KULTI-BARAKAR

কলকাতার আবাসন থেকে উদ্ধার বরাকরের যুবকের দেহ, এলাকায় শোকের ছায়া, ছেলে খুন হয়েছে, দাবি বাবামায়ের

বেঙ্গল মিরর, বরাকর , কাজল মিত্র ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* বাড়ি আসার দিনে উদ্ধার হলো যুবকের দেহ। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার বরাকরের লখিয়াবাঁধের বাসিন্দা বছর ২৪ র মৃত যুবকের নাম অবিনাশ বাউরি। শনিবার বিকেলে কলকাতার চারুমার্কেট এলাকার একটি অভিজাত আবাসনের পাঁচতলায় মালিকের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় অবিনাশের দেহ। যুবকের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে আসানসোলের কুলটি থানার  বরাকরের লখিয়াবাদ এলাকায়। মৃত অবিনাশ বাউরির পরিবারের দাবি, এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তার বাবা সুধীর বাউরি ও মা ঘনি বাউরি ।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে চারুমার্কেট এলাকার ঐ আবাসনের পাঁচতলার বাসিন্দা ব্যবসায়ী কুশল ছাপড়ার ফ্ল্যাট থেকে অবিনাশের দেহ উদ্ধার করা হয়। অবিনাশ ব্যবসায়ীর আবাসনে পরিচারক হিসেবে কাজ করতেন। জানা গেছে, গত দোলে ও হোলির সময় সে শেষবার আসানসোলের বরাকরের বাড়িতে এসেছিলো। এই শনিবার বিকেলের ট্রেনে মালিকের সঙ্গে তার আবার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু বাড়ি ফেরার বদলে এলো অবিনাশের মৃত্যুর খবর। বাবা-মা সহ পরিবারের কাছে অবিনাশের মৃত্যুর খবর অনেকটা বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো।


রবিবার সকাল বরাকরে অবিনাশের বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেলো, প্রচুর ভিড়। এলাকার বাসিন্দাদের পাশাপাশি, তার আত্মীয় পরিজনের সবাই এসেছেন। সবাই তাদেরকে সমবেদনা জানাচ্ছেন। অবিনাশের বাবা-মা বলেন, আমাদের ছেলে সুস্থ ছিল। ছেলে হঠাৎ করে মারা যেতে পারে না। এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র আছে। আমরা বিশ্বাস করি, তাকে খুন করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত দাবি করছি । অবিনাশের মা বলেন, শেষবার সে হোলির সময় বাড়ি এসেছিলো ও কথা হয়েছিল। বলেছিল, শনিবার বাড়ি আসবে। কিন্তু এখন ওর মৃতদেহ বাড়ি আসবে। এটা কিভাবে আমরা মেনে নেব ? তিনি আরো বলেন, ছেলে ঐ মালিকের কাছে ১২/১৩ বছর ধরে কাজ করতো। বাড়ি আসার সময় পেতোনা। মালিক খুব ভালো। তাকে সন্দেহ করার মতো কিছু নেই। মালিকের বাড়ি এই বরাকরে। তার সঙ্গেই শনিবার ছেলের বাড়িতে আসার  কথা ছিলো।
এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, অবিনাশ পরিশ্রমী ও সরল স্বভাবের ছেলে ছিলো । সে দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় কাজ করছিলো।


জানা গেছে, কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট না হলেও, পুলিশের অনুমান তাকে পরিচিত কেউ ঐ ফ্ল্যাটে ঢুকে স্ক্রু-ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে খুন করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ ।
আরো জানা গেছে, পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে অবিনাশের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবে। যখন অবিনাশের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, তখন ফ্ল্যাটে সে একাই ছিলো। মালিক কুশল ছাপড়া দোকানে ছিলো। বিকেলে চারটের ট্রেনে তার সঙ্গে অবিনাশের আসানসোলে আসার কথা ছিলো। কিন্তু অবিনাশ ফোন না ধরার মালিক আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীকে ফোন করে ফ্ল্যাটে যেতে বলে। তখন ঐ নিরাপত্তা রক্ষী পাশের ফ্ল্যাটের পরিচারিকা ডাকেন। তারা ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন দরজা বাইরে বন্ধ রয়েছে। তারা দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন, অবিনাশ ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। তাদের চিৎকারে আবাসনের অন্য লোকেরা দৌড়ে আসেন। আসেন ব্যবসায়ীও। পরে আসে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *