KULTI-BARAKAR

কুলটিতে ২৯ ঘন্টার টানা আন্দোলন, মৃত খনি কর্মীর মেয়েকে চাকরির নিয়োগপত্র দিলো কোলিয়ারি কতৃপক্ষ

বেঙ্গল মিরর, কুলটি, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ২৯ ঘন্টার টানা আন্দোলন। আর তাতেই হলো দাবি পূরণ। মঙ্গলবার দুপুরে মৃত খনি কর্মীর মেয়েকে চাকরির নিয়োগপত্র দিলো কোলিয়ারি কতৃপক্ষ। ছিলেন কুলটির প্রাক্তন বিধায়ক পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, কোলিয়ারির এজেন্ট সহ অন্যান্যরা। এরপরই পরিবারের সদস্যরা কোলিয়ারির অফিস থেকে খনি কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।


প্রসঙ্গতঃ, পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটিতে সেল বা স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার রামনগর কোলিয়ারিতে কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় কেদার পাল নামে (৪৮) কর্মীর মৃত্যু হয়েছিলো। প্রায় তিন মাস আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি এই দূর্ঘটনাটি ঘটেছিলো। সোমবার সকাল থেকে সেই মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্য, আত্মীয় পরিজন ও স্থানীয় লোকজনের মৃত কর্মীর আশ্রিত ছোট মেয়েকে চাকরি দেওয়ার দাবিতে কোলিয়ারির এজেন্টকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। কোলিয়ারির এজেন্ট অফিসে কর্মীর মৃতদেহ রেখে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোলিয়ারি অফিস সংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেখানে এসেছিলেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার। পরে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা সহ অন্য শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। মৃত খনি কর্মীর নাম কেদার পাল হলপ্যাক অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন।


জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সেলের রামনগর কোলিয়ারির হলপ্যাক অপারেটর কেদার পাল কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পরে, কোলিয়ারির ডিসপেনসারিতে তার প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। তারপর তাকে বার্নপুরের সেল আইএসপি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে সেখান থেকে তাকে চিকিৎসার জন্যে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা করার পরে তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু রবিবার সকালে সেখানে তিনি মারা যান। এরপর সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যরা কেদার পালের মৃতদেহ কোলিয়ারিতে নিয়ে আসেন। তার ছোট মেয়ের চাকরির দাবিতে মৃতদেহ অফিসে রেখে এজেন্টকে ঘেরাও করেন ।

অফিসের সামনে তার মৃতদেহ রেখে দেওয়া হয়। চাকরি দেওয়ার জন্য কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ ১৫ দিনের সময় চান। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা বলেন, মেয়ের চাকরি এদিনই নিশ্চিত করতে হবে। কেননা, তারা এক এক সময় এক এক রকম কথা বলছেন। তাই আমরা চাই সেল ও কোলিয়ারি কতৃপক্ষ চাকরির বিষয়টা নিয়ে আজই লিখিত ভাবে নির্দেশ দিক। যতক্ষণ না, তা দেওয়া হচ্ছে, আমাদের বিক্ষোভ দেখানো চলবে। সেই মতো সোমবার সারারাত ধরে দেহ রেখে বিক্ষোভ চলে। মঙ্গলবার সকালেও তা অব্যাহত থাকে। শেষ পর্যন্ত, এদিন দুপুরের দিকে কোলিয়ারি কতৃপক্ষ শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মৃত খনি কর্মীর ছোট মেয়েকে চাকরির নিয়োগ পত্র দেয়। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *