায় উপস্থিত ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের আধিকারিকদের কাছ থেকে  ৭ দিনের সময় চান। তারা এও বলেন যে,  এই জমির নথিপত্র তারা দেখাবেন। তাদের কথা মতো ইসিএলের আধিকারিকরা তাদের ৭ দিন সময় দেন।

এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মনোজ হাজরা বলেন, এদিন ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের পক্ষ থেকে এলাকায় একটি বাড়ি ভাঙার অভিযান শুরু করা হয়েছিলো। ইসিএলের আধিকারিকরা বলেন যে, কিছু লোক অবৈধভাবে কোম্পানির জমি দখল করে বাড়ি তৈরি করেছে। তাই এদিন কোম্পানির পক্ষ থেকে সিআইএসএফ,  নিরাপত্তা রক্ষী ও পুলিশ নিয়ে একটি অভিযান শুরু করা হয়েছে যাতে জমিটি খালি করা যায়। কিন্তু এখানে বসবাসকারী লোকেরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই জমিতে চাষাবাদ করে আসছে। এই মানুষগুলো জানেনও না যে এই জমি তাদের কিনা। তারা মনে করছেন যে, এই জমি তাদের পূর্বপুরুষদের। যাই হোক, এই লোকেরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে কৃষিকাজ করে আসছেন। এখন পর্যন্ত ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি জানানো হয়নি।

কিন্তু যখন তারা এখানে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে, এখন ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড বলছে যে এই জমিটি কোম্পানির এবং জমি খালি করার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই দরিদ্র মানুষগুলো কোথায় যাবে? তাই এদিন এখানকার মানুষের ইসিএলের আধিকারিকদের কাছে সময় চেয়েছেন।  তাদের ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন যে, কাউকে তার বাড়ি থেকে গৃহহীন করা উচিত নয়।  একসাথে বসে এর সমাধান খুঁজে বার করার প্রয়োজন রয়েছে।


এদিকে কালিপাহাড়ি কোলিয়ারির ডেপুটি সার্ভেয়ার জীবন মুখোপাধ্যায় বলেন, ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের জমি অবৈধভাবে দখল করে নির্মাণ কাজ করা হয়েছিল। এই জমিটি ইসিএলের। এর আগেও বেশ কয়েকবার অবৈধভাবে জমি দখলকারী ব্যক্তিদের সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোন কিছু করেননি। তাই এদিন সিআইএসএফ,  নিরাপত্তা রক্ষর এবং রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জমি দখলদার মুক্ত করতে অভিযান চালানো হচ্ছিলো। তাতে বাধা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং স্থানীয় নেতৃত্ব আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। তাদেরকে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা  বলেছেন যে তারা জমি সম্পর্কিত কিছু নথি দেখাবেন। যাতে তারা প্রমাণ করতে পারেন যে এই জমি তাদের।
যদিও জীবন মুখোপাধ্যায় এদিন জোর দিয়ে বলেছেন যে এই জমিটি ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডেরই। কিন্তু যেহেতু এখানকার মানুষ এবং স্থানীয় নেতৃত্ব আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন, তাই তাদেরকে ৭ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এরপর তারা কোন নথি দেখাতে না পারলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *