কয়লাখনিতে বিজেপির কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার, পরিস্থিতি সামলাতে নাজেহাল পুলিশ
শাসক দলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, বারাবনি, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ কয়লাখনি কতৃপক্ষের কাছে বিজেপির স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বারাবনির আমডিহা এলাকায়।
এদিন, বিজেপির পক্ষ থেকে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের দাবিতে বারাবানি এলাকার ইটাপাড়া কয়লাখনি কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার জন্য একটি কর্মসূচির আয়োজন করেছিল। তার জন্য, বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য ও রাজ্য কমিটির নেতা কৃষ্ণেদু মুখোপাধ্যায় নেতৃত্বে বিজেপি নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। এই মিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিলো। কিন্তু, আমডিহা মোড়ের কাছে বিজেপির মিছিল পৌঁছাতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আগে থেকেই তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকেরা পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিলেন।




অভিযোগ, তারা বিজেপির মিছিল আটকায়। দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। দুপক্ষই স্লোগান দিতে থাকে। মাঝখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বিজেপির নেতাদের বচসা শুরু হয়। পুলিশ বিজেপির নেতাদের কয়লাখনিতে না যেতে বলে। যা নিয়ে বিজেপির নেতারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শেষ পর্যন্ত বিজেপির প্রতিনিধিদল কয়লাখনি কতৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে পারেনি। তাদেরকে ফিরে যেতে হয়ে।
এই বিষয়ে, বিজেপি জেলা সভাপতি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে, ন্যায্য দাবির সমর্থনে এদিন কয়লা খনি কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে একটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন এবং কয়লা খনি কর্তৃপক্ষকে এই কর্মসূচি নিয়ে আগে থেকেই অবহিত করা হয়েছিলো। কিন্তু তা সত্ত্বেও, এদিন তৃণমূলের গুন্ডাদের কারণে বিজেপি স্মারকলিপি জমা দিতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, এদিন যখন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা এখানে পৌঁছান, তখন তারা দেখেন যে তৃণমূলের গুন্ডারা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। পুলিশ বিজেপি নেতাদের ফিরে যেতে এবং স্মারকলিপি না দেওয়ার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তৃণমূলের গুন্ডাদের সামনে পুলিশ সম্পূর্ণ অসহায় বলে মনে হয়েছিল। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে পুলিশ গুন্ডাদের সামনে এতটাই অসহায় ছিল যে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুই করতে পারেনি। বিজেপি জেলা সভাপতি আরো বলেন, বিজেপি একটি শান্তিপ্রিয় এবং শৃঙ্খলা মেনে চলা দল। তাই এদিন বিজেপির স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি স্থগিত করা হচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই বিজেপি আবার এখানে এসে কয়লাখনিতে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেবে। তখন তৃনমুল কংগ্রেসের লোকেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে, তাদেরকে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা বুঝে নেবে।
তবে, বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিং বলেন, এখানে কেবল স্থানীয়দেরই চাকরি দেওয়া হয়েছে। যারা কয়লা খনি তৈরির জন্য জমি দিয়েছেন তারাই চাকরি পেয়েছেন। এখানে কোনও বহিরাগতকে নিয়োগ করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, এদিন বিজেপির একটি প্রতিনিধিদল এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করতে এসেছিলো। যা স্থানীয়রা বাধা দিয়েছেন । পুলিশ প্রশাসন আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলো। এখানে এসে আমি স্থানীয়দের বুঝিয়েছি। যাতে এখানে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় সর্বদা চান যে যারা জমি দিয়েছেন, তারা যেন চাকরিতে অগ্রাধিকার পান। এখানেও এটাই ঘটছে। তিনি তার বিরুদ্ধে বিজেপির সিন্ডিকেট রাজ চালানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, এখানে এরকম কিছুই ঘটছে না। এমনকি ঘটছেও না। তার পাল্টা দাবি, বিজেপি এই কয়লাখনি বন্ধ করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।,