কোল ইন্ডিয়ার মধ্যে ইসিএলের সর্বকালীন রেকর্ড উৎপাদন
২৩ টি ঠিকাদারি সংস্থা কে বাতিল করা হয়েছে
বেঙ্গল মিরর , দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। ইসিএলের জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে কোল ইন্ডিয়ার ইতিহাসে এই প্রথম সর্বাধিক কয়লা উৎপাদনের রেকর্ড করলো ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেড । গত অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২৪ -২৫ শে ৫২.০৩৫ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন করেছে এই সংস্থা ।এর আগে এই রেকর্ড ছিল ২০১৯ -২০তে ৫০. ৪০ মিলিয়ন টনের। মোট ৯. ৪১ শতাংশ উৎপাদন গত বছরের তুলনায় বেড়েছে বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয় ২৩টি ঠিকাদারি সংস্থা নিয়মমফিক কাজ না করায় তাদের সরান হয়েছে।




ইসিএলের ডাইরেক্টর (টেকনিক্যাল অপারেশন )নীলাদ্রি রায় বেঙ্গল মিররকে জানান ই সি এল এর এই উৎপাদন কোল ইন্ডিয়ার সমস্ত সহায়ক সংস্থার উৎপাদনগুলির চেয়ে বেশি ।এর কৃতিত্ব এখানকার সমস্ত স্তরের কর্মী থেকে আধিকারিক তথা ইসিএল টিমের। তিনি বলেন শুধু কয়লা উৎপাদনের ক্ষেত্রেই রেকর্ড হয়েছে তাই নয় ওভারবার্ডেন অর্থাৎ কয়লা তোলার আগে যে বিপুল পরিমাণ পাথর ,মাটি উঠানো হয় সেই উঠানোর ক্ষেত্রেও রেকর্ড হয়েছে। গত অর্থ বর্ষে ১৮৮ .৯৪ মিলিয়ন কিউবিক মিটার ওভার বার্ডেন ওঠানো হয়েছে। তার আগে ২০২৩-২৪ শে ১৭০.৯০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার ওভার বার্ডেন তুলে রেকর্ড হয়েছিল। এবার ওই পুরনো রেকর্ড ভাঙা হয়েছে ।
তিনি জানান গত ২৮ শে মার্চ ,২০২৫ ইসিএল এর ৫ দশকের ইতিহাসে একদিনের উৎপাদন সর্বাধিক যার পরিমাণ ২.৮৮ লাখ টন। এর আগেই এই রেকর্ড ছিল ২০২৪ এর ৩১ শে মার্চ ২.৮০ লাখ টন ।শুধু তাই নয় কয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রেও কয়লা বোঝাই ৬৮ টি রেলেররেক গত ৩১ শে মার্চ ই সি এলের এর বিভিন্ন এলাকা ভারতবর্ষের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ বিভিন্ন কারখানা বা গ্রাহকদের কাছে পাঠানো হয়েছে ।এটাও রেলের মাধ্যমে কয়লা পরিবহনে সর্বকালীন রেকর্ড। এর আগে গত বছর ৩১ শে মার্চ এই রেকর্ড ছিল ৬৫টি কয়লা বোঝাই রেকের। অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান প্রথম যে তিনটি এরিয়াতে সবচেয়ে বেশি কয়লার উৎপাদন গত অর্থবর্ষে হয়েছে তার মধ্যে আছে রাজমহলে এরিয়াতে ১৮ মিলিয়ন টন ,শোনপুর বাজারীতে ১২.৫ মিলিয়ন টন ও সালানপুরে ৫ মিলিয়ন টন উৎপাদন হয়েছে। উল্লেখ্য ইসিএলে বর্তমানে ২৫ টি খোলা মুখ খনি এবং ৫০টি সম্পূর্ণ ভূগর্ভস্থ ও ১০টি খোলা মুখ এবং ভূগর্ভস্থ মিশ্রিত মোট ৮৫ টি খনি আছে।
কিন্তু বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি বা অন্যান্য নানা কারণ সত্ত্বেও কিভাবে এই সর্বকালীন রেকর্ড সম্ভব হল এর উত্তর দিতে গিয়ে নীলাদ্রি বাবু জানান যা অতীতে হয়নি এবার সেটা হয়েছে ।অর্থাৎ আমাদের মোট উৎপাদনের ৬০ শতাংশ এসেছে আউটসোর্সিং থেকে ।তিনি জানান এর আগেই যেসব ঠিকাদাররা চুক্তিরভিত্তিতে কাজ করতে আসতো তারা সেই চুক্তি ঠিকঠাক কার্যকরী করত না। যে পরিমাণ কয়লা তোলার কথা তা নানান অজুহাত দেখিয়ে তারা তুলতে পারত না ।আমরা এই রকম ২৩ টি সংস্থাকে এবার সরিয়ে দিয়ে নতুন সংস্থাকে দিয়ে কাজ উৎপাদন করিয়েছি। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবারে সর্বকালীন কয়লা উৎপাদনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে। অবশ্যই আমাদের ট্রেড ইউনিয়নগুলিও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে উৎপাদন বাড়াতে এবং দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় তা পাঠাতে সাহায্য করেছে। ফলে রেকর্ড পরিমাণ কয়লা উৎপাদন এবং তা পরিবহন করার ক্ষেত্রে কৃতিত্ব সকলের।