মায়ের সামনে ছেলেকে খুন, আসানসোল আদালতে সাজা ঘোষণা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ ( Asansol News Today ) মায়ের সামনে ছেলেকে প্রথমে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত ও পরে গলা কেটে খুন করার অভিযোগ উঠেছিলো পড়শির বিরুদ্ধে। ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি হওয়া সেই ঘটনায় শুক্রবার আসানসোল জেলা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট কোর্টে দোষী সাব্যস্ত সেই পড়শি মহঃ আলি ওরফে সনুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলো। খুন হয়েছিলেন আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্নপুরের রহমতনগরের চর্বিমহল্লার ফজল ইমাম। এদিন ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট কোর্টের বিচারক সঞ্জিত আমবস্তা ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ নং ধারায় খুনে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির সাজা ঘোষণা করেন। এর পাশাপাশি বিচারক ৩২৪ নং ধারায় আরো ১ বছরের সাজা ঘোষণা করেছেন। এই মামলায় সরকারি আইনজীবী বা পিপি হিসেবে ছিলেন বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায়। দু’বছরের সামান্য কিছু সময় পরে দ্রুততার সঙ্গে আসানসোল আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট কোর্টে এই মামলায় সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সব সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক মহঃ আলি ওরফে সনুকে দুটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। এই মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আইও হিরাপুর থানার অফিসার গোপাল পাত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়ায় অভিযুক্ত জেল থেকে ছাড়া পায়নি। এদিন সাজা ঘোষণা হওয়ায় কাস্টডি ট্রায়াল হলো বলে সরকারি আইনজীবী বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন।




এদিন সাজা ঘোষণার সময় এজলাসে হাজির ছিলেন খুন হওয়া ফজল ইমামের মা মহেজ্জাবিন খাতুন। এত কম সময়ের মধ্যে ছেলের খুনে অভিযুক্ত পড়শির দোষী সাব্যস্ত ও যাবজ্জীবন সাজা হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তিনি খুশি। সাজা ঘোষণার পরে এক সাক্ষাৎকারে মহেজ্জাবিন খাতুন বলেন, আমার সামনে ঐ পড়শি আমার ছেলেকে খুন করেছিলো।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী বা পিপি বিনয়ানন্দ চট্টোপাধ্যায় আরো বলেন, ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি সকালে ফজল ইমামকে তার পড়শি মহঃ আলি ওরফে সনু ছুরি নিয়ে হামলা চালায়। প্রথমে তার পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলা কেটে দেওয়া হয়। পুরো ঘটনাটি ঘটেছিলো ফজল ইমামের মা মহেজ্জাবিন খাতুনের সামনে।
তিনি ছাড়াও আরো দুজন এই ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী ছিলেন। গোটা ঘটনা ঘটিয়ে সনু রাস্তা দিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তির কাছ থেকে স্কুটি নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। জখম ফজলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর তার হিরাপুর থানায় সেদিন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিশ দুটি ধারায় মামলা করে। পরে গ্রেফতার করা হয় সনুকে। তিনি আরো বলেন, মামলা চলাকালীন প্রতক্ষ্যদর্শীরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিয়েছিলেন। মামলায় সব মিলিয়ে ২২ জন সাক্ষী দিয়েছেন। তারমধ্যে ছিলেন চিকিৎসকও। শেষ পর্যন্ত এদিন ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট কোর্টের বিচারক সঞ্জিত আমবস্তা দোষী সাব্যস্ত পড়শির যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করেন। খুন হওয়া যুবকের মা এতো কম সময়ের মধ্যে সাজা ঘোষণা হওয়া আদালতের উপরে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।