ASANSOL

আসানসোলে শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের মিছিল, নেওয়া হলো গণস্বাক্ষর চাকরি ফেরত চেয়ে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসির নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের চাকরি গেছে। পরবর্তী কালে রাজ্য সরকারের তরফে করা একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি, সুপ্রিম কোর্ট আরো একটি নির্দেশে বলেছে, যারা যোগ্য তারা চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুধু মাত্র শিক্ষক ও শিক্ষিকারা স্কুলে যেতে পারবেন। তারা বেতনও পাবেন। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার ও এসএসসিকে স্বচ্ছতার সঙ্গে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
তবে সুপ্রিম কোর্টের একবারেই সন্তুষ্ট নন চাকরি হারা শিক্ষক ও শিক্ষিকরা।


শুক্রবার আসানসোলের জিটি রোডের ট্র্যাফিক মোড থেকে যোগ্য শিক্ষকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বার করেন। মুলতঃ যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, তারাই পশ্চিম বর্ধমান জেলা যোগ শিক্ষক শিক্ষক অধিকার মঞ্চের ব্যানার নিয়ে এই মিছিল করে ট্র্যাফিক মোড থেকে বিএনআর পর্যন্ত যান। সেখানে মিছিল শেষে পথসভার পাশাপাশি, তাদের আন্দোলন ও দাবির সমর্থনে গণ সাক্ষর নেওয়া হয়। এই গণ সাক্ষর স্মারকলিপি আকারকে রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হবে বলে আন্দোলনকারীদের তরফে আসানসোলের গৌরান্ডী আরকে ইন্সটিটিউটশনের শিক্ষিকরা রুপা কর্মকার জানিয়েছেন।


এদিনের মিছিলে এই জেলার অনেক যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষিকরা ছিলেন, যাদের চাকরি সুপ্রিম কোর্টের আদেশে বাতিল হয়েছে।
এই মিছিলে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষিকারা বলেন, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে তাতে আমরা মোটেই সন্তুষ্ট নই। তারা বলেন, যে দুর্নীতি সরকার করেছে ও এর পেছনে এসএসসি পদাধিকারীরা জড়িত রয়েছেন, এটা পরিষ্কার। কিন্তু শিক্ষকরা শাস্তি পাচ্ছেন। তারা প্রশ্ন তুলে বলেন, যদি সরকারি স্তরে দুর্নীতি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের চাকরি কেন বাতিল করা হচ্ছে? আবার পরীক্ষা দেওয়ার প্রশ্নে তারা বলেন, আমরা আর পরীক্ষা দেবো না।

তারা বলেন, শুধুমাত্র তাদের নম্বর যে ওএমআর শিটে লিপিবদ্ধ আছে, তা দিয়েই বোঝা যাবে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য। যদি কেউ ৫৫ নম্বরের মধ্যে ৪৭ নম্বর পেয়ে থাকে, তাহলে সে কিভাবে অযোগ্য হতে পারে? এই ওএমআর শিটের ভিত্তিতে কিছু শিক্ষককে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে তাদের প্রশ্ন হল, কিসের ভিত্তিতে কিছু শিক্ষককে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল? এই ভিত্তিতে কিছু শিক্ষককে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারতো, কেন তাদের একই ভিত্তিতে যোগ্য ঘোষণা করা হচ্ছে না? কেন তাদের চাকরি পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে না?

তারা স্পষ্ট করেই বলেন যে এখন আমরা আর সরকারকে বিশ্বাস করি না। তাই আমরা অবশ্যই স্কুলে যাবো কিনা ভাববো। কিন্তু তার সঙ্গে আন্দোলন এবং আদালতে মামলা একই সাথে চলবে। আমরা আর পরীক্ষা দেবো না। পুনরায় প্যানেল গঠনের দাবি করা হচ্ছে। তারা বলেন, যে ভিত্তিতে কিছু শিক্ষককে টেন্টেড হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, সেই ভিত্তিতে অন্যান্য শিক্ষকদের টেন্টেড হিসেবে ঘোষণা করে তাদের পুনর্বহাল করতে হবে। পাশাপাশি তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।


অন্যদিকে, এদিন শিক্ষাকর্মীদের সম্পর্কেও শিক্ষক ও শিক্ষিকরা তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, একটি স্কুল পরিচালনার জন্য কেবল শিক্ষকই নয়, শিক্ষাকর্মীরও প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে, যেসব শিক্ষাকর্মীকে যোগ্য বলা হচ্ছে, তাদের চাকরি বাতিল করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *