ASANSOL

আসানসোলে দেড় বছর আগে সেতু সংস্কারে দোকান উচ্ছেদ , এখনো মেলেনি পুনর্বাসন , উঠছে প্রশ্ন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ প্রায় দেড় বছর আগে আসানসোল পুরনিগমের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে রেলপারের চাঁদমারি এলাকায় সেতু বা ব্রিজ সংস্কারের মাধ্যমে নতুন করে তৈরি করা হয়।চাঁদমারি সেতুটি চওড়া করার জন্য আশপাশ থেকে দোকানদারদেরকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তাদেরকে সেই সময় পুনর্বাসনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু দেড় বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনও কোনও দোকানদারকে পুনর্বাসন করা হয়নি। এই বিষয়ে ঐ এলাকার বাসিন্দা দোকানদারেরা বলেন, সেতু বড় করার সময় আমাদের দোকানগুলি সরানো হয়েছে । আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক, বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফানসবি আলিয়া এমনকি আসানসোল পুরনিগম কতৃপক্ষও বলেছিলো যে দোকানদারদেরকে সরানো হচ্ছে তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। তাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু দেড় বছরেরও বেশি সময় পার হয়ে গেছে এবং এখনও তাদের পুনর্বাসন করা হয়নি।

তারা আরো বলেন, মন্ত্রী সহ সবার আশ্বাসে আমরা আমাদের দোকান ছেড়েছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আমরা দোকানটি পাইনি। যে কারণে আমরা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। তারা বলেন, এখানকার দোকানদাররা বারবার যাচ্ছি সবার কাছে। কিন্তু সবাই কোন না কোন অজুহাত দেখিয়ে বলা হচ্ছে, আমরা তাদেরকে বিরক্ত করছি। তারা জানান, সেখানে মোট ২৩ জন দোকানদার ছিলেন। এদিকে, এই বিষয়ে বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহা বলেন, মন্ত্রী মলয় ঘটকের প্রচেষ্টায় রেলপার এলাকায় দুটি সেতু তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে চাঁদমারি সেতুর মতো সেতু আগে কখনও সেই এলাকায় তৈরি হয়নি। এর জন্য কিছু দোকানদারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে দেড় বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে কিন্তু পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, তারা এখনও তা পাননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, দোকানদারদের পুনর্বাসনের জন্য ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। যা মন্ত্রী নিজেই দেখেছেন। তিনি আরো বলেন, সেতুর পাশে জায়গা কম ছিলো। তাই প্রথম ম্যাপে মাত্র আটটি দোকান জায়গা হচ্ছিলো। তবে আবার নতুন পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দোকান ছোট হলেও, ১৭টি দোকানদারই দোকান পাবে। তিনি দোকানদারদের আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের চিন্তা করার দরকার নেই। যখন তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। তারা অবশ্যই দোকান পাবে এবং খুব শীঘ্রই তা পাবে।

এই প্রসঙ্গে তৃনমুল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি নেতা রাজু আলুওয়ালিয়া বললে, জিটি রোডের পাশে সেন্ট জোসেফ স্কুলের সামনে প্রায় ২ বছর আগে যে দোকানগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই দোকানগুলির বিষয়টি তুলে ধরেন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সেতুর বিষয়ে যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তখন রাজু আলুওয়ালিয়া সরাসরি কোনও উত্তর না দিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি হল পুনর্বাসন ছাড়া কাউকে কোথাও থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে না। পুনর্বাসন ছাড়া সরকারেরও উচিত নয় কাউকে কোথাও থেকে সরিয়ে দেওয়া ।

কংগ্রেস কাউন্সিলর এসএম মুস্তাফা বলেন যে, দেড় বছর আগে ঐ সেতু বড় করার জন্য দোকানদারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় মন্ত্রী সহ প্রশাসনের সব আধিকারিকরা দোকানদারদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তারা দোকান পাবে। কিন্তু এখনও তাদের পুনর্বাসন করা হয়নি। তিনি বলেন, যে দোকানদারদের দোকান চলে গেছে তারাও প্রকাশ্যে আওয়াজ তুলছেন না। যদি সেই দোকানদাররা চান, তাহলে কংগ্রেস তাদের সাথে নিয়ে মন্ত্রীর সাথে দেখা করতে পারে। কারণ পুনর্বাসন ছাড়া এভাবে গরীবদের পেটে লাথি মারা ঠিক নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *