ASANSOL

আসানসোল সাড়ম্বরের সঙ্গে পালিত ২৫ শে বৈশাখ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শুক্রবার আসানসোল সহ গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে পালিত হয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন বা ২৫ শে বৈশাখ। এদিন সকালে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শুক্রবার আসানসোল যুব আবাস ম্যারেজ হলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় “কবি প্রণাম” অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে কবির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পোন্নমবলম এস, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সঞ্জয় পাল, পিডি ডিআরডিসি ইন্দ্রদেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোলের মহকুমা শাসক (সদর) বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য্য, কালচারাল সেক্রেটারী আসানসোল সংস্কৃতি মঞ্চ, দীপক তলাপাত্র, ভারপ্রাপ্ত জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক, পশ্চিম বর্ধমান নরেন্দ্র নাথ দত্ত এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রাজেশ কুমার মন্ডল।

এছাড়াও কবির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। একইভাবে, এদিন, আসানসোল পুরনিগমের তরফে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করা হয়। এই উপলক্ষে এদিন সকালে রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এর আগে, আসানসোল পুরনিগম থেকেও একটি শোভাযাত্রা বেরোয়। ঐতিহ্যবাহী বাঙালি পোশাক পরে বিপুল সংখ্যায় স্কুল পড়ুয়া এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় , দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত অধিকারী, আসানসোল পুরনিগমের আধিকারিক ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

রবীন্দ্র ভবনে পৌঁছানোর পর সকলেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মেয়র বিধান উপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। অনুষ্ঠান চলাকালীন বক্তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও কর্মের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। সকলেই বলেন যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেবল একজন মানুষ ছিলেন না। তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান ছিলেন। মেয়র পারিষদ গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২৫ শে বৈশাখ উপলক্ষে আসানসোল পুরনিগমের তরফে রবীন্দ্র ভবনে দুদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এদিন সকালে আসানসোল মহিলা উদ্যোগের পক্ষ থেকে আসানসোলের রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। এই উপলক্ষে সমাজকর্মী সুদেষ্ণা ঘটক সহ আসানসোল মহিলা উদ্যোগের সকল সদস্য ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সুদেষ্ণা ঘটক বলেন, এদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন সেই ব্যক্তি যিনি সমগ্র ভারতবর্ষ, বিশেষ করে বাংলা এবং সমগ্র বিশ্বে বাঙালিদের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় দিয়েছিলেন। যার জন্য আমরা চিরকাল তাঁর কাছে ঋণী থাকব। তিনি আরো বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে আজকের নতুন প্রজন্ম রবীন্দ্রভবন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর জন্য বর্তমান পরিস্থিতি দায়ী। তবে আমাদের সকলকে চেষ্টা করতে হবে যতদিন আমরা আছি, ততদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের সাথেই থাকুন।এদিকে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মদিবস পালন করা হয় ইস্পাত নগরী বার্নপুরে। ” আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে, এ জীবন পূণ্য করো, দাহন দানে” কবি ঠাকুরের চরণে” শ্রদ্ধাঞ্জলী দেওয়া হয়।

এদিন সকালে আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বার্নপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বেরোয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। তাতে অংশ নেয় একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা। ছিলেন বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। অন্যদিকে, এদিন বারাবনি ব্লক কার্যালয়ে ২৫ শে বৈশাখ কবিগুরুর রবীন্দ্রনাথের ১৬৪ তম জন্মদিবস উপলক্ষে কবির আবক্ষ মূর্তিতে মাল্য দান করা হয়। ছিলেন বারাবনি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বা বিডিও শিলাদিত্য ভট্টাচার্য, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিং, বারাবনি থানার ওসি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুফল মাঝি জামগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কেশব রাউত। এছাড়াও দোমহানি শিক্ষা নিকেতন ইংলিশ কোচিং সেন্টারের ছাত্র-ছাত্রীরা ছিলো। পরে বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সঞ্চয়িতা ভবনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়। যেখানে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নাচ, গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে আসানসোল জেলা আদালতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান

আসানসোল জেলা আদালত প্রাঙ্গণে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী বা ২৫ শে বৈশাখ পালনে শুক্রবার আসানসোল জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে আসানসোল জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি প্রভাতফেরি বার করা হয়। যা আসানসোল বার এ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু হয় এবং আসানসোলের বিএনআর মোড়ে রবীন্দ্র ভবনের কাছে শেষ হয়। আসানসোল জেলা আদালতের আইনজীবীরা এই প্রভাতফেরিতে অংশ নেন। এরপর আসানসোল জেলা আদালত প্রাঙ্গণে এসে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিতে মাল্য দান করা হয়। এই উপলক্ষে আসানসোল জেলা আদালতের জেলা বিচারক দেবপ্রসাদ নাথ কবিগুরুর ছবিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও বক্তব্য রাখেন। এর পাশাপাশি অনেক আইনজীবী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান সম্পর্কে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। একই সাথে, বিভিন্ন ধরণের নৃত্যও পরিবেশিত হয়।অন্যদিকে, রবীন্দ্রজয়ন্তীতে আদালত প্রাঙ্গণে বিভিন্ন ধরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অয়ন রঞ্জন মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক বাণী কুমার মণ্ডল, অভিজিৎ রায় ওরফে বাপি, অসিত মুখোপাধ্যায়, শ্যামল মুখোপাধ্যায়, মণিপদ্ম বন্দোপাধ্যায় ব্যানার্জি, সুপ্রিয় হাজরা, প্রবীর চট্টরাজ, শিবনাথ রায়, সৌরভ গাঙ্গুলি, কৃষ্ণেন্দু খাঁ, সনাতন ধারা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শৈলেন চক্রবর্তী, ধীরেন চৌধুরী, প্রীতি বালা কর্মকার, রাইমা মুখোপাধ্যায়, শাশ্বতী ঠাকুর, অভয় গিরি সহ অন্যান্য আইনজীবীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *