কল্যাণেশ্বরী উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে চালু হল একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী পঠন পাঠন
বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র:-সালানপুর ব্লকের আছরা যজ্ঞেশ্বর হাই স্কুল ও রায় বলরাম হাই স্কুল সহ কল্যানেশ্বরী এলাকায় উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পঠন-পাটনের স্কুল রয়েছে । যার জন্য সালানপুর কালিতলা , দেন্দুয়া, ওইসব এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠনের অনেকটাই অসুবিধা হয়ে পড়েছিল যার কারনে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সালানপুর কালিতলা এলাকায় কল্যানেশ্বরী বিদ্যালয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হলো এলাকাবাসী।




আজ কল্যাণেশ্বরী হাই স্কুলকে আনুষ্ঠানিকভাবে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়েছে, যা এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার এনেছে। বারাবনি বিধায়ক তথা আসানসোলের মেয়র বিধান উপাধ্যায় প্রদীপ উজ্জ্বলন করেও শ্রেনী কক্ষের ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন করেন যা এলাকার শিক্ষার ইতিহাসে একটি মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।
এতদিন কল্যাণেশ্বরী স্কুলে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ থাকলেও, উচ্চমাধ্যমিকের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের আছড়া, চিত্তরঞ্জন, আসানসোল বা কুলটির মতো দূরবর্তী এলাকায় যেতে হতো। যাতায়াতের অসুবিধা, সময় ও অর্থের অপচয় এবং ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে অনেক মেধাবী পড়ুয়া উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো।কেউ কেউ মাধ্যমিকের পরই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হতো। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের চাহিদা এবং বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে এই অঞ্চলে একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রয়োজনীয়তা পূরণ হলো।এখন থেকে কল্যাণেশ্বরী হাই স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শুরু হবে, যা এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
তাছাড়াও একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হওয়া প্রায় ৩৬ জন ছাত্রছাত্রীদের হাতে বই খাতা তুলেদেন বারাবনি বিধায়ক তথা মেয়র বিধান উপাধ্যায়।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বারাবনি বিধায়ক তথা মেয়র বিধান উপাধ্যায়,সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহম্মদ আরমান, সহ-সভাপতি ভোলা সিং, সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৈলাস পতি মন্ডল, সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ মিশ্র, সালানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অমিত হাটি, সালানপুর পঞ্চায়েত প্রধান দীপিকা বাউরী , অর্ধেন্দু রায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক লক্ষণ রানা সহ আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি। উৎসব মুখর এই অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। স্থানীয় পড়ুয়ারা তাদের নিজ এলাকায় উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ পেয়ে উৎফুল্ল।
এক ছাত্রী বলেন, “আমাদের এখন আর দূরে যেতে হবে না। এই স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়ে আমরা খুব খুশি। এখন আমরা আরও মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারব।” অভিভাবকদের মধ্যেও রয়েছে স্বস্তি ও আনন্দ। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য দূরে পাঠানোর চিন্তা এখন আর নেই।এটা আমাদের জন্য বড় স্বস্তি।”বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের অসুবিধা ও চাহিদার অবসান হলো।
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ, যিনি এলাকার মানুষের কথা ভেবে এই স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে রূপান্তরিত করেছেন। এই স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” তিনি আরও জানান, এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের সময়, অর্থ ও শক্তির সাশ্রয় করবে এবং তাদের শিক্ষার পথকে আরও সুগম করবে।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের মুখে হাসি, অভিভাবকদের চোখে আশার আলো এবং এলাকাবাসীর মনে স্বপ্নপূরণের আনন্দ ছিল স্পষ্ট। কল্যাণেশ্বরী হাই স্কুলের এই নতুন অধ্যায় শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বহন করে।